সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা মানে কি স্রেফ রঙিন আলোর ভিক্টোরিয়া, গঙ্গার ঘাট, ময়দানের বর্ষাভেজা সবুজ প্রান্তর! কলকাতা মানে কি শুধু দুর্গাপুজো, রসগোল্লা আর সময়ে অসময়ে টাঙিয়ে রাখা সংস্কৃতির শামিয়ানা! হিন্দি সিনেমা তো বটেই ফিলহালের ‘ফিল গুড’ বাংলা সিনেমা দেখলেও কলকাতাকে এরকমই মনে হবে৷ কিন্তু এ কলকাতার ভিতর রয়েছে আর একটা কলকাতা৷ হেঁটে দেখতে জানলে খোঁজ মেলে তার৷ যেমন খোঁজ পেয়েছেন তথ্য-প্রযুক্তি কর্মী অমিত ঘোষ৷
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে বয়স্ক এক দম্পতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন অমিতবাবু৷ সল্টলেক করুণাময়ীর মোড়ের কাছে তাঁরা খাবার বিক্রি করেন৷ কিন্তু নেহাতই ব্যবসায়ী নন তাঁরা৷ মধ্যবিত্ত পরিবারের এই বৃদ্ধ দম্পতির আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে, বাধ্য হয়ে তাঁদের এইভাবে দিন গুজরান করতে হচ্ছে৷ কিন্তু এ নিয়ে তাঁদের কোনও আক্ষেপ নেই৷ হাসিমুখেই এই ভবিতব্যকে মেনে নিয়েছেন তাঁরা৷ অমিতবাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেছেন, অন্য জায়গা থেকে খাবার না কিনে যদি এঁদের থেকে সকলে খাবার কেনেন, তাহলেই এঁদের প্রতি কিছুটা হলেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া সম্ভব৷
এর আগে এক্সাইডের হলদিরামের সামনে পাঁপড় বিক্রি করা ৮৩ বছর বয়সি শিলা ঘোষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এরকমই এক শহরবাসী৷ নেটদুনিয়ায় শিলা মাসি হিসেবেই তিনি পরিচিত৷ বয়সের তোয়াক্কা না করে, কোনও সহানুভূতি, করুণা প্রার্থনা না করেও, তাঁর জীবন নির্বাহের ঘটনা সকল শহরবাসীকে আবেগমথিত করেছিল৷ পরিস্থিতির চাপে পড়ে ঠিক একইরকমভাবে জীবন নির্বাহের পথ নিয়েছেন এই দম্পতিও৷ কোনও সহানুভূতি চান না তাঁরাও৷ জীবনে ভালমন্দ যাই আসুক সত্যিকে সহজেই মেনে নিয়েছেন তারা৷ আর তাই যত দুঃখই থাক তাঁদের মুখের হাসিটি অমলিন৷ এ হাসিটিই এ কলকাতার আর এক বাস্তব ছবি৷ সিনেমাওয়ালাদের সাজানো কলকাতা তাকে ছুঁতেই পারে না৷