সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পড়াশোনা করে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করতে চেয়েছিল ১৩ বছরের ছেলেটা। বাবা কৃষক, তাই শিক্ষিত হয়ে বাবার কষ্ট লাঘব করতে চেয়েছিল সে। কিন্তু পারল না। ঋণগ্রস্ত বাবার কাছে স্কুলের পাঠ্যবই, ইউনিফর্মের টাকা ছিল না। অভাবের তাড়ণায় শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত কিশোর নিয়ে ফেলল জীবনের চরম সিদ্ধান্ত। পড়তে না পারার দুঃখে আত্মহত্যা করল সে। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী সমাজের সব শ্রেণি-জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে শিক্ষা প্রদানের কথা বলেন, সেই দেশেই এমন ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল রূঢ় বাস্তব। মহারাষ্ট্রের ওসমানাবাদের দরিদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে আরবাজ নবিয়ালের মৃত্যু তাই রেখে গেল বহু প্রশ্ন। যার উত্তর সমাজের কাছে নেই।
গত ২০ জুনের ঘটনা। খরা বিধ্বস্ত ওসমানাবাদের বাশি তেহসিলের বাভি গ্রামের বাসিন্দা নবিয়াল মহম্মদ আত্তার। দরিদ্র কৃষক ঋণের দায়ে গলা পর্যন্ত ডুবে। তাঁর ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র আরবাজ কয়েকদিন আগে বাবার কাছে স্কুলের পাঠ্যবই-খাতা, ইউনিফর্ম কেনার জন্য টাকা চেয়েছিল। কিন্তু তা দিতে অপারগ ছিলেন বাবা। চাষের জন্য আগেই ব্যাঙ্ক থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে তা শোধ করতে পারছিলেন না নবিয়াল। তাই ছেলেকে সে কথা জানিয়েও ছিলেন তিনি। কিন্তু পড়তে না পারার শোকে বাবারই চাযের জমিতে একটি তেঁতুল গাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়। পাশের জমিতে আরেক কৃষক এই ঘটনা দেখতে পেয়ে নবিয়ালকে জানান। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। এই পোড়া দেশে পড়াশোনা করতে চাওয়াটাই যে বড় ‘অপরাধ’, তা আরবাজদের বোঝাবে কে? তাই তো এমন করুণ পরিণতি, বলছে ওয়াকিবহাল মহল। অর্থাভাবে এমন উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অকালেই শেষ হয়ে যায়, সমাজ শুধু দর্শকের ভূমিকায় থেকে যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.