রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দলের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কলকাতার সমাবেশ থেকে কংগ্রেসকে বেনজির আক্রমণ সিপিআই নেতাদের। সিপিএমের মতো কংগ্রেস প্রীতি তো দূর, উলটো সুর শোনা গেল সিপিআই নেতাদের গলায়। ইন্ডিয়া জোট প্রসঙ্গে তুলোধোনা করলেন কংগ্রেসকে। সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা থেকে শুরু করে রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্য়োপাধ্যায় সকলেই ইন্ডিয়া জোট ভেস্তে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের মানসিকতাকেই দায়ী করলেন এদিন।
লোকসভা নির্বাচনের পর ইন্ডিয়া জোটের চেয়ারপার্সন কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে একটা মিটিংও ডাকেননি বলে মন্তব্য করে ডি রাজা বলেন, ইন্ডিয়া জোটের দায়িত্ব কংগ্রেসকে নিতে হবে। আর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের দয়ার জন্য নতজানু হয়ে বসে থাকলে চলবে না। কংগ্রেস যুক্তফ্রন্ট বোঝে না। রাজার দল। কংগ্রেসের কারণে ইন্ডিয়া জোট ভেঙে যাচ্ছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’’ দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক পল্লব সেনগুপ্তর কথায়, ‘‘কংগ্রেস নেতাদের অহংকার, অহংবোধের জন্য হারাতে পারলাম না মোদি সরকারকে।’’
এদিন পার্টি ভাগ হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে নাম না করে সিপিএমকেও কটাক্ষ করেছেন সিপিআই নেতারা। দলের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘এখনও কীসের ভেদ? যে কারণে পার্টি ভাগ হয়েছিল সেই কারণ কি আজও বিদ্যমান? কমিউনিস্টদের এক হওয়ার বার্তা দিয়েছেন সিপিআই নেতারা।” স্বপনবাবুর বক্তব্য, “৬০-এর দশকের পশ্চিমবঙ্গের সেই বামপন্থী আন্দোলনকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষ ছাড়া কমিউনিস্টদের শক্তি নেই। মানুষ থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন।’’ পল্লব সেনগুপ্তর কথায়, ‘‘৯০ এর দশক থেকে আমাদের বৈভব, সম্পত্তি বাড়তে শুরু করল। তারপরই একের পর এক ভুল। যার জেরে বাম সহযোগী মানুষজন পশ্চিমবঙ্গে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে।’’
রাজনৈতিক মহলের মতে, কারও নাম না করলেও বাম আমলে সিপিএম নেতাদের বৈভবের কথাই বলতে চেয়েছে সিপিআই নেতৃত্ব। কমিউনিস্টদের শক্তি বাড়াতে ছত্তিশগড়ের মাওবাদীদেরও মূলপথে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে বলে এদিন জানিয়েছেন সিপিআই নেতারা। সিপিআইয়ের বক্তব্য, নকশালদের গ্রেপ্তার করতে পারে, কিন্তু বিজেপি সরকার তাঁদের এনকাউন্টার করতে পারে না। ছত্তিশগড়ে সিপিআইয়ের দুই সাংসদ যাচ্ছেন। সেখান থেকে এসে তারা স্পিকারকে রিপোর্টও দেবে। এদিন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে এককভাবে ডাকা সিপিআইয়ের সমাবেশে পার্টিকে শক্তিশালী করতে দলের কর্মীদের আগামীতে করণীয় কি তা ঠিক করে দেন নেতৃত্ব। মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়, প্রবীর দেব, গৌতম রায়, অশোক রায় প্রমুখ। গণসংগীত পরিবেশন করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন দলের কর্মী সৌমী হালদার। শ্রোতার আসনে থাকলেও ডাকার পরও মঞ্চে আসেননি সিপিআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার। সভা শেষে শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় বাজেটের কপি পোড়ানো হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.