Advertisement
Advertisement

Breaking News

কালো টাকা সাদা করতে ব্যবহার হচ্ছে আধারের ফটোকপি

‘এশিয়ান ডিটেকটিভ ব্যুরো’-এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ৷

ADHAAR card xerox of the employees are taken for black money exchange
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 19, 2016 11:01 am
  • Updated:November 19, 2016 11:01 am

গৌতম ব্রহ্ম: প্রথমে মনে হয়েছিল ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি’৷ কিন্তু শেষ হল বজ্রপাতে!

মিষ্টিমুখের জন্য কড়কড়ে পাঁচশো টাকার নোট কর্মীদের হাতে গুঁজে দেওয়া হয়েছিল৷ ফেরত চাওয়া হয়েছিল ২০০ টাকা৷ কিন্তু হঠাৎই কর্মীদের জানানো হয়, ‘ব্যালান্স’ দিতে হবে না৷ আধার কার্ডের জেরক্স দিন৷ তাহলেই হবে৷

Advertisement

মালিকপক্ষের এহেন ফরমানে হকচকিয়ে গেলেন কর্মীরা৷ তেতো হয়ে গেল মিষ্টিমুখ!

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার, পার্ক সার্কাসের কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে৷ এখানে ‘এশিয়ান ডিটেকটিভ ব্যুরো’- নামে একটি ঠিকাদারি সংস্থার প্রায় ২০০ জন সাফাইকর্মী কাজ করেন৷ হাসপাতাল পরিষ্কার করা থেকে রোগী পরিবহণ, ডাক্তারদের সহযোগিতা করা থেকে ফাইল আদান-প্রদান, অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকেন এই কর্মীরা৷

এদিন কর্মীদের ডেকে পাঠান সংস্থার জনৈক সুপারভাইজার ‘অশোকবাবু’৷ বিজয়ার মিষ্টি খাওয়ার জন্য দেন পাঁচশো টাকার ‘বাতিল’ নোট৷ এর পরই আধার কার্ডের কথাটা পাড়েন৷ জানান, যত দ্রুত সম্ভব আধার কার্ডের একটা জেরক্স দিয়ে নিয়োগকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করতে হবে৷ উদ্ধার করতে হবে বিপদ থেকে৷ যদিও রাত পর্যন্ত কর্মীরা সেই ‘বিপদ’-এর গভীরতা মাপতে পারেননি৷ আশঙ্কা, কালো টাকা ‘এক্সচেঞ্জ’ করার জন্য তাঁদের আধার কার্ড ব্যবহার করা হবে৷ তাই এত নাটক৷ বাতিল নোটে মিষ্টিমুখ৷ আরও এক দুশ্চিন্তাও উঁকি মারতে শুরু করেছে৷ ন্যাশনালের রামমোহন ব্লকের দুই অস্থায়ী কর্মী জানালেন, “ইএসআই ও প্রভিডেন্ড ফান্ডের জন্য প্রতি মাসে আমাদের বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হচেছ৷ অথচ আমরা কেউই ইএসআই-পিএফের ইউএএন নম্বর জানাতে পারেনি৷ এখন পিএফের নাম করে আধার কার্ড চাওয়া হচ্ছে৷ মিষ্টিমুখ করানো হচেছ৷ অথচ, ৮ মাস আগে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আধার কার্ড, ভোটার কার্ড-সহ সমস্ত কাগজপত্র জমা নিয়েছে নিয়োগকারী সংস্থা৷ সেই অ্যাকাউন্টের পাসবুক এখনও হাতে পাননি কেউ৷ কর্মীদের মনে প্রশ্ন, “কোথায় গেল আমাদের অ্যাকাউন্ট? সেগুলি কি ‘কালো টাকা’ সাদা করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বা হচ্ছে?”

আর এক কর্মী জানালেন, “বছর চারেক হয়ে গেল এই সংস্থার হয়ে কাজ করছি৷ আজ পর্যন্ত এক টাকাও মিষ্টি খাওয়ার জন্য দেয়নি৷ আর এখন পাঁচশো টাকা দিয়ে দিল৷ সন্দেহ হবে না?” হাসপাতাল সূত্রের খবর, আজ পর্যন্ত কখনও মাসের দশ-বারো তারিখের আগে বেতন হয়নি তাদের৷ কিন্তু নভেম্বরের ৯ তারিখ তড়িঘড়ি পুরনো নোটে বেতন দেওয়া হয়েছে৷ গোটা ঘটনা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ন্যাশনালের এমএসভিপি ডা. পীতবরণ চক্রবর্তী৷ তিনি বলেন, “এডিবি-কে বহুবার কর্মীদের ইএসআই ও পিএফের বিষয়ে বলা হয়েছে৷ চিঠি দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কাগজপত্র জমা করেনি৷ কথা না শোনায় এডিবি-র ‘বিল’-ও আটকে রাখা হয়েছে৷ তবে বাতিল নোটে মিষ্টি খাওয়ানো বা বেতনের কথা জানি না৷ খোঁজ নেব৷”

শুধু ন্যাশনাল নয়, কলকাতা মেডিক্যল, আরজি কর, এনআরএসেও কর্মী সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে এডিবি৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই নোট বাতিল ঘোষণার পর কর্মীদের পুরনো নোটে বেতন হয়েছে৷ সেই নোটের মধ্যে বেশ কিছু ‘জাল’ নোটও বেরিয়েছে৷ এদিন মেডিক্যাল কলেজের ডেভিড হেয়ার ব্লকের এক কর্মী বেতনের টাকা জমা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন৷ এডিবি-র অন্যতম কর্ণধার সুমন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগের একাংশ সত্যি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন৷ তিনি বলেন, “ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে সমস্যা রয়েছে৷ তাই নোট-বাতিলের ঘোষণার পরও নগদে বেতন দিতে হয়েছে৷ তবে, পুরনো অনেক কর্মীরই ইএসআই-পিএফ অ্যাকাউন্ট হয়ে গিয়েছে৷ সেই সবের জন্যই আধার কার্ড চেয়েছি৷ তবে মিষ্টি খেতে টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানা নেই৷”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ