সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনও বিবাহিত পুরুষ অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হলে কেন শুধুমাত্র ওই পুরুষকেই দোষী বলে গণ্য করা হয়? কেন সেই মহিলার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে না, যিনি বিবাহের পরও পরপুরুষকে শয্যায় আসার অনুমতি দেন? এবার এই প্রশ্নই তুলে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট ১৫৭ বছরের পুরনো ভারতীয় দণ্ডবিধির লিঙ্গ বৈষম্যমূলক আইনের সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল কেন্দ্রকে।
সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ এম খানউইলকর ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছেন। একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দেয় আদালত। কেরলের এক ব্যক্তি ব্যভিচারের ক্ষেত্রে একই অপরাধে কেন পুরুষ ও মহিলা আইনের নজরে পৃথক বিচার পাবেন, এই অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন।
এক্ষেত্রে আদালত বিচার করে দেখবে একশো বছরেরও বেশি পুরনো আইনে কি সত্যি পুরুষ ও মহিলাকে একই দোষের জন্য পৃথক সাজা পেতে হয়? কেন একজন মহিলা ব্যভিচারের অভিযোগে ক্লিন চিট পেয়ে যান? ভারতীয় আইনে ধর্ষণ ও ব্যভিচারের ক্ষেত্রে পৃথক সাজা রয়েছে। সেকশন ৪৯৭ জানাচ্ছে, কোনও বিবাহিত পুরুষ বা মহিলার সঙ্গে বিপরীত লিঙ্গের কোনও মানুষ স্বেচ্ছায় যৌনতায় লিপ্ত হলে তাকে ধর্ষণ বলা যাবে না, বলতে হবে ব্যভিচার। এহেন যৌন সম্পর্কের অভিযোগে অভিযুক্তকে ধর্ষণের সাজা দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মহিলাকে কুকর্মে সাহায্যকারী বলা যাবে না।
আদালত শুক্রবার জানিয়েছে, সেকশন ৪৯৭ ব্যভিচারে লিপ্ত মহিলাকে আক্রান্ত হিসাবে দেখিয়েছে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে এক্ষেত্রে সম্মতি দুই তরফ থেকেই মিলেছে। একজনকে দোষী গণ্য করা হবে আর একজনকে নির্দোষ বলা হবে, সেক্ষেত্রে কি লিঙ্গবৈষম্যই ফুটে উঠছে না, জানতে চেয়েছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন জানায়, ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য দেখা উচিত নয়। দেখতে হবে এই অভিযোগের ক্ষেত্রে ওই মহিলারও সম্মতি বা উসকানি রয়েছে কি না। আদালত স্পষ্ট করে, সব ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ সমান সমান। সমাজকে এবার এই সত্য মেনে নিতে হবে। তাহলে অপরাধ এক হলে সাজাও হবে না কেন?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.