Advertisement
Advertisement
Britain

অস্ত্রোপচারের সময় ওটিতেই ঘুম! ফাঁস ‘সুবিধাবাদী’ রজতশুভ্রর ব্রিটেনের কুকীর্তি

'কলঙ্কিত' চিকিৎসক পেশাগত জীবনে ব্রিটেনে একের পর এক গাফিলতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছিলেন।

Dr. Rajatsubhara Banerjee allegedly done wrong in Britain
Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 22, 2025 10:50 am
  • Updated:June 22, 2025 10:50 am  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: অক্সফোর্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণে বাধা দিয়ে অসভ্যতার পর এবার কলকাতায়। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজ্যে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের একদা বামপন্থী ডাক্তার রজতশুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ, কীর্তিও ক্রমশ সামনে আসছে। এই ‘কলঙ্কিত’ চিকিৎসক পেশাগত জীবনে ব্রিটেনে একের পর এক গাফিলতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছিলেন। যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল সে দেশের নামী সংবাদপত্র ‘ডেইলি মেল’-এ। সে জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল।

Advertisement

রজতশুভ্র নিজে দাবি করছেন, তিনি ব্রিটেনের নাগরিক। সে ক্ষেত্রে তিনি এ দেশে এসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। কোনও রাজনৈতিক কথাও বলতে পারেন না। ডিগ্রি সংক্রান্ত ধোঁয়াশা নিয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল তাঁকে ইতিমধ্যেই নোটিস পাঠিয়েছে। তার পরেই তিনি বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। যা নিয়ে শুক্রবার সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে বিজেপির প্রশ্রয়ে রজতশুভ্র রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলেই। মেডিক্যাল কাউন্সিলের নোটিসেরও জবাব দেননি তিনি। তাই তাঁকে দ্বিতীয় নোটিস পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হছে বলে সূত্রের খবর।

‘ডেইলি মেল’-এর ২০১৩ সালের ২১ মার্চের প্রতিবেদনে এই বাম-রাম রজতশুভ্রর মুখোশ খুলে পড়েছে। লন্ডনের বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, রজতশুভ্রর বিরুদ্ধে একাধিকবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। অভিযোগ, ২০০৯ সালের ২২ মে এক মহিলার গুরুত্বপূর্ণ সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের আগে তাঁর স্পাইনাল কর্ডে অ্যানাস্থেশিয়ার ইঞ্জেকশন দিয়ে তিনি অন্য ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। মহিলার তখন অপারেশন টেবিলে অস্ত্রোপচার চলছিল। রয়‍্যাল বোল্টন হাসপাতালে তাঁর ১৪ বছরের কর্মজীবনে এমন ঘটনা দেখেননি বলে সাক্ষ্যে জানান ক্যারোলিন ফিঞ্চ নামে এক নার্স। মুদিত চোখ, হাত জড়ো করে রাখা, চিবুক ঝুলে পড়েছে, পা ছড়ানো। রজতশুভ্রকে এই অবস্থায় দেখে দেখে তাঁর এক সহকর্মীকেও ডেকে আনেন মহিলা। শুধু তাই নয়, রোগিণীর রক্তচাপ কমে গেলে রজতশুভ্রকে ডেকে আনা হয় পরবর্তী ডোজের ওষুধ দেওয়ার জন্য। সেই ওষুধ দিয়েই ফের চলে যান রজতশুভ্র। যা নিয়ে ক্যারোলিন ফিঞ্চ সাক্ষ্যে আরও বলেন, “নার্স হিসাবে কাজ করার সময় আমি কখনও দেখিনি যে, একজন অ্যানেস্থেটিস্ট একজন মহিলাকে চিকিৎসার টেবিলে এতটা সময় একা রেখেছেন যতটা সময় ডাঃ ব্যানার্জি দিয়েছেন।” যদিও চিকিৎসকদের ট্রাইব্যুনাল সার্ভিসে রজতবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ওই বছরের ১৬ মে অন্য একটি ক্ষেত্রেও শরীর খারাপের অজুহাতে তিনি অ্যানাস্থেশিয়ার ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুমোতে চলে যান বলে অভিযোগ। এছাড়াও ২০০৬ সালে স্টাডি লিভ নিয়েও একাধিক কোর্সে তিনি হাজির হননি বলে দাবি করে তাঁর তৎকালীন কর্মক্ষেত্র সেন্ট হেলেনের হুইস্টন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২০০৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ইঞ্জেকশন দেওয়ার ক্ষেত্রে কখনও পর্যাপ্ত সতর্কতা গ্রহণ না করার এবং নানা সময় রোগীদের অ্যাটেন্ড না করার অভিযোগ উঠেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে আর অভিযোগ না ওঠায় তাঁকে সতর্ক করে ছেড়ে দেয় তদন্ত কমিটি।

এই পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন ধরে রজতশুভ্রর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “অক্সফোর্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেদিনের সভায় প্রশ্নোত্তরের অবকাশ ছিল। কিন্তু অপেক্ষা না করে এই রজতশুভ্রর মতো জনা ছয়েক লোক প্রথম থেকে সভা ভন্ডুল করার চেষ্টা করেন। প্রশ্ন তোলা আর বিশৃঙ্খলা তৈরি এক জিনিস নয়। এরা সব বাম-বিজেপির ভাড়াটে গুন্ডা। ওই চিকিৎসক বিজেপির দালাল। তাঁর বিরুদ্ধে ব্রিটেনেই অনেক অভিযোগ আছে। ওঁর বিরুদ্ধে রোগীর পরিবারের অভিযোগ আছে। গুরুত্বপূর্ণ সার্জারি করার সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ব্রিটিশ পাসপোর্ট হোল্ডার বলছেন নিজেকে। ওসিআই কার্ড নিয়ে এসে এখানে রাজনৈতিক কথা বললে নিয়ম অনুযায়ী ঘাড় ধরে বার করে দিতে হবে। উনি বিজেপি-সিপিএমের দালাল। কলকাতার রাস্তায় এই ডাক্তারকে যেখানে দেখবেন সেখানেই জিজ্ঞাসা করবেন, কেন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় অসভ্যতা করেছিলেন। এঁকে সামাজিক বয়কট করুন।” তাঁর কথায়, এই চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা উচিত। কিন্তু বাংলায় গণতন্ত্র আছে বলেই সেটা করা হয়নি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement