রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দিল্লির মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চাই। রাজ্য সভাপতির এহেন মন্তব্যে শনিবার শোরগোল পড়ে যায় বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। রাজনৈতিক মহলেও দিনভর চর্চা হয় দিলীপ ঘোষের এমন সুর নরমে। ২৪ ঘণ্টা পরেই ঢোক গিললেন দিলীপ। রবিবার ভোলবদলে তাঁর নয়া সুর শোনা গেল। এদিন তিনি বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। স্বপ্ন দেখতে আপত্তি নেই। কিন্তু যতদিন মোদি প্রধানমন্ত্রী আছেন। ততদিন কারও চান্স নেই।’ দিলীপের বক্তব্য, ‘আমি সৌজন্যের রাজনীতি পছন্দ করি। ওনাকে শুধু শুভেচ্ছা জানিয়েছি। এর বেশি কিছু নয়। তৃণমূলের তো এ রাজ্যের বাইরে সিট পাওয়ার সম্ভাবনাই নেই। তাহলে কেন্দ্রে যাবে কী করে?’ বললেন দিলীপ। গতকাল তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এদিকে, সূত্রের খবর, গতকাল দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ভালভাবে নেয়নি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শীর্ষ নেতৃত্বের চাপেই দিলীপ সুর বদলে পালটি খেলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে শনিবার তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে মমতার নাম। বাঙালিদের মধ্যে যদি কেউ প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে মমতারই সম্ভাবনা রয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্য নিয়ে গতকাল থেকেই শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি দলের অভ্যন্তরেও শুরু হয়ে যায় গুঞ্জন। এরপরই রবিবার দিলীপ ঘোষ ‘সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন’-কে ফোনে বলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন দেখার কথাই বলতে চেয়েছি। অর্থাৎ গতকাল তিনি যা বলেছেন তা মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেই।’
[বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হলে হবেন মমতাই! কেন এমন বললেন দিলীপ ঘোষ?]
তবে যতই এদিন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করুন না কেন, দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে যায় বঙ্গ বিজেপি। যাঁর মুখ থেকে ইদানীং সবচেয়ে বেশি মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারবিরোধী মন্তব্য শোনা যায়, তিনিই কিনা মমতা-স্তুতি করছেন! বিষয়টা অনেকেরই হজম হয়নি। এমনিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান সমালোচক হিসেবেই পরিচিত দিলীপ ঘোষ। এতদিন পর্যন্ত মমতার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাকে অলীক কল্পনা বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। দিলীপবাবু শনিবার যে মার্জিত ভাষায় মমতা সম্পর্কে বক্তব্য রেখেছেন তা সত্যিই বিরল। তবে এদিন ধোঁয়াশা উড়িয়ে দিলীপবাবু বলেন, গতকাল তিনি যা বলেছেন তা মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেই। সেক্ষেত্রে ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, যদি কটাক্ষই করতে হয় তাহলে অন্য কোনও মন্তব্য করতে পারতেন। সরাসরি মমতা-স্তুতি করে এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার প্রয়োজন কী!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.