Advertisement
Advertisement

Breaking News

নোট বাতিলের জেরে কাজ বন্ধ সিন্ডিকেট সাম্রাজ্যেও

৬০-৪০ কমিশনে চলছে কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া...

cash crunch hit construction activity in rajarhat
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 17, 2016 12:06 pm
  • Updated:November 17, 2016 12:06 pm

সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজারহাট-গোপালপুর থেকে শুরু করে নিউটাউন৷ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলে আসা এলাকার সিন্ডিকেট চক্রের চাঁইদের দৌরাত্ম্য আটকাতে পুলিশ প্রশাসনের কাজটা এ যেন ম্যাজিকের মতো সহজ করে দিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার৷

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নোট বদলের সিদ্ধান্তের এক ধাক্কায় নিমেষের মধ্যেই ভেঙে পড়ল সিন্ডিকেট সাম্রাজ্য৷ ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরেই গত ছ’দিন ধরে রাজারহাট-গোপালপুর এবং নিউটাউনে বন্ধ হয়ে গেল সিন্ডিকেটের কাজকর্ম৷ এর ফলে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে বহুতল নির্মাণের কাজ৷ সিন্ডিকেটের কাজ ছ’দিন ধরে বন্ধ থাকায় এলাকা জুড়ে এখন শুধুই হাহাকার৷ অধিকাংশ সিন্ডিকেটের অফিসই এখন তালাবন্ধ৷ প্রোমোটার থেকে শুরু করে সিন্ডিকেটের চাঁই–সকলেই এখন ব্যস্ত কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করার কাজে৷ রাজারহাট-গোপালপুর এবং নিউটাউনে প্রতি একলাখ টাকায় ৬০-৪০ কমিশনের ভিত্তিতে কালো টাকা সাদা করার কাজ চলছে গোপনে৷ এই কমিশনের ভিত্তিতে দালালদের মাধ্যমে এতদিনের জমিয়ে রাখা কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করতে ব্যস্ত এলাকার প্রোমোটার এবং সিন্ডিকেট-চক্রের পান্ডারা৷

Advertisement

রাজারহাট-গোপালপুর এবং নিউটাউনে বাম জমানা থেকেই চলে আসছে সিন্ডিকেট সাম্রাজ্যের রমরমা৷ পরবর্তী ক্ষেত্রে এই সিন্ডিকেট সাম্রাজ্যের ‘মুকুটহীন সম্রাট’ হয়ে ওঠে তৃণমূলের যুবনেতা বিশ্বজিত্‍ বিশ্বাস ওরফে বাবাই এবং তারই ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় রায় ওরফে বুড়ো৷ শুধুমাত্র রাজারহাট-গোপালপুরেই প্রায় ২০০টি ছোট-বড় সিন্ডিকেট সংস্থা রয়েছে৷ নিউটাউনে সিন্ডিকেটের সংখ্যা প্রায় শতাধিক৷ এছাড়াও দমদম, নাগেরবাজার এবং লেকটাউন এলাকাতেও প্রায় ১০০টি সিন্ডিকেট রয়েছে৷

Advertisement

রাজারহাট-গোপালপুর এবং নিউটাউনের এই সিন্ডিকেট সাম্রাজ্য চলত বাবাই এবং বুড়োর অঙ্গুলি হেলনে৷ বছরখানেক আগে সুপারি কিলারদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বুড়ো৷ এই খুনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় পরে পুলিশ গ্রেফতার করে বাবাইকে৷ বাবাই এখন দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দি৷ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে বাবাইকে টপকে গিয়েছিল বুড়ো৷ আর সেই কারণেই বুড়োকে খুন করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ এই খুনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন সুপারি কিলারকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল৷ ধৃত সুপারি কিলাররা আদালতে বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিল, সিন্ডিকেট ব্যবসায় নেমে বুড়ো কয়েক বছরে দেড় কোটি টাকার মালিক বনে গিয়েছিল৷ সেই টাকা এখন কোথায়?

এইরকম কোটি কোটি কালো টাকা এখনও জমানো রয়েছে ছোট বড় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাতে৷ আয়কর হানার ভয়ে সেই কালো টাকা বস্তায় পুরে কেউ ফেলে দিচ্ছে, কেউবা জ্বালিয়ে দিচ্ছে৷ কেউবা আবার দালালদের মাধ্যমে ব্যস্ত জমানো কালো টাকা রাতারাতি সাদা করার কাজে৷ কারোর নজর প্রধানমন্ত্রীর জনধন যোজনার দিকে৷ এই ব্যস্ততার ফলে রাজারহাট-গোপালপুর থেকে শুরু করে নিউটাউন, দমদম, লেকটাউন-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় সিন্ডিকেটের কাজ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে৷ টানা ছ’দিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন সিন্ডিকেট ব্যবসার নিম্নবিত্ত সাধারণ শ্রমিকরা৷ কাজ বন্ধে মাথায় হাত বহুতল নির্মাণ করা রাজমিস্ত্রিদেরও৷ কারণ, সিন্ডিকেটের গরিব শ্রমিক এবং রাজমিস্ত্রিদের অধিকাংশেরই কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই৷ তাঁরা মূলত দিন মজুর৷ গত ছ’দিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় কোনও মজুরিই পাননি তাঁরা৷ ফলে তাঁদের পক্ষে এখন সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ