Advertisement
Advertisement
Covid

করোনার জেরে হার্ট ব্লক! ভবঘুরেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ

পরবর্তিতে পেসমেকার বসানো হবে ভবঘুরের শরীরে।

Calcutta Medical College Hospital saves homeless man suffering from Covid | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 8, 2021 2:04 pm
  • Updated:November 8, 2021 2:05 pm

অভিরূপ দাস: করোনার (Coronavirus) আধুনিকতম চিকিৎসা পেল ভবঘুরে। তাও আবার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তাঁর শরীরে বসানো হবে স্থায়ী পেসমেকার।

তিন কুলে তাঁর কেউ নেই। রাস্তায় ঘুরে, কুড়িয়ে খেয়ে কোনওরকমে কাটত দিন। নিমতলা ঘাট এলাকার সেই রাম সিংয়ের প্রাণদাতার ভূমিকায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। মুমূর্ষুর অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন ক্রিটিকাল কেয়ার অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সব্যসাচী দাস। তৃতীয় ঢেউ শিয়রে। চার দেওয়ালের মধ্যে থাকা আমজনতাই রক্ষা পাচ্ছেন না ভাইরাসের হাত থেকে। ভবঘুরে তো কোন ছাড়। ফুটপাথে বাস। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। স্বাভাবিক ভাবেই বছর বত্রিশের রাম সিংয়ের ফুসফুসে আঘাত হেনেছিল কোভিড। রাস্তায় অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকেই তুলে এনে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দিয়ে গিয়েছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’র প্রশংসা, তরুণীকে ডেকে সরকারি সাহায্যের আশ্বাস জ্যোতিপ্রিয়র]

কপর্দকশূন্য। পরিচয়ের ঠিক নেই। এমন রোগীর শরীরের হাল দেখে চোখ কপালে তোলেন চিকিৎসকরা। দ্রুত ভরতি করা হয় ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগ রোগীকে পরীক্ষা করে জানায়, হৃৎস্পন্দন অত্যন্ত অনিয়মিত। ইসিজি করিয়ে দেখা যায় মিনিটে হৃৎস্পন্দন মাত্র ত্রিশ। স্বাভাবিক ভাবে যা থাকা উচিত ৬০ থেকে ১০০-এর মধ্যে। কার্ডিয়াক অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের চিকিৎসক ডা. সৌভিক সরকারের কথায়, চিকিৎসা পরিভাষায় সোজাভাবে একে বলা হয় ‘কমপ্লিট হার্ট ব্লক।’ যে কোনও মুহূর্তে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যেত। তড়িঘড়ি ‘টেম্পোরারি পেসমেকার’ বসানোর তোড়জোড় শুরু করেন কলকাতা মেডিক্যালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা। ওই ব্যক্তির শরীরে সুগারের পরিমাণ ছিল মারাত্মক। পায়ের পুরনো একটা সংক্রমণ শুকোচ্ছিল না। তা সারাতে দেওয়া হয় উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক।

Advertisement

আপাতত ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভরতি রাম সিং। ফুসফুসের সংক্রমণ কমাতে দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ তিনি। প্রথমে তাঁর মিনিটে ৬০ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছিল। এখন দিনে ২ লিটার অক্সিজেনেই কাজ চলে যাচ্ছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ক্রিটিকাল কেয়ার টিমের ইনচার্জ ডা. কোয়েল রায়। ভবঘুরে একজনের জীবন বাঁচাতে পেরে তিনিও গর্বিত। তাঁর কথায়, “একজন মানুষ যাঁর তিনকুলে কেউ নেই। আধুনিকতম চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাঁকে সুস্থ করে তুলেছি। ওঁর হাসিমুখটাই আমাদের কাছে পাওনা।”

ডা. সব্যসাচী দাস জানিয়েছেন, কোভিড আবহের শুরু থেকেই গুরুতর করোনার রোগীদের মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে কলকাতা মেডিক্যাল। করোনার সঙ্গে অন্যান্য অসুখ থাকলে তা ভয়াল আকার নেয়। রাম সিংয়ের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল। আপাতত ঠিক হয়েছে কোভিড নেগেটিভ হলে তাঁর শরীরে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হবে।

[আরও পড়ুন: চলন্ত বাসে ধূমপানের প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত খোদ পুলিশ কনস্টেবল, বীরভূমের ঘটনায় শোরগোল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ