ছবি প্রতীকী
অর্ণব আইচ: আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও।
জেলে মাদক আর মোবাইল পাচার বন্ধ করতে এবার এই স্ট্র্যাটেজিই নিয়েছে কারা দপ্তর। জেলের ভিতর প্রবেশ করার আগে তল্লাশির মুখে দাঁড়াচ্ছেন উচ্চপদস্থ কারাকর্তারাও। তাঁদের দেখে তল্লাশির সময় আপত্তি করছেন না কোনও কারা আধিকারিকই। এক কারাকর্তা জানান, আগে শুধু কারারক্ষীদের তল্লাশি বা পরীক্ষা করে জেলের ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হত। এবার থেকে পদস্থ আধিকারিকদেরও তল্লাশি শুরু হয়েছে। জেলের ভিতর মাদক, মোবাইলের মতো বেআইনি বস্তু ঢোকা রুখতে নেওয়া হয়েছে এই ব্যবস্থা।
কিছুদিন আগে আলিপুর জেলের ডাক্তার অমিতাভ চৌধুরি প্রচুর গাঁজা, মোবাইল, চার্জার, মদ ও হিটারের কয়েল নিয়ে জেলের ভিতর ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েন। এর আগে কখনও তাঁকে তল্লাশি করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, সেই সুযোগে এর আগেও বেশ কয়েকবার জেলের ভিতর তিনি নিষিদ্ধ বস্তু নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করার পর বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কারাকর্তাদের মতে, এর আগে জেলের কোনও পদস্থ কর্তা বা চিকিৎসককে পরীক্ষা বা তল্লাশি করে ভিতরে প্রবেশ করার বিষয়টি ভাবাই হয়নি। কারণ, তাঁরা প্রত্যেকেই দায়িত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এর আগে মাদক বা মোবাইলের মতো নিষিদ্ধ বস্তু পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন কারারক্ষী পদমর্যাদার কর্মী। তাই বেশ কয়েক বছর ধরেই কারারক্ষীদের প্রত্যেককেই জেলের ভিতর ঢোকার আগে পরীক্ষা করা হয়।
কিন্তু কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক জেলের ভিতর মোবাইল বা মাদক পাচার করতে পারেন, তা কখনও ভাবা হয়নি। পদকে সম্মান দিতে তাঁদের তল্লাশি বা পরীক্ষাও কখনও করা হত না। কিন্তু চিকিৎসক গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুরো হিসাবটাই পালটে গিয়েছে। কারা দপ্তরের কর্তারাও আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন। প্রত্যেকটি জেলের কর্তাকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভিতরে প্রবেশের আগে যেন পদস্থ আধিকারিকদেরও পরীক্ষা করা হয়। এমনকী, বাদ দেওয়া হবে না জেলের সুপারদেরও। বরং জেলের সুপার ও ডেপুটি সুপাররা যেন নিজেরাই তল্লাশির সামনে দাঁড়ান। তাঁদের দেখে যেন অন্য কোনও কারা আধিকারিকও তল্লাশির সময় আপত্তি না করেন।
এদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ও ধৃত চিকিৎসক অমিতাভ চৌধুরির চক্রের সদস্য জেলের বন্দি বক্রেশ্বর মোদক ওরফে বক্কর ও তার স্ত্রী নমিতাকে গ্রেপ্তার করে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। বক্রেশ্বর কোন কোন বন্দির হাতে মাদক, মোবাইলগুলি তুলে দিত, তা পুলিশ জানতে পেরেছে। জানা গিয়েছে, তার স্ত্রী নমিতা এই জিনিসগুলি দিত চিকিৎসককে। নমিতাকে জেরা করে আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনের হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তারাই এই জিনিসগুলি নমিতার হাতে তুলে দিত। চক্রের ওই সদস্যদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.