Advertisement
Advertisement
ATM Fraud Case

সরষের মধ্যেই ভূত? ATM জালিয়াতি কাণ্ডে পুলিশের নজরে এবার রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা

কলকাতার অন্তত দশটি এটিএমে হানা দিয়েছে জালিয়াতরা।

ATM Fraud Case: Police asking ATM maintaining company | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 1, 2021 10:16 pm
  • Updated:June 1, 2021 10:17 pm

অর্ণব আইচ: সরষের মধ্যেই কি ভূত? এটিএম (ATM) জালিয়াতি কাণ্ডে এখন এই প্রশ্নটাই উঠছে। জালিয়াতদের সন্ধান চালানো হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগকারী সংস্থার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ। তার মূল কারণ ‘গাফিলতি’। সংস্থাটি বিদেশি হলেও তার কয়েকজন ভারতীয় কর্তাকেই ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে লালবাজার। এর পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার বিরুদ্ধে চিন্তাভাবনা করবেন লালবাজারের কর্তারা। এদিকে, জালিয়াতদের সন্ধানে ইতিমধ্যেই দিল্লি ও ফরিদাবাদ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের একটি টিম দিল্লি ও ফরিদাবাদে যাচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার অন্তত দশটি এটিএমে হানা দিয়েছে জালিয়াতরা। নতুন পদ্ধতিতে তারা তুলে নিচ্ছে টাকা। সোমবার পর্যন্তও সাতটি এটিএম থেকে দু’কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর পর তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও তিনটি। ফলে প্রায় আড়াই কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে বলেই সন্দেহ পুলিশের। কিন্তু আরও কিছু এটিএমে জালিয়াতির সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত যে, নতুন পদ্ধতিতে এটিএমের বাইরের আবরণ খুলে কোনও ডিভাইস বসিয়ে ম্যালওয়্যারের সাহায্যে তুলে নেওয়া হচ্ছে টাকা। এই ঘটনায় যে বেসরকারি ব্যাংকের এটিএমের রক্ষণাবেক্ষণ যে সংস্থাটি করে, সেই সংস্থাটিই অভিযোগ করেছে। এই বেসরকারি ব্যাংকটি পাঁচটি সংস্থাকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে একটি সংস্থা হচ্ছে ওই বিদেশি বহুজাতিক সংস্থাটি। এখনও পর্যন্ত দিল্লি, গাজিয়াবাদ, ফরিদাবাদ থেকে শুরু করে কলকাতার যতগুলি এটিএমে এই জালিয়াতি হয়েছে, প্রত্যেকটি রক্ষণাবেক্ষণ করে এই বিদেশি সংস্থাটিই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কলকাতায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বলি আরও ১, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু প্রৌঢ়ার]

লালবজারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস আগে প্রত্যেকটি ব্যাংক ও এটিএম রক্ষণাবেক্ষণ করছে, এমন সংস্থাগুলিকে রিজার্ভ ব্যাংক গাইডলাইন দেয়। তাতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, অবশ্যই যেন এটিএমের সফটওয়্যার ও সিস্টেম আপগ্রেড করা হয়। এটিএমের মাদারবোর্ড ও সফটওয়্যারজনিত নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, অন্য সংস্থাগুলি সেই গাইডলাইন মেনে এটিএমগুলির ‘সিকিউরিটি’র বিষয়গুলি দেখলেও এই বিশেষ বহুজাতিক বিদেশি সংস্থাটি কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। আর তার ফলেই জালিয়াতরা সুযোগ পেয়েছে পর পর জালিয়াতি করার। কারণ জালিয়াতদের কেউ ওই সংস্থার অথবা ব্যাঙ্কের পুরনো কর্মী হলেও সে পুরনো সিস্টেম ও সফটওয়্যারেই কাজ করে এসেছে। সেই ক্ষেত্রে সফটওয়্যার আপগ্রেড করলে এত টাকা জালিয়াতি হত না। ফলে ‘গাফিলতি’র অভিযোগই তুলেছে লালবাজার। সেই কারণেই ওই সংস্থার প্রযুক্তির দায়িত্বে থাকা কর্তাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রয়োজনে সংস্থাটির বিরুদ্ধে যে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন এক লালবাজারের কর্তা। এদিকে, এদিনও নিউ মার্কেট সহ কয়েকটি এটিএম কাউন্টারে যান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কীভাবে এই জালিয়াতি করা হচ্ছে, তা জানতে ওই বিদেশি সংস্থাটির কর্মীদের সাহায্য চান তাঁরা। এদিন ওই সংস্থার কমীরাও নিউ মার্কেটের ওই এটিএম কাউন্টারটিতে যান। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দেখান জালিয়াতির পদ্ধতি। তবে ওই বিদেশি সংস্থাটিও টাকা ভরতি করার জন্য কলকাতার একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয় বলে জানা গিয়েছে। ওই সংস্থার কয়েকজন কমীকেও গোয়েন্দা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এটিএমগুলির সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়েছে জালিয়াতদের চেহারা। যদিও তাদের সন্ধান মেলেনি। তাদের সন্ধানে চলছে পুলিশের তল্লাশি। রাস্তায় ট্রাফিকের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে একটি গাড়ির ছবি। সেই গাড়িটি জালিয়াতদের কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, লালবাজারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই গ্যাংটি বাইরের। সেই ক্ষেত্রে ফরিদাবাদের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফরিদাবাদে গ্যাংয়ের একজন ধরাও পড়েছে। বাকিরা এসে এই জালিয়াতি করেছে কলকাতায়। জানা গিয়েছে, ফরিদাবাদের মুজেসর থানা এলাকার সেক্টর ২৮ অঞ্চলের একটি একটি এটিএম কাউন্টারের দু’টি যন্ত্র থেকে মোট ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। সেই কারণে ফরিদাবাদের পুলিশের সঙ্গে লালবাজারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ