স্টাফ রিপোর্টার: ভাগাড়ের মরা পশুর মাংস হোটেলে পাচার চক্রের তল খুঁজতে এবার কোলে মার্কেট ও বৈঠকখানা বাজারে হানা দিলেন পুরকর্মীরা। শুক্রবার শিয়ালদহ চত্বরে বিভিন্ন হোটেলে অভিযান চালিয়েছিল পুরসভা। এবার তাদের সন্দিগ্ধ নজর কোলে মার্কেট ও বৈঠকখানা বাজারের খাবারের দোকানগুলিতে। মুরগি, খাসি বা পর্কের মাংস বলে হোটেলগুলি কুকুর-বিড়াল বা মেঠো ইঁদুরের মাংস খাওয়াচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতে এই ঘিঞ্জি এলাকায় অভিযান শুরু করেছেন পুরকর্মীরা।
বজবজের ভাগাড় থেকে পশুর পচা লাশ পাচার করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দু’জন হাতেনাতে ধরা পড়ে। ধৃতরা পুলিশের কাছে কবুল করেছে, পচা মাংসের বেশ কিছুটা ‘সাপ্লাই’ করা হয় শিয়ালদহ চত্বরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁয়। এর পরই নড়েচড়ে বসে পুরসভা। শুক্রবার থেকেই জোরকদমে অভিযান শুরু করে কলকাতা পুরসভা। নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ না থাকলেও এদিন শিয়ালদহ এলাকার বিভিন্ন হোটেল থেকে নমূনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেন পুরকর্মীরা। শুক্রবার শিয়ালদহ চত্বরে পুরকর্মীরা হানা দেওয়ার আগেই মাংসের পাইকারি ও খুচরো দোকানগুলি ঝাঁপ ফেলে দেয়। রান্না করা মাংস থেকে ফ্রিজে রাখা কাঁচা মাংস, বাদ দেননি তদন্তকারীরা। সমস্ত নমুনা পুরসভার ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ভাগাড়ের মাংস-কাণ্ডে জড়িত বজবজ পুরসভার কর্মী রাজু মল্লিক ও ট্যাক্সিচালক মিশেল শ্যামলালকে শুক্রবার তোলা হয় আলিপুর জেলা আদালতে। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের হুকুম হয়েছে। তাদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ভাগাড় ফেরত পচা পশুর মাংস ‘প্রসেস’ করে তারা মূলত দক্ষিণ শহরতলি ও শিয়ালদহ এলাকার বিভিন্ন রেস্তরাঁ ও ফুড স্টলে সরবরাহ করত। তাজা মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে তা তুলে দেওয়া হত খদ্দেরের পাতে। তাই হোটেলের সমস্ত পদগুলি থেকেই নমুনা সংগ্রহ করছেন পুরকর্মীরা। তা মাংসের ঝোলই হোক বা মটন রোল, মটন চাউমিনের মতো ফাস্টফুড।
কোলে মার্কেট ও বৈঠকখানা বাজারে বহু খাবারের দোকান রয়েছে। পুরসভার অশঙ্কা সস্তার এই খাবারের দোকানগুলি অতিরিক্ত লাভের জন্য এই ভাগাড়ের মাংস রান্নায় ব্যবহার করতে পারে। তাই সমস্ত খাবারের দোকান থেকে নমূনা সংগ্রহের কাজ চালাচ্ছেন পুরকর্মীরা। কীভাবে হত এই ভাগাড়ের মরা মাংস পাচার? তদন্তে নেমে বজবজ থানার পুলিশ জেনেছে, রাজু ও মিশেল শ্যামলাল ছাড়াও চক্রে যুক্ত রয়েছে বেশ কয়েকজন। নিতাই খাঁড়া নামে একজনকে আটক করে জেরা চলছে। জনৈক ‘সানি’র নামও উঠে আসছে। পুলিশের অনুমান, ১০-১২ জনের একটা দল এই কারবারে জড়িত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.