Advertisement
Advertisement

Breaking News

মারণ খেলা ব্লু হোয়েল থেকে মুক্তির পাঠ এবার স্কুল পাঠ্যে

নয়া উদ্যোগ স্কুলশিক্ষা দপ্তরের৷

Blue Whale preventive lesson is now in school books.
Published by: Tanujit Das
  • Posted:January 27, 2019 9:38 am
  • Updated:January 27, 2019 9:38 am

দীপঙ্কর মণ্ডল: নিছক কৌতূহলের বশে মোবাইলে ‘ব্লু হোয়েল’ ডাউনলোড করেছেন। এরপর ধাপে ধাপে এগোলেন ৫০ দিন। প্রথমদিকে দেওয়া হবে ভোরে ওঠা বা গান শোনার মতো সহজ চ্যালেঞ্জ৷ ক্রমশ তা হতে থাকবে কঠিন থেকে কঠিনতর৷ কিন্তু তাপরেই মুশকিল হয়ে উঠবে বেঁচে থাকা। বলা হবে, হাতে সূচ ফুটিয়ে তিমি মাছের ছবি আঁকাতে। আর শেষ ধাপে দেওয়া হবে আত্মহত্যার নির্দেশ। এই মারণ খেলা সম্পর্কিত সচেতনতাই এবার ছড়ানো হবে রাজ্যের স্কুলগুলিতে৷ তার আগে স্কুলের শিক্ষকদের দেওয়া হবে সচেতনতার বিশেষ পাঠ৷ ইতিমধ্যে রাজ্যের স্কুলগুলির প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য বিশেষ বই পাঠানোর ব্যবস্থা শুরু করেছে স্কুলশিক্ষা দপ্তর। সেই বইতে শিক্ষকদের জন্য অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি থাকছে সর্বনাশা ব্লু হোয়েলের বিভৎস পরিণতির কথা। যা পরবর্তী কালে পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেবেন তাঁরা৷

[আজ থেকে ৩৬ ঘণ্টা বন্ধ লোকাল ট্রেন পরিষেবা, ভোগান্তি নিত্যযাত্রীদের ]

Advertisement

সরকারি কর্তাদের মতে, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের শেখানোর আগে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্লু হোয়েলের কথা বিশদে জানা দরকার। এই মারণ খেলার মোহ কাটাতে ঘাম ঝরানোর দাওয়াই দেওয়া হবে স্কুলে। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ—সহ নানা রাজ্যে ব্লু হোয়েলে আসক্তির খবর পাওয়া যায়। বিশ্বের অন্য বেশকিছু দেশেও থাবা বসিয়েছে এই ভয়ংকর নীল তিমি। কিছু না বুঝেই পড়ুয়াদের একটি অংশ বেপথে যাচ্ছে। এই কারণেই মারণ খেলার বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। খেলায় অংশগ্রহণকারীকে কিভাবে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়, তা বিস্তারিত তুলে ধরা হবে শিক্ষকদের জন্য তৈরি ওই বইতে। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্লু হোয়েলের বিষয়ে পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। ২ জানুয়ারি থেকে রাজ্যে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে। চলতি মাসেই শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য নির্দিষ্ট ওই বইটি পাঠানো ব্যবস্থা করছে স্কুলশিক্ষা দপ্তর। বইয়ের একটি অংশে বলা হয়েছে, যন্ত্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব ক্রমশ একা করে তুলছে মানুষকে। ‘সুইসাইড’, ‘সেলসম্যান’, ‘লেটস গো জেওয়াকিং’, ‘ফাইভ মিনিটস টু কিল ইওরসেল্ফ’, ‘২০ সেকেন্ডস টু ডাই’ এবং ‘ব্লু হোয়েল’-এর মতো খেলায় ডুবে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। অভিভাবকদের চোখের আড়ালে মারণ খেলায় মেতে উঠছে শিশু। এই ধরনের খেলা থেকে ছাত্র ছাত্রীদের দূরে রাখতে প্রতিদিন ৪০ মিনিট করে ঘাম ঝরানোর ব্যায়াম শেখাতে হবে। স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষার বিষয়েও শিক্ষকদের জন্য বিস্তারিত পাঠ থাকছে বইতে।

Advertisement

[সাধারণতন্ত্র দিবসে বিতর্কিত পোস্ট, নেটিজেনদের রোষের মুখে মীর]

মোট ১৭৬ পাতার বই। শুধুমাত্র ব্লু হোয়েল নিয়েই একটি অধ্যায় বরাদ্দ হয়েছে। পর্ষদ শিক্ষকদের উদ্দেশে লিখেছে– ব্লু হোয়েল একটি অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ। যা পড়ুয়া বা যুব সম্প্রদায়কে নিজেদের ক্ষতি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়। গ্রুপের একজন কিউরেটর থাকে। তিনি প্রতিযোগীদের ৫০ দিনের কাজ দেন। প্রতিদিনই নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ দেন। যেমন, সারাদিন গান শোনা। তারপর মাঝরাতে ভয়ের সিনেমা দেখা। ভোর চারটের সময় উঠে কিছু করতে বলা। দিন যত বাড়তে থাকে, চ্যালেঞ্জ তত কঠিন ও কঠিনতর হতে থাকে। হাত কেটে তিমির ছবি আঁকতে বলা হয়। প্রতিদিন কাজ শেষ করার পরে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে বলা হয়। ৪৯ তম দিনে প্রতিযোগীকে পার্থিব জগৎ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে চুপ করে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ৫০ তম দিনে প্রতিযোগীকে আত্মহত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়। যারা আত্মহত্যা করতে ভয় পায়, তাদের হুমকি দেওয়া হয় কাছের কোনও মানুষকে শেষ করে দেওয়ার। একবার এই খেলায় অংশ নিলে তাই বেরিয়ে আসার সুযোগ থাকে না। বলা হয় তোমার সব তথ্য আমার কাছে আছে। তুমি আমাদের হাত থেকে বাঁচতে পারবে না।

[আগুন নেভাতে রোবট কিনছে কলকাতা পুরসভা]

প্রশিক্ষণের ওই বইতে শিক্ষকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, এই কাজগুলি যারা করে তারা নিজেরা মানসিকভাবে অসুস্থ। যারা খেলে তারাও হতাশাগ্রস্ত। এই ধরনের ভিডিও গেম শিশুদের সমাজবিরোধী কাজে উদ্বুদ্ধ করে। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এই ধরনের আসক্তি বাড়ছে। মনোবিদদের কাছে ভিড় বাড়ছে। মা-বাবার সাহায্য ছাড়া এই রোগ সারানো সম্ভব নয়। প্রয়োজনে পড়ুয়ার মোবাইলে বা ডেস্কটপে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তাকে কাউন্সেলিং করাতে হবে। তার অনলাইন গেমের নেশা ছাড়াতে হবে বা তাকে মাঠে খেলার সুযোগ দিতে হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ