বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: অবশেষে রাজি হলেন। তবে একা নন। পাশে বসতে হল রাজ্য সম্পাদককে। তাতেই পারলেন অনায়াসে। সভাপতিত্বও করলেন। পুরোটাই হল অনলাইনে। পার্টির নিজস্ব অ্যাপ ‘স্বেচ্ছা’য়। আর বৈঠক চলাকালীন সারাক্ষণ নির্দেশ দিলেন, বক্তব্যও রাখলেন। যে দক্ষতায় অনলাইনে সভা পরিচালনা করলেন, তাঁকে আর বৃদ্ধ বলা যাবে না। পরিস্থিতির চাপে আধুনিকতার সঙ্গে নিজেকে পরিবর্তন করে নিয়েছেন বিমান বসু। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের এহেন পরিবর্তনে হতবাক সকলে। খুশিও। করোনা আবহে অনলাইনেই হয়ে গেল সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক। এর আগে পলিটবুরোর বৈঠকও হয়েছিল এভাবে।
ভারচুয়াল মিটিং। সবাই অপেক্ষায় ছিলেন, কখন বিমান বসু বসবেন। তিনি বসলেন এবং করে দেখালেন। অথচ তখনও রূপা বাগচী, পলাশ দাস বা অম্বর মিত্রদের মতো অপেক্ষাকৃত নবীনরা হোঁচট খাচ্ছেন। কারও ভিডিও আছে তো অডিও পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কারও অডিও শোনা যাচ্ছে তো ভিডিও লিংক পাওয়া যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার ছিল সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক অনলাইনে সারতে নিজস্ব অ্যাপও তৈরি করেছে আলিমুদ্দিন। নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বেচ্ছা’। তাতেই মিটল কাজ।
[আরও পড়ুন: মানবিক রাজ্য সরকার, করোনা সংক্রমণ রুখতে পড়ুয়াদের জন্য নয়া ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর]
‘টেকনিক্যাল’ বিষয়টি কমিটি সদস্যদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পার্টির আইটি সেলের সদস্যরা। বেঁধে দেওয়া সময়েই শুরু হয় বৈঠক। প্রথমেই সভাপতির ভাষণ দেন বিমানবাবু। একে একে সব জেলাকেই রিপোর্ট করতে বলা হয়। লকডাউন পরিস্থিতিতে কোন জেলা কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তাব আসে, আর প্রতীকী আন্দোলন নয়। এবার জোর কদমে নামতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আরও বেশি মানুষের জমায়েত করতে হবে।
ঠিক হয়, আগামী ১৬ তারিখ কলকাতার রানি রাসমণিতে বড় জমায়েত করার। মূলত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে এই আন্দোলন হবে। করোনা আবহে জনস্বাস্থ্য আন্দোলনকে কীভাবে আরও জোরদার করা যায়, তা নিয়েও সভায় আলোচনা হয় বলে আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: অন্য উপসর্গ থাকলেও ডেথ সার্টিফিকেটে করোনার উল্লেখ রাখতে হবে, মত চিকিৎসকদের]
এদিনের আলোচনায় পার্টি কর্মীদের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি উঠে আসে। অভিযোগ ওঠে প্রবীণদের পাশাপাশি পার্টির অনেক যুব কর্মী করোনার ভয়ে বাড়িতে দরজা বন্ধ করে বসেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য।