Advertisement
Advertisement
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

‘ফিরে আসুন বুদ্ধবাবু’, সাতাত্তরেও বামপন্থীদের হৃদয়ে অমলিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

৭৭তম জন্মদিনে নির্লিপ্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

Former Chief Minister Buddhadeb Bhattacharjee turns 77 today
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:March 1, 2020 7:40 pm
  • Updated:March 1, 2020 7:50 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষবার দলীয় কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছিল গতবছর ফেব্রুয়ারি মাসে। ভগ্ন শরীর নিয়েই কোনওক্রমে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড পর্যন্ত এসেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, খারাপ সময়ে যদি একবার মঞ্চে গিয়ে দলীয় কর্মীদের পাশে থাকার বার্তাটা দেওয়া যায়। নাহ, শেষপর্যন্ত পারেননি। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্রিগেডের মঞ্চে না উঠেই ফিরতে হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে(Buddhadeb Bhattacharjee)। কিন্তু, বুদ্ধবাবু ওই যে ১২ মিনিট ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ছিলেন, তাতেই হয়তো বহু বামপন্থী কর্মী হারানো আত্মবিশ্বাসের অনেকটা ফিরে পেয়েছেন। আসলে, আজও অনেক বামপন্থী বিশ্বাস করেন, সাদা চুলের ওই ভদ্রলোক যদি একবার সুস্থ হয়ে মাঠে নামেন তাহলে হয়তো ভোটের হিসেবে ৭ শতাংশে নেমে যাওয়া বামেরা আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

BUDDHADEB-BHATTACHARYA
সক্রিয় রাজনীতি থেকে অনেক দিন আগেই বিদায় নিয়েছেন বুদ্ধবাবু। ২০১১ সালে যাদবপুর কেন্দ্রে হারার পর থেকেই সেভাবে দলের সক্রিয় কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাঁকে। আসলে বুদ্ধবাবুর ফুসফুসের সমস্যা বহুদিনের। সিওপিডি-র সমস্যার জন্য বিমানে উঠতে পারেন না। সেভাবে দলের মিটিং-মিছিল গুলিতেও যেতে পারতেন না ভগ্ন স্বাস্থ্যের জন্য। সে প্রায় বছর আষ্টেক সরাসরি দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে বাংলা থেকে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বামেরা। কিন্তু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জনপ্রিয়তা কি আদৌ কমেছে? হয়তো না। সেজন্যই তো ২০২০-তে এসেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই কলকাতা বইমেলায় ‘বেস্ট সেলার’ তকমা পায়। আজও সোশ্যাল মিডিয়ায় বামপন্থীদের দেখা যায় বুদ্ধবাবুকে নিয়ে পোস্ট করতে। রাজ্য যখনই কোনও ‘অনাচার’, ‘অনিয়ম’ হয়েছে, তখনই বামপন্থীরা তাঁর উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ‘কই বুদ্ধবাবুর আমলে তো এমনটা হতো না।’ আজ যখন গোটা দেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তির আবহ, বাংলার বুকেও যখন সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনা চোখে পড়ছে, তখনও সেই বুদ্ধকেই আদর্শ করে বামপন্থীরা বলেন, “এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজন যিনি বলতে পারেন, দাঙ্গা করতে এলে মেরে মাথা ভেঙে দেব।”

Advertisement

buddha_web
রবিবার সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্মদিন। ৭৭ বছরে পা দিলেন বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী। বামপন্থীদের গণ্ডি পেরিয়ে যিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে। কিন্তু, জন্মদিনে সেভাবে আলাদা কোনও উৎসব বা উদযাপন কোনওটাই হল না। যথারীতি আজও নির্লিপ্ত তিনি। সকাল থেকে অনেকেই ফোন করেছেন খোঁজ নিতে। নিজে ফোন ধরেননি। তাঁর স্ত্রী কথা বলেছেন। দলের তরফেও শুভেচ্ছা বার্তা এসেছে। সকালেই তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন মহম্মদ সেলিম (Md. Salim) আর বিমান বসু। তাঁরাই শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে এসেছেন। ব্যাস ওইটুকুই। অসংখ্য অনুগামী শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। সেগুলো হয়তো পড়াও হয়নি। আসলে, বামপন্থী তো। জন্মদিন বলে আলাদা উৎসব তো থাকার কথা নয়! তাছাড়া, শরীরও তো আর দিচ্ছে না। পাম অ্যাভিনিউয়ের ওই ছোট্ট ফ্ল্যাটবাড়িটুকুতেই এখন পাঁচজন চিকিৎসকের নিত্য আনাগোণা। চাইলেও আর বুদ্ধবাবু অনুগামীদের শুভেচ্ছাবার্তা গ্রহণ করতে পারছেন না। চাইলেও, আর তাঁর পক্ষে সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরা সম্ভব নয়। তবু, বাংলার ৭ শতাংশ বামপন্থী আজ ভরসা করেন ওই পক্ককেশ ভদ্রলোককেই। তাঁদের কাতর আর্তি, ‘ফিরে আসুন বুদ্ধবাবু’।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ