Advertisement
Advertisement

হুঁশ ফেরেনি চিংড়িঘাটার, এখনও ট্রাফিক আইনকে বুড়ো আঙুল

বাসচালক লক্ষ্মণ এমন করতে পারে না, দাবি পরিবারের।

After chingrighata accident people are still unaware about road safety
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 4, 2018 8:07 pm
  • Updated:February 4, 2018 8:07 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুটি প্রাণ অকালে ঝরে গেল। বাসের ধাক্কায় মৃত্যুর প্রতিবাদে ধুন্ধুমার। এত বড় ঘটনার পরও হুঁশ ফেরেনি চিংড়িঘাটার। সেই একইরকমভাবে পথচারীরা রাস্তা পেরোচ্ছেন। সিগন্যাল নিয়ে রয়েছে নানা বিভ্রান্তি।

[রাজাবাজারে ঝুপড়িতে বিধ্বংসী আগুন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা]

Advertisement

শনিবার বেলার দিকে চিংড়িঘাটা মোড়ে কার্যত আগুন জ্বলার পর রবিবার পরিস্থিতি অনেকটাই ছিল শান্ত। তবে সকালের দিকে ওই এলাকায় তেমন ট্রাফিক পুলিশ চোখে পড়েনি। যার সুযোগে ইচ্ছেমতো চলে রাস্তা পারাপার। পরে অবশ্যে একজনকে মোতায়েন করা হয়। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা বদলালেও সাইকেল আরোহীদের দেখা যায় নিয়ম ভেঙে রাস্তা পেরোচ্ছেন। কারণ জিজ্ঞাসা হলে তাদের বক্তব্য ঝুঁকি নিতে হবে। এই যদি পথচারী বা সাইকেল আরোহীদের একটা অংশের মনোভাব হয় তাহলে বোঝাই যায় এত বড় ঘটনার পরও কিছু বদলায়নি। তবে পাশাপাশি সিগন্যাল নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকার সিগনাল অটো মোড থাকায় কখনই তা লাল হচ্ছিল না। এরফলে পথচারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বেলার দিকে অবশ্য ছবিটা বদলায়। কলকাতা পুলিশের প্রচুর কর্মী মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি বিধাননগর কমিশনারেটের কর্মীরাও কাজ শুরু করেন। গার্ড রেল বসানো হয়। ডিসি ট্রাফিক সুমিত কুমার জানান, শনিবারের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাইকেল আরোহী ও পথচারীদের জন্য আলাদা লেন করা হচ্ছে। পাশাপাশি আন্ডারপাস ও ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সোমবার কলকাতা পুলিশের পদস্থ কর্তারা ওই এলাকায় যাবেন। এদিকে চিংড়িঘাটায় গণ্ডগোলের ঘটনায় এদিন স্থানীয় এক বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুকান্তনগরের বাসিন্দা দিলীপ মাইতিকে এদিন বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হয় ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁর জেল হেফাজত হয়। অন্যদিকে ধৃত বাস চালক লক্ষ্মণ সামন্তকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলে থাকতে হবে।

Advertisement

[সঞ্জয় ও বিশ্বজিতের পরিবারের পাশে দাঁড়াল রাজ্য, আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা]

স্বামীর এই শাস্তি মানতে পারছেন না লক্ষ্মণ সামন্তের স্ত্রী টুম্পা সামন্ত। তাঁর স্বামী ইচ্ছাকৃত ভাবে বাসচাপা দিয়ে দুই তরতাজা ছাত্রকে মেরে ফেলতে পারেন। একথা তিনি কিছুতেই বিশ্বাস করেননি। লক্ষ্মনের বাড়ি হাওয়ার জয়পুর থানার মনুচক সামন্তপাড়ার বাসিন্দা। টুম্পা বলেন, শনিবার সকালে বাস দুর্ঘটনার খবর তিনি টিভিতে দেখেন। কিন্তু তখনও জানতেন না যে তাঁরই স্বামী সেই ঘাতক বাসের চালক। বিকেলে তিনি জানতে পারেন ওই দুর্ঘটনার জন্যে স্বামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সামন্ত দম্পতির পঁচিশ বছরের দাম্পত্য। তখন থেকেই টুম্পাদেবী দেখেছেন লক্ষ্মন রোজ সকালে বাস নিয়ে বের হতেন আর ডিউটি সেরে রাতে বাড়ি ফিরতেন। মুচিঘাটা-করুণাময়ী রুটে এতদিন বাস চালিয়ে আসছেন লক্ষ্ণন। তাঁর হাতে কোনও দিন কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। শনিবারের ঘটনাটি নিছকই অঘটন বলে মত স্ত্রীর। ওই বধূর কথায়, ফুলের মতো যে দুটো প্রাণ এই ঘটনায় অকালে চলে গেল তাঁরা তাঁর সন্তানের মতো। এই ঘটনায় তাঁর স্বামীকে ‘খুনি’ সাজানো হচ্ছে বলে মনে করেন ওই বধূ। টুম্পাদেবীর দাবি স্বামী কখনওই ইচ্ছাকৃতভাবে এমন অপরাধ করতে পারেন না। সামন্ত পরিবারে লক্ষ্মণই একমাত্র রোজগেরে। সেই টাকায় খুব কষ্টে চারটে পেট চলে। এখন কীভাবে সংসার চলবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না দুই সন্তানের মা। প্রতিবেশীরাও জানান খুব মিশুকে ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ লক্ষ্ণন। এমন ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশীরাও।

[আর কত মরলে মানুষ বাস তুমি থামবে?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ