Advertisement
Advertisement

Breaking News

Alipore Jail Museum

আলিপুর জেল মিউজিয়ামে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামে খাবারের মেনু! বিতর্ক তুঙ্গে, ক্ষুব্ধ বিদ্বজ্জনেরা

ক্যাফেটেরিয়ার মেনুর নাম 'স্বাধীনতা'।

Freedom fighters name in Food Menu of Alipore Jail Museum sparks row | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:November 8, 2022 9:25 pm
  • Updated:November 11, 2022 5:25 pm

বিশ্বদীপ দে ও পারমিতা পাল: ১৯৪৭ টু ২০২২, স্বাধীনতার পর কেটে গিয়েছে ৭৫ বছর। ১৫ আগস্ট ধুমধাম করে দেশজুড়ে পালিত হয়েছে হীরক জয়ন্তী, ‘আজাদি কি অমৃত মহোৎসব’। কিন্তু কষ্ট করে অর্জিত সেই স্বাধীনতার প্রতি আমাদের কি আন্তরিক শ্রদ্ধা রয়েছে? আমরা কি মন থেকে আজও সম্মান করি দেশের জন্য যাঁরা অক্লেশে প্রাণ দিয়েছিলেন, সেই শহিদদের? খাস কলকাতার সাম্প্রতিক এক কাণ্ডে সেই প্রশ্নই যে উঠতে শুরু করেছে।

স্বাধীনতা সংগ্রামী, শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আলিপুর সংশোধনাগারে তৈরি হয়েছে জেল মিউজিয়াম। ইতিহাসের পাতায় অমর সংগ্রামীদের রক্তে লেখা ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে সেখানে। কিন্তু গোল বেঁধেছে সেই মিউজিয়ামের অংশ হিসেবে গড়ে ওঠে ক্যাফেটেরিয়ার মেনু ঘিরে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বাধীনতা’। শুধু মেনুর নাম নয়, একাধিক খাবারের নাম রাখা হয়েছে বিভিন্ন আন্দোলন কিংবা স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম অনুযায়ী। কোনও প্ল্যাটারের নাম বিবাদী (বিনয়-বাদল-দীনেশ) তো কোনওটার আবার নাম সিপাহি বিদ্রোহ। একটি প্ল্যাটারের নাম রাখা হয়েছে সাঁওতাল বিদ্রোহ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: চলতি সপ্তাহেই মহাকাশে পাড়ি বেসরকারি সংস্থায় তৈরি প্রথম ভারতীয় রকেটের ]

আর এই নামকরণেই বিপত্তি। ক্যাফে কর্তৃপক্ষের উপর চটে লাল নেটিজেনরা। তাঁদের অভিযোগ, বিদেশিদের দাসত্ব থেকে আগামীর ভারতবর্ষকে মুক্ত করতে যারা ক্রমাগত লড়াই চালিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের এভাবে খাবারের প্লেটে নামিয়ে আনা আদৌ শোভনীয় নয়। কেউ কেউ একে অপসংস্কৃতি বলেও কটাক্ষ করছেন। বিষয়টি নিয়ে আলিপুর জেল মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

তবে খাবারে প্লেটে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামের বিষয়টিকে একেবারেই ভালভাবে দেখছেন না সমাজের বিশিষ্টজনেরা। সংবাদ প্রতিদিন ডট ইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় ইতিহাসবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির সঙ্গে। বিষয়টি শুনে তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া, “ব্যাপারটা ভাল হচ্ছে না। যেসব বিপ্লবী, যাদের আমরা অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখি, যাঁরা স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের নামে খাবার কিংবা খাবারের উপাদানের নামকরণ করা, এটা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। ব্যাপারটা মানতে পারছি না। এটা ঠিক নয়।” তাঁর কথায়, খাবারের নাম বদল হওয়াই উচিত।

[আরও পড়ুন: অনলাইন রেশন তুলতে গিয়ে লিঙ্ক সমস্যায় জেরবার আমজনতা, কেন্দ্রের দ্বারস্থ রেশন ডিলাররা]

শুধু তিনি নন, একই মত সাহিত্যিক বিনোদ ঘোষালেরও। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিনোদবাবু বলেন, “ইংরেজরা এই নাম রাখলে ঠিক থাকত, কারণ ওরা তো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের খেয়ে বসেছিল। কিন্তু স্বাধীন ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামে খাবারের নাম মেনে নেওয়া যায় না। এর চেয়ে নির্বুদ্ধিতা, হাস্যকর, দুঃখজনক ঘটনা আর হয় না। এমন উদাসীনতা সত্যিই মানা যায় না। আমার খুব অসহায় লাগছে এটা ভেবে যে, বাঙালি আজ নিজের গালে নিজে থাপ্পড় মারছে।”

 

তবে এই বিষয়টিতে বিস্ময়ের কিছু দেখছেন না কার্টুনিস্ট সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “স্বাধীনতার ৭৫ বছরে চারদিকে যা হচ্ছে, তাতে এই ঘটনা অবাক করছে না আমাকে। চারদিকে তো এমনই ঘটনার ছড়াছড়ি। এটা সেই তালিকায় নতুন সংযোজন মাত্র।”

বিশিষ্টদের মতোই আমজনতাও মেনে নিতে পারছেন না এহেন নামকরণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে এমন নামকরণ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে যা আদৌ কাম্য ছিল না বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। অবিলম্বে এই ধরনের নামকরণের পরিবর্তনের দাবি উঠছে। এখন দেখার, কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে মুখ খোলেন কি না।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ