সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার থেকে সোমবার। দুধের শিশুর উপর পাশবিক অত্যাচারের প্রতিবাদে চতুর্থদিনেও আন্দোলনের ঝাঁঝ একইরকম। সোমবার সকাল থেকে অভিভাবকরা জড়ো হন স্কুল চত্বরে। স্কুল বন্ধের প্রতিবাদে তাঁরা প্রতিবাদ জানান। তাতে শামিল হয় পড়ুয়রা।
[জিডি বিড়লা স্কুলের বিরুদ্ধে এবার রাস্তায় অভিভাবকরা]
সোমবার স্কুলে অনেকের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা না হওয়ায় পড়ুয়ারা হতাশ। অভিভাবকদের বক্তব্য পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত মানা যায় না। কেউ চায় না পড়ুয়াদের ক্ষতি হোক। কেউ স্কুলের বিরুদ্ধে নয়। সবাই স্কুলের পরিকাঠামো, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। এর ফলে ফর্ম ফিলাপের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এদিন স্কুলে অলিম্পিয়াডের পরীক্ষা ছিল। যা নিয়ে অনেকের উৎসাহ থাকলেও স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তে পড়ুয়ারা মনমরা হয়ে রয়েছে। পাশাপাশি প্রিন্সিপালের পদত্যাগ এবং গ্রেপ্তারের দাবিতে আজও অনড় অভিভাবকরা। তাদের সাফ কথা শুরুতেই এই ঘটনার নিন্দা করলে বিষয়টি এতদূর গড়াত না। অভিভাবকদের গত শুক্রবার পাঁচটি দাবির বিষয় স্কুলকে জানানো হয়েছিল। তখন ওরা জানিয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। কিন্তু মুখে ভাল কথা বলা হলেও এপর্যন্ত কোনও ইতিবাচক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
[এবার এম পি বিড়লা স্কুল, দিনের পর দিন যৌন নির্যাতন দুধের শিশুকে]
এদিন সকালে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে যান তৃণমূল নেতা তথা গায়ক সৌমিত্র রায়। তিনি মনে করেন পরীক্ষার মধ্যে এভাব স্কুল বন্ধ রাখা অনুচিত। শিশু শিক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনও স্কুলে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার অধিকারের পরিপন্থী। স্কুলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। স্কুল বন্ধ রেখে সমস্যা সমাধান করা যায় না। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও এই নিয়ে কথা বলব।’’
এদিকে দু‘দিনের পুলিশ হেপাজত শেষে দুই অভিযুক্তকে এদিন আলিপুর আদালতে তোলা হবে। আলিপুর জাজেস কোর্টের দ্বিতীয় দায়রা আদালতে পকসো আইনে রুজু এই মামলা আজ উঠবে। শনিবার যাদবপুর থানার থেক এই মামলা লালবাজার গোয়েন্দা বিভাগ নিয়েছে। সূত্রের খবর, নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য লালবাজার আবেদন জানাবে। অভিযুক্তদের জেরা করে জানতে চাওয়া হবে ঠিক কী ঘটেছিল, কী পরিস্থিতি ছিল। স্কুলের কেউ কি বিষয়টি জানত। পাশাপাশি নির্যাতিতা শিশু এবং তার বাবা-মার জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানাবে লালবাজার। নির্যাতিতা শিশুর পোশাক ইতিমধ্যে পুলিশ নিজেদের হেপাজতে নিয়েছে। এই নিয়ে ফরেনসিক তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে। স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে শনিবার যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নতুন একটি মামলা প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে রুজু করেছে। প্রথমে থেকেই নির্যাতিতার বাবা-মা বলে আসছিলেন প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কথা। পাশাপাশি তাদের অভিযোগ অনেক কিছু জেনেও চুপ রয়েছেন প্রিন্সিপাল। তিনি ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন। আইনজীবী মহল মনে করছে অভিযোগের যা গতিপ্রকৃতি তাতে বোঝা যাচ্ছে পকসো আইনের বিশেষ ধারায় পড়তে চলেছেন জি ডি বিড়লার প্রিন্সপাল। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ২০১ এবং ১২০ বি ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। এধরনের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। যে ধারায় প্রমাণ লোপাট এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে।