কৃষ্ণকুমার দাস: লকডাউনের জেরে হাহাকার বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে। ওষুধ, গুড়ো দুধ, নুডলস-সহ আকাল দেখা দিয়েছে বেবিফুডেও। শুধুমাত্র ওষুধ, ডিম, মাছ, মাংসই নয় সকলেরই প্রিয় নানা ধরনের নুডলসও পাওয়া যাচ্ছে না। ম্যাগি বা ওয়াই—ওয়াই, ইয়ামির মতো ‘চটজলদি নুডলস’ উধাও দোকান থেকে।
একেই কাটছে গৃহবন্দি দশা। করোনার জেরে স্কুল কলেজ ছুটি পড়েছে সবার আগে। বাতিল হয়েছে সমস্ত পরীক্ষা।বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে টিউশনে গিয়েও দেখা হওয়া তো দূরঅস্ত, পাড়ার মাঠে বেরোনোর নাম নিলেই রেগে অগ্নিশর্মা হচ্ছেন সকলে। শুধু একটাই কথা বাড়ির বাইরে নয়। এমতাবস্থায় পছন্দের ‘চটজলদি নুডলস’ বাজার থেকে উধাও হওয়ায় অনেকেরই জীবনটা বৃথা হতে চলেছে রোজের ‘হেলদি খাবারের’ ঠেলায়।পাড়ার মুদি দোকান থেকে স্পেন্সার ও বিগবাজারের মতো ডিপার্মেন্টাল স্টোরে গিয়েও এই সমস্ত খাবারের দেখা পাচ্ছেন না। সবারই এক কথা জোগান নেই। ওষুধের দোকানে যে সমস্ত বেবিফুড পাওয়া যায় সেগুলিও উধাও। ইকবালপুরের নামী ফার্মেসি শোরুম থেকে ওয়েলিংটনের মেডিসিন শপ, সর্বত্রই বেবিফুডের প্রবল হাহাকার। সবারই একই অভিযোগ,”ডিলাররা ঘরে তালা দিয়ে গোডাউন বন্ধ করে রেখেছেন। সাতদিন ধরে নতুন করে তাই বেবিফুডের সাপ্লাই নেই।” পোস্তাবাজার থেকে কলকাতার সমস্ত নামী ডিলাররা বলছেন, ভিন রাজ্য থেকে লরি করে যে বেবিফুডের জোগান আসে তা এখন বন্ধ। তাই দোকানে খুচরো দিতে পারছি না। তবে শনিবার ডানকুনিতে আটকে থাকা প্রায় এক লক্ষ প্যাকেট নুডলসের লরি কলকাতায় পাঠাতে হুগলির পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
[আরও পড়ুন:করোনার জেরে মন্দার মুখে ফুড ডেলিভারি অ্যাপ, ঘরের খাবারেই মন সকলের]
শিশুমঙ্গল হাসপাতালের ফার্মেসিতে এদিন দুপুরে গিয়ে দেখা যায় ডায়াবেটিকস রোগীদের ইনসুলিন কার্টিজ নেই। একই চিত্র শহরের অধিকাংশ নামী ওষুধের দোকানে। প্রেসার, সুগার থেকে শুরু করে হার্টের একাধিক জীবনদায়ী ওষুধ নেই বলে অনেক দোকানে পোস্টার দিয়েছেন বিক্রেতারা। আবার নিউমার্কেট ব্লু প্রিন্টের মতো নামী দোকান শুধুমাত্র দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা রাখছে। অন্যদিকে লকডাউনের প্রেক্ষাপটে যে সমস্ত ওষুধের দোকান ২০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বিক্রি করতেন তা এখন আর সুবিধা দিচ্ছেন না। জেলার দিকে অনেক বিক্রেতা আবার জীবনদায়ী ওষুধ বেশি দাম নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ। তবে ওষুধ বিক্রেতাদের অভিযোগ,”দোকানে দোকানে সাপ্লাই দেওয়ার ছেলেরা বাড়িতে আটকে গিয়েছেন, তাই ডিলাররা অর্ডার নিলেও ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার লোক নেই। তাই ওষুধ নেই পাড়ার দোকানে।” লরি বন্ধ থাকায় অনেক নামী ওষুধ সংস্থার ভিন রাজ্য থেকে এখনও বাংলায় সাপ্তাহিক জোগান পাঠাননি।
[আরও পড়ুন:হুগলির বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার উদ্যোগ, অনুমোদন চেয়ে জেলাশাসককে চিঠি]
উদ্বিগ্ন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এদিন জানিয়েছেন,”থানায় গেলেই পুলিশ ওষুধ বিক্রেতাদের অনুমতিপত্র দেবে। এই চিঠি নিয়ে ওষুধের ডিলার বা বিক্রেতা, সবাই রাজ্যের যে কোনও প্রান্তে যেতে পারবেন।” ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এদিন জানান,”শহরের প্রবীণ ও গরিব অসহায় মানুষ পুরসভাকে জানালে ওষুধ পৌছে দেওয়া শুরু হয়েছে।”