শুভঙ্কর বসু: জনগণের মনের বার্তা লুকানো থাকবে তার অন্দরে। উথাল পাথাল নির্বাচনপর্বে যবনিকা টেনে ক্লাইম্যাক্স সামনে আনবে সে’ই। তারই রায়ে ঠিক হয়ে যাবে, মসনদে বসবে কে। এহেন অতি গুরুত্বপূর্ণ সেই ভোটযন্ত্র বা ইভিএমের সুরক্ষা নিয়ে কোনও আপস নয়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাই সিংহভাগ ভোটকেন্দ্রে নয়া প্রজন্মের ‘মার্ক থ্রি’ বা ‘এম থ্রি’ ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি ইভিএমের যাত্রাপথে রাখা হচ্ছে জিপিএস নজরদারিও।
[লোকসভা নির্বাচনের সূচি ঘোষণা আজই! কমিশনের সাংবাদিক বৈঠক ঘিরে জল্পনা]
কমিশনের দাবি, নয়া ‘এম থ্রি’ ইভিএমে কোনওভাবেই কারসাজি সম্ভব নয়। ইভিএমের কোনও একটি স্ক্রুতে হাত দেওয়া মাত্র মেশিন কাজ করা বন্ধ করে দেবে। এছাড়াও ইভিএমে সাধারণত দু’টি অংশ থাকে, কন্ট্রোল প্যানেল ও ভোটিং ইউনিট। মেশিনে দু’টি অংশ একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। অভিযোগ ছিল, ইভিএমের কন্ট্রোল প্যানেল বদলে কারসাজি সম্ভব। কিন্তু ‘এম থ্রি’ ইভিএমে কন্ট্রোল প্যানেল ও ভোটিং ইউনিটে থাকবে একটি ডিজিটাল সিগনেচার। সিইও অফিসের এক আধিকারিকের কথায়, “এই ধরনের ইভিএমে কন্ট্রোল প্যানেল থেকে ভোটিং ইউনিট আলাদা করার চেষ্টা করলেই মেশিন কাজ করা বন্ধ করে দেবে। একটি ডিজিটাল সিগনেচারের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিট যুক্ত থাকবে। অন্য কোনও কন্ট্রোল প্যানেল ইউনিটে যুক্ত করতে গেলে প্রয়োজন পড়বে ইউনিক ডিজিটাল সিগনেচার।” এখানেই শেষ নয়, কোনও ইভিএম সমস্যা করলে সেই মেশিনই বলে দেবে সমস্যাটা ঠিক কোথায়। ফলে চটজলদি তা সারিয়ে ফেলা যাবে।
[সেনার পরাক্রমকে ঢাল করে ভোট প্রচার নয়, নির্দেশিকা নির্বাচন কমিশনের]
ভোটে এহেন আধুনিক ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তের পরও সুরক্ষায় ন্যূনতম ফাঁক রাখতে চায় না কমিশন। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আন্তঃরাজ্য ও ভিন রাজ্যের মধ্যে ইভিএম আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে জিপিএস। যে গাড়িতে ইভিএম পাঠানো হবে তাতে জিপিএস বসিয়ে সুরক্ষিত করতে হবে। যার সুবাদে মোবাইল অ্যাপের এক ক্লিকে নিমেষে জানা যাবে যেকোনও ইভিএমের অবস্থান। প্রতিটি জেলায় সেজন্য তৈরি করতে হবে ইভিএম কন্ট্রোল রুম। সিইও অফিসের ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, “কমিশনের নির্দেশ মতো এরাজ্যেও ইভিএম স্থানান্তরের ক্ষেত্রে গাড়িগুলিতে জিপিএস ইনস্টলেশনের কাজ শেষ। ইভিএম স্থানান্তরের দায়িত্বে থাকবেন সেক্টর অফিসার।” এছাড়াও এবার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে স্ট্রং রুম খোলা ও বন্ধের কাজ করা হবে। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি হবে। স্ক্রু বদলের চেষ্টা হলেই বন্ধ হয়ে যাবে ইভিএম।