Advertisement
Advertisement
Calcutta High Court

হাই কোর্টের পুজোর ছুটি কমানো হোক, বিচারপতিদের কমিটির প্রস্তাবে পালটা দিলেন আইনজীবীরা

কোন যুক্তিতে এই প্রস্তাব কমিটির?

Calcutta High Court: Lawyers oppose chief justice proposal on cutting leave
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 11, 2024 1:03 pm
  • Updated:November 11, 2024 1:03 pm  

গোবিন্দ রায়: হাই কোর্টের জমছে মামলার পাহাড়। তা থেকে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কিছুটা কমাতে উদ্যোগী হয়েছে হাই কোর্ট প্রশাসন। ‘ট্র্যাডিশন’ ভেঙে ২০২৫ সাল থেকে পুজোর মোট ছুটি থেকে ৭ দিন বাতিলের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে চার বিচারপতির বিশেষ কমিটির তরফে। তাতেই যেন আগুন ঘি পড়ছে। প্রস্তাবের চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার চেষ্টা হলে বড়সড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ। যদিও নিজেদের নিরপেক্ষ রেখে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন আরেকাংশ।

এ পর্যন্ত দুর্গাপুজোর ষষ্ঠী থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত টানা বন্ধ থাকত হাই কোর্টের স্বাভাবিক কাজকর্ম। মাঝে কটা দিন অবকাশকালীন বেঞ্চ থাকলেও তাতে নৈব নৈব চ। কিন্তু যত অশান্তি একটি চিঠি নিয়ে। তাতেই ছুটি বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুজো থেকে কালী পুজোর মধ্যেকার ৭ দিনে ছুটি বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, বছরে ২২২ দিনের কর্মদিবস লক্ষ্যে এই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাই কোর্টের ছুটি সংক্রান্ত ৪ বিচারপতির বিশেষ কমিটি। কমিটিতে রয়েছেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন, বিচারপতি সৌমেন সেন, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী। আইনজীবীদের তিনটি সংগঠনকে নিয়ে ইতিমধ্যে বৈঠকে বিদ্রোহের আঁচ পেয়েছে বিচারপতিদের কমিটি। কিন্তু এর পরও সেই কমিটি হাই কোর্টের ক্যালেন্ডারে আরও সাতটি কাজের দিন যোগ করতে মরিয়া।

Advertisement

কমিটির বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট বছরে ২২২ দিন হাই কোর্ট চালু রাখতে বলেছে। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে আইনজীবীদের তিনটি সংগঠনের মতামত চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বার অ্যাসোসিয়েশন ও বার লাইব্রেরি ছুটি বাতিলের প্রস্তাবে আপত্তি তুলেছে। ইনকর্পোরেটেড ল’সোসাইটি আবার বিচারপতিদের কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাতেই সহমত হওয়ার কথা জানিয়েছে। বৈঠকে একটি সংগঠন ছুটি কমানোর বদলে রামনবমী ও মে দিবসে (ওই দুটি দিন আদালত খোলা থাকে) ছুটি দেওয়ার পালটা দাবি তুলেছে। আগে হাই কোর্টে গরমের ছুটি থাকতো প্রায় মাস খানেক। গত কয়েকবছর ধরে সেখানেও থাবা বসিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কর্মদিবস বৃদ্ধির ফতোয়া। বর্তমানে সব মিলিয়ে হাই কোর্ট বছরে মোট ২১০ দিন চালু থাকে। আপাতত চার বিচারপতির সুপারিশ অন্য বিচারপতিদের কাছে পাঠিয়ে মত চাওয়া হয়েছে। এর পর সব বিচারপতিদের নিয়ে ‘ফুল কোর্টে’ তা গৃহীত হবে। যদিও এই সিদ্ধান্ত মানতে না চেয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন হাই কোর্টের বৃহত্তর আইনজীবী সংগঠন বার এসোসিয়েশনের সম্পাদক শংকরপ্রসাদ দলপতি। তাঁর বক্তব্য, “শুধু ছুটি বন্ধ করে কাজের দিন বাড়ালেই মামলার পাহাড় কমবে না। সুপ্রিম কোর্টকে এই বিষয়টাও নজরে রাখতে হবে যে, হাই কোর্টে ৭২ জন বিচারপতি থাকার কথা, সেখানে ২০–২২ টি পদ ফাঁকা। আবার দীর্ঘদিন বার থেকে বিচারপতি নিয়োগ বন্ধ হয়ে রয়েছে।”

রাজনৈতিক মত বিরোধ থাকলেও এক্ষেত্রে বারের বর্তমান সম্পাদককে সমর্থন করেছে প্রাক্তন সম্পাদক বিশ্বব্রত বসুমল্লিকও। তিনি বলেন, “সর্বক্ষেত্রে কলকাতা হাই কোর্ট বঞ্চিত। তাই শুধু দিন বাড়িয়েই মামলা নিষ্পত্তি করা যাবে না।” শুধু তাই নয়, তাঁর দাবি, “হাই কোর্টের সব বিচারপতির কার্যক্ষমতাও সমান নয় কেউ সারা দিনে ৫০ টা মামলা শোনেন আবার কেউ ৫ টিও মামলা নিতে পারে না। তাছাড়াও আইনজীবীরা যেখানে রাজি নয়, সেখানে এভাবে জোর করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যায় না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement