Advertisement
Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বহু বছর বাদে কানে শুনতে পেলেন বৃদ্ধ

‘জয় মুখ্যমন্ত্রী মায়ের জয়৷ জয় ডাক্তারবাবুদের জয়’৷ পিজি হাসপাতালের ইএনটি আউটডোরে দাঁড়িয়ে একটানা চেঁচিয়ে চলেছেন বৃদ্ধ৷

CM helps old Man to get Hearing Aid
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 16, 2016 9:01 am
  • Updated:June 22, 2022 5:15 pm

গৌতম ব্রহ্ম: ‘জয় মুখ্যমন্ত্রী মায়ের জয়৷ জয় ডাক্তারবাবুদের জয়’৷ পিজি হাসপাতালের ইএনটি আউটডোরে দাঁড়িয়ে একটানা চেঁচিয়ে চলেছেন বৃদ্ধ৷ বয়স ৯০৷ হাতে লাঠি৷ পরনে ময়লা ধুতি আর স্যান্ডো গেঞ্জি৷ চোখে হাই পাওয়ারের কালো চশমা৷ চিৎকারের দাপটে কেঁপে উঠছে আউটডোর চত্বর৷ চমকে উঠছেন চিকিৎসক থেকে নার্স৷ গগনভেদী চিৎকার আউটডোর করিডর বেয়ে ঢুকে পড়ছে ‘মিনি ওটি’-তেও৷ কী যন্ত্রণা! বাইরে বেরিয়ে এলেন অনেকেই৷ অডিওমেট্রি টেকনিশিয়ান থেকে চিকিৎসক৷ ছুটে এসেছেন নিরাপত্তারক্ষীরাও৷

কিন্তু কোথায় কী? চিৎকার থামছে না৷ এক নিরাপত্তারক্ষী বৃদ্ধকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতেই এক চিকিৎসক ছুটে এলেন৷ বললেন, “করেন কী, করেন কী৷ উনি ভিভিআইপি৷ ওঁকে কিছু বলবেন না৷ ওঁকে নবান্ন পাঠিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোক৷” শুনেই সবার চক্ষু চড়কগাছ৷ নিরাপত্তারক্ষীর তো ভিরমি খাওয়ার জোগাড়৷ এমন চেহারার লোক ‘ভিভিআইপি’?

Advertisement

ঘড়িতে তখন দুপুর দু’টো৷ ইএনটি বিভাগের প্রধান ডা. অরুণাভ সেনগুপ্তর ঘরের বাইরে তখনও থিকথিক করছে রোগী৷ এমন সময় লাঠি ভর দিয়ে ওই বৃদ্ধকে অরুণাভবাবুর ঘরে পৌঁছ দেন এক স্বাস্থ্যকর্মী৷

Advertisement

জানা যায়, বৃদ্ধের নাম ভাগ্য দাস৷ বাড়ি হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে৷ ভাগ্যবাবু শ্রবণক্ষমতা হারিয়েছেন৷ অনেক হাসপাতাল ঘুরেছেন৷ সবাই কানের মেশিন কিনতে বলেছেন৷ কিন্তু, পয়সা কোথায়? খাবারের পয়সাই জোগাড় হয় না তো কুড়ি হাজারি কানের মেশিন! বিভিন্ন দরজায় ঠোক্কর খেয়ে অবশেষে নবান্নে গিয়ে পৌঁছন৷ কিন্তু, সমস্যা হল, ভাগ্যবাবু কারও কথাই শুনতে পাচ্ছিলেন না৷ সে এক বিষম জ্বালা৷ অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ওই বৃদ্ধকে পিজিতে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয় নবান্ন৷

অবশেষে শাপমুক্তি হল৷ নবান্ন থেকে সুপারিশপত্র নিয়ে আসায় বৃদ্ধ ‘ভিভিআইপি ট্রিটমেণ্ট’-ই পেলেন৷ একজন তাঁকে সঙ্গে নিয়ে টিম্পেনোমেট্রি পরীক্ষা থেকে মাইনর ওটি, সর্বত্র ঘুরলেন৷ অরুণাভবাবুর নির্দেশে ওই বৃদ্ধের কানে বসল মেশিন৷ শুনতে পেলেন বৃদ্ধ৷ বললেন, “মুখ্যমন্ত্রী মায়ের কৃপায় বহু বছর পর শুনতে পেলাম৷ এতদিন কী কী যন্ত্রণা ভোগ করেছি৷ বলে বোঝাতে পারব না৷” বলতে বলতেই স্যান্ডো গেঞ্জিতে ঝোলানো মেশিনটায় হাত বোলালেন৷ চিকচিক করে উঠল চোখ৷ বললেন, “এখান থেকে সোজা কালীঘাট যাব৷ মুখ্যমন্ত্রী মা-কে গিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে আসব৷”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ