সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে জল ব্যবহার নিয়ে বাধ্যবাধকতার মুখে পড়েছিলেন বিরাট কোহলিরা। বলা হয়েছিল দু’মিনিটের বেশি ‘শাওয়ার টাইম’ যেন খরচ না করেন বিরাটরা। তীব্র জল সংকটে ভুগছে সে দেশ। বিদেশে গিয়ে তাই জল খরচ নিয়ে সতর্ক হতে হয়েছিল বিরাটদের। যদিও তাঁদের নিজের দেশও কিন্তু ব্যতিক্রম নয়। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে জলের ভাঁড়ারে দ্রুত টান পড়ছে। সে তালিকায় গোড়ার দিকেই আছে ভারত।
[ পছন্দ নিরাপদ যৌনতা, অবিবাহিত মহিলাদের মধ্যে কন্ডোমের চাহিদা বেড়েছে ৬ গুণ ]
জল সংকটে যে দেশগুলি পড়তে চলেছে সে তালিকার একেবারে শীর্ষে আছে দক্ষিণ আফ্রিকাই। একদা যেখানে অগাধ জল ছিল, আজ তা প্রায় মরুতে পরিণত হচ্ছে। বছর তিনেকের খরায় সঙ্গীন অবস্থা সর্বত্র। সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত শহর কেপ টাউন। অনেকেই বলছেন, আধুনিক কোনও শহর যদি জল সংকটে শুকিয়ে যায়, তবে তা কেপটাউনই হতে চলেছে। এদিকে ব্রাজিলও ধুঁকছে জল সংকটে। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সেখানেও জল সরবারহের ক্রমশ কমছে। সংকটে ইরানও। উর্মিয়া লেকই এ দেশের জলের সবথেকে বড় আধার। কিন্তু তা দ্রুত শুকোচ্ছে। ফলে খরার সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে। সে দেশের পরিবেশ দপ্তরের পক্ষ থেকে লেক ও জল সংরক্ষণের নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই অবস্থা কম্বোডিয়া, চিন, সিঙ্গাপুর, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিরও।
[ মহাভারতের ‘জতুগৃহ’র খোঁজ পেতে খনন শুরু উত্তরপ্রদেশের বাগপতে ]
এদিকে বিশ্বের এই দেশগুলোর থেকে খুব একটা পিছনে নেই ভারতও। নদীমাতৃক দেশ। শিল্পের বিকাশ হলেও এখনও কৃষিই এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পেশা। তবুও জল সংকট গ্রাস করছে ভারতকে। এখানে সমস্যা অবশ্য একটু অন্যরকম। দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রায় আকাশছোঁয়া। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, দেশের সত্তর শতাংশের বেশি সম্পদ এক শতাংশ ধনী ব্যক্তিরই হাতে কুক্ষিগত। এই বৈষম্য জলের ক্ষেত্রেও দেখা দিচ্ছে। সমাজের একশ্রেণির মানুষের কাছে জলের কোনও অভাব নেই। বরং জলবিলাসেই দিন কাটে তাঁদের। অন্যদিকে আর এক শ্রেণির মানুষকে রীতিমতো জল কিনে পান করতে হয়। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, সাড়ে সাত কোটির বেশি ভারতবাসীকে এখন জল কিনে খেতে হয়। কেননা সাধারণ জলের সরবরাহে রাসায়নিক ও বর্জ্যের মিশেল এতটাই বেশি যে পানীয় জল নেই দেশের একশ্রেণির মানুষের কাছে। প্রতি লিটার জলের দাম অন্তত পনেরো থেকে কুড়ি টাকা। যে শ্রেণির মানুষকে জল কিনে খেতে হচ্ছে, তাঁরা কতদিন এই মূল্যে জল কিনতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। ফলে ভারতবাসীদের একাংশ যে জল নিয়ে আগামিদিনে সংকটে পড়বেন তা সহজেই বোঝা যায়। একমাত্র সরকারি পদক্ষেপেই এই সমস্যা দূর হতে পারে। নচেৎ জলের সরবারহ থাকলেও জল সংকটে পড়বেন দেশবাসী। অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গে খুব বেশি ফারাক থাকবে না।
[ সাপের বিষ থেকে মুক্তি আয়ুর্বেদেই, নজির গড়ে পদ্মশ্রী পেলেন ‘জঙ্গলের ঠাকুমা’ ]