রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও অরিজিৎ গুপ্ত: হাওড়ার করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলা হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে। কারণ, করোনার সমস্ত উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও রবিবার থেকে সাধারণ ওয়ার্ডেই রাখা হয়েছিল ওই মহিলাকে প্রকাশ্যে এসেছে এমন তথ্যই। যার ফলে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সুপারের বিরুদ্ধে দায়ত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। তাঁদের অভিযোগ, একাধিকবার সতর্ক করা হলেও হাসপাতালের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংক্রমণের আশঙ্কায় কাঁটা অন্য রোগী ও তাঁদের পরিবার।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি হাওড়া শালকিয়ার বাসিন্দা ওই মহিলা স্বামী, ছেলে, পুত্রবধূ নাতি-সহ মোট ২০ জনের সঙ্গে ডুয়ার্স ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরেন দিন সাতেক আগে। এরপর ২৬ মার্চ জ্বর আসে ওই মহিলার। সঙ্গে সর্দি ও প্রবল শ্বাসকষ্ট ছিল। প্রথমে তাঁকে ভরতি করা হয় জয়সওয়াল হাসপাতালে। সেখান থেকে পাঠানো হয় সত্যবালা আইডিতে। উপসর্গে সন্দেহ হওয়ায় সেখান থেকে ওই মহিলাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বেলেঘাটা আইডিতে না গিয়ে রবিবার মহিলাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন পরিবার। করোনার উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে শুরু হয় চিকিৎসা। অভিযোগ, একাধিকবার নার্সরা নমুনা পরীক্ষার আবেদন করা সত্ত্বেও তাতে কান দেয়নি কর্তৃপক্ষ। পরে সোমবার সকালে নার্স ও চিকিৎসকদের চাপে পড়ে ওই মহিলার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এসএসকেএমে।
[আরও পড়ুন: দুধ নষ্ট বন্ধ করতে মানবিক মুখ্যমন্ত্রী, লকডাউনের মধ্যেই খুলছে মিষ্টির দোকান]
রাতে রিপোর্ট হাতে আসার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। রিপোর্ট মিলতেই জানা যায় করোনা আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন হাসপাতালের নার্সরা। কারণ, সমস্ত উপসর্গ সত্ত্বেও হাসপাতালের নির্দেশে অন্য রোগীদের মতোই ওই মহিলার সুশ্রসা করেছিলেন নার্সরা। অভিযোগ, একাধিকবার স্যানিটাইজার, মাস্ক চেয়েও তা পাননি নার্সরা। স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণের আতঙ্কে তটস্থ তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালের উদাসীনতাই দায়ী গোটা ঘটনার জন্য। প্রসঙ্গত, শুধু হাসপাতালের রোগী, নার্স, চিকিৎসক কিংবা সুপার নন এই মহিলার দ্বারা সংক্রমণ ছড়াতে পারে জেলা প্রশাসনেও, আশঙ্কা এমনই। কারণ, সোমবার একটি ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিতে হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছিলেন জেলার প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। যদিও এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা মুখ খোলেননি।
Highlights
- ওড়ার করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলা হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে।
- কারণ, করোনার সমস্ত উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও রবিবার থেকে সাধারণ ওয়ার্ডেই রাখা হয়েছিল ওই মহিলাকে প্রকাশ্যে এসেছে এমন তথ্যই।
- ইতিমধ্যেই সুপারের বিরুদ্ধে দায়ত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।