দীপালি সেন: নিহত স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর চিঠিতে উল্লেখিত ‘রুদ্রদা’কে নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় ছাত্রমহলে। কে তিনি? কীভাবে তিনি এই মৃত্যুর ঘটনায় জড়ালেন? এসব প্রশ্ন ঘনিয়ে উঠেছে। তবে চিঠিটি যে ছেলের লেখা নয়, তা স্পষ্ট জানিয়েছেন যাদবপুরের নিহত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু। তিনি সাফ জানান, চিঠিটি ভুয়ো (Fake), ছেলের হাতের লেখাই নয় ওই চিঠি। চিঠিতে উল্লেখিত ‘বিভাগীয় সিনিয়র’-এরও একই বক্তব্য। তাঁর আরও দাবি, আসল দোষীদের আড়াল করতে তাঁর নাম লেখা একটি চিঠি সামনে আনা হয়েছে।
স্বপ্নদীপের লেখা একটি চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে বিভাগীয় সিনিয়র ‘রুদ্রদা’র নাম। চিঠিটি ১০ আগস্ট লেখা। ৯ তারিখ রাতে মৃত্যু হয় বাংলা বিভাগের ছাত্র স্বপ্নদীপের। যাদবপুরের (Jadavpur University) বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের (MA) প্রথম বর্ষের পড়ুয়া রুদ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্পষ্ট অভিযোগ, ঘটনাক্রম থেকে মোড় ঘোরাতেই এই চিঠি ভাইরাল (Viral)করা হচ্ছে। যার সত্যতা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। রুদ্রর কথায়, “ওর বাবা নিজে এই চিঠি নাকচ করেছেন। আমার মনে হয়, তিনজন ধরা পড়েছে ইতিমধ্যেই। আরও যারা মাথা রয়েছে, তারা যাতে ধরা না পড়ে, তাই তদন্তের মোড় ঘোরানোর জন্যই মনে হয় এই চিঠি। আর পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে, চিঠিটা ১০ তারিখ দিয়ে লেখা। স্বপ্নদীপের বাবাও এই চিঠিকে নাকচ, প্রত্যাখ্যান করেছে যে এই চিঠি আমার ছেলের লেখা নয়। এটা ভুয়ো চিঠি, সবাই বুঝতে পারছে।” এই মৃত্যুর তদন্তে যে কোনওরকম সহযোগিতা করতে রাজি বলেও জানিয়েছেন রুদ্র।
ডায়েরিতে লেখা চিঠি নিয়ে প্রসঙ্গে স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু বলেন, “এটা ভুয়ো। ওরা নিজেরা লিখেছে। ও এভাবে ‘S’ লেখে না। স্বাক্ষরটাও ওর নয় বোধহয়। একদম ৯০ শতাংশ নিশ্চিত হয়তো ওর মতো করে কেউ লিখতে পারে এটা। হাজার শতাংশ দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এই চিঠি ওর হাতের লেখা না। সইটা নকল বলে মনে হচ্ছে। ওর সইটা অন্যরকম। কাল রাতে ওর খাতাপত্র, যেখানে ও নিজের নাম লিখেছিল সেগুলো তদন্তকারী অফিসারদের দিয়েছি। পুলিশের তরফে এই চিঠি আমাকে দেখানো হয়েছিল। পুলিশ ওর বিভিন্ন খাতাপত্র যথেষ্ট সময় নিয়ে দেখেছে। ওর লেখা, সই দেখেছে। খাতার তো বেশিরভাগই পড়াশোনার নোট লেখা। সেখানে সই করা থাকলে পুলিশ নিয়েছে। দু’টো খাতা বাজেয়াপ্ত করেছে।”
এদিকে, রবিবার ক্যাম্পাসে সাংবাদিক বৈঠক করে এসএফআই (SFI)। রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে দোষীদের খুঁজে বের করার লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র নেতৃত্ব। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে দায়ী করেছেন তাঁরা। ঘটনার এতদিন পরও ক্যাম্পাসে তিনি আসেননি বলে অভিযোগে সরব হন এসএফআই নেতা, নেত্রীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.