ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: অচেনা নম্বর দেখলে চট করে ফোন না ধরার ‘রোগ’। শেষে পরিষদীয় মন্ত্রীর ফোনও না ধরায় কড়া ধমক খেতে হল নবনির্বাচিত বিধায়ককে। শুক্রবার বিধানসভায় (Assembly) পা রেখে ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন ধূপগুড়ির নির্মলচন্দ্র রায়। তাঁকে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করতে পারেননি পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chatterjee)। বিধায়ককে সামনে পেতেই তাঁর সটান প্রশ্ন – ”৫ বার ফোন করলাম। তুমি পরিষদীয় মন্ত্রীর ফোন ধরছ না!” নির্মলচন্দ্র রায় অবশ্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নেন। কথা দেন, এমন ভুল আর কখনও হবে না।
অনেক জটিলতা কাটিয়ে শনিবার রাজভবনে (Rahbhaban) ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথ অনুষ্ঠান পাকা হয়েছে। তার জন্য তিনি দলের নির্দেশ মেনে শুক্রবার কলকাতায় চলে এসেছেন নির্মলচন্দ্র রায়। কিন্তু শহরে একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য যানজটের মুখে পড়েন। শেষে অ্যাপ ক্যাব বুক করে দমদম বিমানবন্দর থেকে এমএলএ হস্টেলে পৌঁছন নির্মলচন্দ্র রায়। যার জেরে তাঁর সমস্ত কর্মসূচি পিছিয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ তিনি পৌঁছন বিধানসভায়, পরিষদীয় দলের বৈঠকে। আর সেখানে ঢুকেই পরিষদীয় মন্ত্রীর ধমক খেতে হল তাঁকে।
নির্মলবাবুর দেরি দেখে তাঁকে ফোন করেছিলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। একাধিকবার যোগাযোগ করেন। কিন্তু রিং বেজে যায়, ফোন ধরেননি ধূপগুড়ির বিধায়ক। বিধায়ক যখন বিধানসভা পৌঁছন সেই সময় অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে ছিলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং উপমুখ্য সচেতক তাপস রায়। আর নতুন বিধায়ককে অভ্যর্থনা জানাবেন বলে নিজের ঘরে ছিলেন মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। ধুপগুড়ির বিধায়ক ঢুকেই নির্মল ঘোষের ঘরে চলে যান। বিধায়ক পৌঁছেছেন, খবর পেয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ্য সচেতকের ঘরে পৌঁছন পরিষদীয় মন্ত্রীও। সেখান থেকেই বিধায়ককে একপ্রকার ধমক দিয়ে ডেকে নিয়ে যান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বলেন, “কী ? তুমি কোথায় থাক? কখন থেকে অপেক্ষা করছি। ৫ বার ফোন করলাম! তুমি পরিষদীয় মন্ত্রীর ফোন ধরছ না!”
ভর্ৎসনা শুনে নির্মলচন্দ্র রায় জানান, তিনি যানজটে (Traffic Jam)আটকে পড়েছিলেন। তাই দেরি হল বিধানসভায় পৌঁছতে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। শোভনদেববাবু ফের তাঁকে ফোন কেন ধরেননি, সেই কৈফিয়ত চান। তাতে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেন ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত বিধায়ক। জানান, এমন ভুল আর কখনও হবে না।
উল্লেখ্য, নির্মলচন্দ্র রায় সম্পর্কে স্থানীয় এলাকায় ধারণা এমনটাই যে অচেনা নম্বর দেখলে তিনি ফোন ধরেন না। তিনি যেহেতু অধ্যাপক, তাই ক্লাস নেওয়ার সময় ফোনে তাঁকে স্বাভাবিকভাবে পাওয়া যায় না। কিন্তু এখন তো তিনি জনপ্রতিনিধিও। অহরহ সাধারণ মানুষের ফোন আসতেই পারে তাঁর কাছে। তা না ধরলে কাজ করা দুষ্কর হয়ে উঠতে পারে। সেকথা তাঁকে বুঝিয়েছেন সিনিয়ররা। তিনিও কথা দিয়েছেন, ফোন না ধরার ‘রোগ’ দ্রুত সারিয়ে ফেলবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.