রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সামনের বছর বিধানসভা ভোট। লকডাউন থাকায় দু’মাস সমস্ত দলীয় কর্মসূচি বন্ধ ছিল। ঘরে বসে ছিলেন নেতা-কর্মীরা। এবার লকডাউনের সময়সীমা শেষের পথে। তাই আর ঘরে নয়, এবার পথে নামতে হবে। আবার যেতে হবে মানুষের দরজায় দরজায়। ফের আন্দোলন শুরুর আগে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ৯ দফা চার্জশিট দিতে হবে। বঙ্গ বিজেপিকে এমনই নির্দেশ দিল দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই নির্দেশ মতো আগামী ২৭ মে রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে ৯ দফা চার্জশিট তৈরি করছে বিজেপি। ওই দিনই তৃণমূল সরকারের ৯ বছর পূর্তি হচ্ছে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরতে ৯ দফা চার্জশিট তৈরি করছে বঙ্গ বিজেপি। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে রাজ্যের ব্যর্থতার অভিযোগও তুলে ধরা হবে সেখানে। চার্জশিট তৈরির দায়িত্ব পড়েছে রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর উপর। চার্জশিটে বিভিন্ন বিষয়কে তুলে ধরে আক্রমণের নিশানা করা হবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২৭ মে সাংবাদিক বৈঠক করে এই চার্জশিট পেশের পাশাপাশি দলের বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। সরকারের বিরুদ্ধে এই চার্জশিট পেশ করার পর তা নিয়ে মানুষের কাছে যাবেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। জনগণের মতামত নেওয়া হবে। জুন মাস থেকে শুরু হবে আদোলন। তবে তা কোন পথে হবে বা ঠিক কী ধরনের হবে, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: রাজারহাট হজ হাউসে ইদ পালন ১০৯ বিদেশি তবলিঘি সদস্যের, ছাদেই নমাজ পাঠ]
আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিকে সামনে রেখে ঝড় বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে বিজেপি। দিলীপ ঘোষ, সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়রা যেমন যাচ্ছেন তেমনই দেবশ্রী চৌধুরি, লকেট চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু ঠাকুর, ডাঃ সুভাষ সরকার-সহ সব সাংসদরা ঘুরছেন নিজেদের এলাকায়। লক্ষ্য একটাই, মানুষের বিপদে তাঁদের পাশে আছে বিজেপি – এই বার্তাটা পৌঁছে দেওয়া। ঝড়ের পরই রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে চলে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজ্যকে হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ দিয়েছেন তিনি। মোদির ওই সফরকে কেন্দ্র করে বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করেছে যে প্রধানমন্ত্রী বাংলার মানুষের বিপদে পাশে আছেন, বাংলার প্রতি তিনি আন্তরিক। ত্রাণ দিতে গিয়েও মানুষজনকে এভাবেই বোঝাচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা।
[আরও পড়ুন: রাজ্য দপ্তরের কর্মীদের মাইনে না পাওয়ার খবর ভিত্তিহীন, জানাল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব]
সবমিলিয়ে, একদিকে তৃণমূলকে আক্রমণ, বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের ব্যর্থতার অভিযোগ যেমন তুলে ধরা হবে, তেমনই অন্যদিকে, ২০২১ কে সামনে রেখে জনসংযোগের ভিতকে আরও মজবুত করতে পথে নেমে পড়তে হবে, বাড়াতে হবে আন্দোলনের তীব্রতা। রাজ্যে দলের কর্মীদের এমনই নির্দেশ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের।