অর্ণব আইচ: দিনের পর দিন মাটির তলা থেকে চুরি যাচ্ছিল বিএসএনএলের তার। রাতের বেলায় সেই তার চুরির কথা জানিয়ে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ জানান বেহালা ও জোকা অঞ্চলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার। তদন্তে নেমে বিহারের একটি গ্যাংকে ধরল কলকাতা পুলিশ। ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের ডেরাতে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে চুরি যাওয়া তার, মাটি খননকারী যন্ত্র, সেফটি গিয়ার, লোহার যন্ত্র ও একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এর আগেও হায়দরাবাদ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একইভাবে তার চুরি করার অভিযোগ রয়েছে ওই দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে বিভিন্ন সময় তার ও অন্যান্য সামগ্রী চুরি যাওয়ার অভিযোগ এসেছে পুলিশের কাছে। তবে তা সাধারণ চুরির ঘটনা। অর্থাৎ কাজের সময় মাটিতে ফেলে রাখা তার ও অন্যান্য সামগ্রী হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা। তবে মাটির তলা থেকে তার চুরি যাওয়ার অভিযোগ পুলিশের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে।
তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের! ধরা পড়া বিহারে এই দলটি রীতিমতো রেইকি করে, বিএসএনএলের কর্মী বলে নিজেদের পরিচয় দিয়ে রাতে মাটির তলার থেকে মাইলের পর মাইল তার চুরি করছিল। কারোর যাতে সন্দেহ না হয়, সেই মতো পেশাদারদের মতো পোশাক পরে, গাড়ি এনে যন্ত্রপাতি নিয়ে অপারেশন চালাত তারা।
তদন্তে নেমে একাধিক জায়গায় চলা কাজের তালিকা তৈরি করে পুলিশ। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের থেকে কাজ করার প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেখতে চায় পুলিশ। বিহারের দলটির কাছে পৌঁছে সেই ছাড়পত্র চাইলে তারা দিতে পারেনি। তাদের কাছে থাকা হাসপাতালের স্টিকার লাগানো গাড়িটি দেখেও সন্দেহ পুলিশের। সঙ্গে সঙ্গে দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। তাদের বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মেলে। তারপরই ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃতরা প্রত্যেকেই বিহারের বাসিন্দা। তারা চুরি করা তারগুলি থেকে তামা বার করে তা বিক্রি করত।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, ঘটনায় বিএসএনএলের কোনও কর্মী যুক্ত আছে কিনা? কারণ, কোন এলাকা দিয়ে তারগুলো গিয়েছে তা এই দল জানল কী করে? বাইরে থেকে অনুমানের ভিত্তিতে এত বড় অপারেশন চালানো কার্যত অসম্ভব বলে মত তদন্তকারীদের। ধৃতদের জেরা করে ঘটনায় আর কারা যুক্ত রয়েছে তার মূলে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.