Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kolkata

কলকাতার বাজারে ইঁদুরের বিষ্ঠা ও পোড়া মোবিল মেশানো ভেজাল কালোজিরে, উদ্ধার করল পুলিশ

মোট ১১ হাজার ১০০ কেজি এই ভেজাল কালোজিরে উদ্ধার হয়েছে।

Burnt Mobile is mixed with Black cumin in Kolkata | Sangbad Pratidin
Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:October 2, 2021 9:11 pm
  • Updated:October 2, 2021 9:11 pm

অর্ণব আইচ: কালোজিরেতে ‘বিষ’। যে কালোজিরের ফোড়ন দিলে ইলিশ মাছের পাতলা ঝোল সুস্বাদু হয়ে ওঠে, লুচির সঙ্গে সাদা আলুর তরকারি যে কালোজিরে ফোড়ন ছাড়া প্রায় অসম্ভব, সেই কালোজিরেতেই বিপদ। ফরেনসিকের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার (Kolkata) বাজারে বিক্রি হওয়া কালোজিরেতে মেশানো হয়েছে ইঁদুরের বিষ্ঠা ও পোড়া কালো মোবিল। এই বস্তুটি শরীরে মিশলে তার ফল যে হতে পারে মারাত্মক, তাও পুলিশকে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শুক্রবার মধ্য কলকাতার পোস্তা বাজারে তল্লাশি চালিয়ে একটি ট্রাক থেকে ১৭ লক্ষ টাকার শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর ওই ভেজাল কালোজিরে উদ্ধার করেছেন কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখার গোয়েন্দারা। শনিবার লালবাজারে ডিসি (ইবি) বিদিশা কলিতা জানান, এই ব্যাপারে কিছুদিন আগেই লক্ষ্মীকান্ত সাউ নামে জোড়াবাগান এলাকার এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে জেরা করেই পোস্তার একটি ট্রাক থেকে ২২২টি বস্তা এই ভেজাল কালোজিরে উদ্ধার করা হয়েছে। একেকটি বস্তার ওজন ৫০ কেজি। মোট ১১ হাজার ১০০ কেজি এই ভেজাল কালোজিরে উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের পরামর্শ, কালোজিরে কেনার আগে ক্রেতারা যেন তা হাতে ঘষে দেখেন। হাত কালো হয়ে গেলে বুঝতে হবে, এই কালোজিরেতে ভেজাল রয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: TMC in Tripura: তৃণমূল ভবনে ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক, তুঙ্গে দলবদলের জল্পনা]

এদিকে, ইবির গোয়েন্দাদের হাতে ৫৫ কেজি ধনে উদ্ধার হয়েছে। প্রত্যেক কেজির ওজন ৪৫ কেজি। চকচকে হলুদ রং করার জন্য ভেজাল ধনের মধ্যে গন্ধক দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত আগস্ট মাঝের মাঝামাঝি। ইবির গোয়েন্দাদের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে যে, উত্তর কলকাতার জোড়াবাগানের একটি গোডাউনে জড়ো করা হয়েছে বস্তাভরতি ভেজাল কালোজিরে। সেই সূত্র ধরেই গোয়েন্দারা তল্লাশি চালিয়ে ৩৯ কেজি ভেজাল কালোজিরে উদ্ধার করেন। গ্রেপ্তার হন ব্যবসায়ী লক্ষ্মীকান্ত সাউ। চকচকে চেহারার ওই কালোজিরে হাতে ঘষতেই কালো রঙে ভরতি হয়ে যায় গোয়েন্দাদের হাতের চেটো। গন্ধটিও ছিল সন্দেহজনক। ওই বস্তুটি পরীক্ষার জন্য ফরেনসিকে পাঠানো হয়। সম্প্রতি ফরেনসিক রিপোর্ট জানায়, কালোজিরেতে মেশানো রয়েছে পোড়া মোবিল, যা গাড়ি বা যন্ত্রে ব্যবহার হয়। পোড়া গন্ধও পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও ইঁদুর জাতীয় প্রাণীর বিষ্ঠাও মেশানো রয়েছে এই নমুনায়। এই কুচকুচে কালো রঙের কালোজিরে দেখেই মাথায় হাত গোয়েন্দাদের। কীভাবে এই কালোজিরে কলকাতার বাজারে আসছে, তা জানতে শুরু হয় গোয়েন্দাদের নজরদারি। গত দেড় মাস ধরে কলকাতায় আসা প্রত্যেকটি ট্রাককে ইবির গোয়েন্দারা পরীক্ষা করেন।

Advertisement

শেষ পর্যন্ত শুক্রবার গভীর রাতে ইবির গোয়েন্দাদের তল্লাশিতে পোস্তা বাজার থেকে ধরা পড়ে একটি ট্রাক। পরীক্ষা করতেই বেরিয়ে পড়ে ২২২ বস্তা ভেজাল কালোজিরে। ট্রাকের কাগজপত্র পরীক্ষা ও প্রাথমিক তদন্ত করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, নদিয়ার নাজিরপুরের কাছে একটি জায়গায় তৈরি হচ্ছে ওই ভেজাল কালোজিরে। কীভাবে এই চক্রটি ইদুঁরের বিষ্ঠা সংগ্রহ করে তা কালোজিরের মধ্য মেশাত, তা জানতে নাজিরপুরে হানা দেবেন ইবির গোয়েন্দারা। এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, মোবিল মেশানো ওই ‘বিষাক্ত’ কালোজিরে এতটাই চকচকে যে, তা সহজেই ক্রেতাদের চোখে পড়ে। উৎকৃষ্ট মানের কালোজিরে বলে তা বিক্রি করেন বহু দোকানদার। যদিও রান্নায় দেওয়ার পর পোড়া গন্ধ থাকে না বলে দাবি পুলিশের। কলকাতা ও তার আশপাশের বহু দোকানে ছড়িয়ে পড়েছে ওই ভেজাল কালোজিরে। এমনকী, প্যাকেট করেও বিভিন্ন দোকানে এই ‘বিষাক্ত’ কালোজিরে বিক্রি হচ্ছে বলে খবর। এই চক্রের পান্ডাদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: বাবার মুহূর্তের ভুলে বন্যার জলে ডুবে শিশুর মৃত্যু, শোকের ছায়া উদয়নারায়ণপুরে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ