Advertisement
Advertisement

আর জি করের প্রবীণ ডাক্তারের পচাগলা দেহ উদ্ধার

স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় পাঁচ মাস আগে দমদম শেঠবাগানে একটি বাড়ি ভাড়া নেন গৌতমবাবু৷

decomposed body of a 54 year-old RG Kar Medical College professor was found inside his rented apartment
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 24, 2016 10:34 am
  • Updated:January 10, 2020 7:15 pm

স্টাফ রিপোর্টার: গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এসে বিজয়া সেরে গিয়েছিলেন৷ তারপর থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না চিকিৎসকের৷ শনিবার ‘আউটডোর’ থাকলেও আসেননি৷ রবিবার সেই সরকারি চিকিৎসকের পচাগলা দেহ মিলল বন্ধ ঘরে৷

মৃত চিকিৎসকের নাম গৌতম পাল (৫৭)৷ কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের একটি ইউনিটের প্রধান৷ রবিবার সকালে দমদম শেঠবাগানের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে গৌতমবাবুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গৌতমবাবুর শরীরে আঘাতের চিহ ছিল৷ দোতলার যে ঘর থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে সেখানে মেঝেয় রক্তের দাগ রয়েছে৷ গলাতেও ছিল আঘাতের চিহ৷ সবমিলিয়ে সরকারি চিকিৎসকের মৃত্যু ঘিরে ঘনীভূত হয়েছে রহস্য৷ পুলিশ অবশ্য তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে খুনের কোনও চিহ্ন পায়নি৷ মেলেনি আত্মহত্যার ইঙ্গিতও৷ তাদের অনুমান, হার্ট অ্যাটাক হয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই চিকিৎসকের৷ যেহেতু বাড়িতে একাই থাকতেন তাই ‘অ্যাটাক’ হওয়ার পর কাউকে কিছু বলার সুযোগ পাননি চিকিৎসক৷ চিকিৎসকের পরিবারও থানায় এই মৃত্যু নিয়ে কোনও অভিযোগ জানায়নি৷

Advertisement

যদিও গৌতমবাবুর সহকর্মী ও প্রতিবেশীরা এই মৃত্যুকে সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না৷ তাঁরা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন৷ তাঁদের প্রশ্ন, শনিবার রাতে হাসপাতাল থেকে গৌতমবাবুর পরিবারকে ফোন করা হয়৷ কেন তিনি দু’দিন ধরে হাসপাতালে আসছেন না তা জানতে চাওয়া হয়৷ সবটা শুনে পরিবারের লোকজন তেমন উদ্বেগ প্রকাশ করেননি৷ হয়তো আর কিছুদিন এভাবেই নিখোঁজ থাকতেন ওই চিকিৎসক৷ প্রতিবেশীদের তৎপরতায় তা অবশ্য হয়নি৷ বন্ধ ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় প্রতিবেশীরা কাউন্সিলর মুনমুন চট্টোপাধ্যায়কে খবর দেন৷ কাউন্সিলর খবর দেন বাড়িওয়ালা ও পুলিশে৷ বেলা দশটা নাগাদ পুলিশ এসে দরজা ভেঙে গৌতমবাবুর পচাগলা দেহ উদ্ধার করে৷ দেহটি ফুলে গিয়েছিল৷ এত দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল যে ৫০ ফুটে দূরে দাঁড়িয়েও নাকে রুমাল চাপা দিতে হচ্ছিল৷ প্রতিবেশীদের বক্তব্য, শনিবার রাত থেকেই গন্ধ ছড়াচ্ছিল৷ রবিবার সকাল তা তীব্র আকার নেয়৷

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় পাঁচ মাস আগে দমদম শেঠবাগানে একটি বাড়ি ভাড়া নেন গৌতমবাবু৷ একাই থাকতেন৷ স্ত্রী-কন্যা থাকতেন অন্যত্র৷ শেঠবাগান সংলগ্ন সুপারিবাগান এলাকায় জমি কিনে একটি বাড়ি তৈরি করছিলেন৷ সম্ভবত তার তদারকির জন্যই শেঠবাগানে বাড়ি নিয়ে থাকছিলেন গৌতমবাবু৷ জানা গিয়েছে, গৌতমবাবুর স্ত্রীও চিকিৎসক৷ বি আর সিং হাসপাতালে কর্মরত৷ প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পাড়ার কারও সঙ্গেই কথা বলতেন না গৌতমবাবু৷ সকাল আটটায় বাড়ি থেকে বেরোতেন৷ রাত আটটা নাগাদ ফিরতেন৷ খাবার আসত ‘হোম ডেলিভারি’ থেকে৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গৌতমবাবুকে শেষ এই দমদম শেঠবাগানেই দেখা যায়৷ ওইদিনই শেষবারের মতো হাসপাতালে গিয়েছিলেন গৌতমবাবু৷ অধ্যক্ষ ডা. শুদ্ধোদন বটব্যাল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ডা. পাল বিজয়া করতে এসেছিলেন৷ অস্বাভাবিক কিছুই চোখে পড়েনি৷ তবে শুক্রবার ও শনিবার আসেননি৷ শনিবার আউটডোর থাকায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়৷ রাতে হাসপাতালের তরফে গৌতমবাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়৷ কিন্তু তাঁরাও কিছু জানাতে পারেননি হাসপাতালকে৷ পরিবারের তরফে পুলিশকেও কিছু জানানো হয়নি বলেই খবর৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ