সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতি মানেই আদর্শগত দ্বন্দ্বের লড়াই৷ তবে ভারতের রাজনীতি সবকিছুর ঊর্ধ্বে৷ এখানে আদর্শগত দ্বন্দ্বকে ছাপিয়ে যায় ব্যক্তিগত আক্রমণ৷ চলে প্রযুক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নিয়ে কাদা ছোঁড়াছুড়ির পর্ব৷ কোনও একটি নয়, দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলই এমনটা করে থাকে৷ দলের সদস্য সমর্থকদের সোশ্যাল মিডিয়ায় লেলিয়ে দেওয়া হয় প্রতিপক্ষের পিছনে৷ রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে কুণ্ঠাবোধ করেন না কেউই৷ তাতে নীতি জলাঞ্জলি গেলে যাক৷
[পুলিশকে হুমকি দিয়ে বন্ধে অশান্তির দায় তৃণমূলের ঘাড়ে চাপালেন কৈলাস]
তেমনটা হল এবারও৷ ঋণখেলাপিতে অভিযুক্ত গুজরাটের ব্যবসায়ী নীতীন সনদেসারার সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া হল রাজ্য বিজেপি নেতা রীতেশ তেওয়ারির ছবিকে৷ রাজনাথ সিং ও অমিত শাহের সঙ্গে রীতেশ তিওয়ারির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, জালিয়াতিতে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগ রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির৷ সুকৌশলে এই কাজ করা হয়েছে, কংগ্রেস সমর্থিত ফেসবুক পেজ ‘With INC’-র পক্ষ থেকে৷ এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়া বিভিন্ন গ্রুপে গ্রুপে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ রাজনাথ সিং ও অমিত শাহর সঙ্গে রীতেশ তেওয়ারির ছবিটি দিয়ে ‘With INC’ ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ”৫৭০০ কোটি টাকা জালিয়াতি করে নাইজেরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীর বন্ধু কে? সেই কারণেই কি সংবাদ মাধ্যম চুপ?” ইতিমধ্যে বাইশ হাজার শেয়ার হয়েছে পোস্টটি, কমেন্ট পড়েছে দু’শোর বেশি৷ জানা গিয়েছে, ছবিটি ২০১৬-র পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের সময়কার৷ কলকাতার চৌরঙ্গি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র প্রার্থী ছিলেন রীতেশ তিওয়ারি৷ তাঁরই সমর্থনে প্রচারে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি৷ সেই ছবি দিয়েই ভ্রান্ত প্রচার চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ উনিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস সমর্থিত এই পেজটির কীর্তিকলাপ বুমেরাং হয়েছে রাহুল শিবিরের পক্ষে৷ এমন ভ্রান্ত প্রচারের নিন্দায় সরব হয়েছে রাজনৈতিক মহল৷
[একজনকে ডেকে তাঁকেই নিয়োগ, যাদবপুরে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদ নিয়ে বিতর্ক]
উল্লেখ্য, পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপির অভিযোগ উঠেছে গুজরাটের ব্যবসায়ী নীতীন সনদেসারা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গুজরাটের ভদোদারার স্টারলিং বায়োটেক নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে ৫ হাজার কোটির জালিয়াতি করার অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সনদেসারা ইতিমধ্যেই ইডি এবং সিবিআইয়ের ওয়ান্টেডের তালিকায় রয়েছেন। সিবিআইয়ের তরফে স্টারলিং বায়োটেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে, ওই সংস্থার ডিরেক্টর নীতীন সনদেসারা, চেতন সনদেসারা, দীপ্তিবেন সনদেসারা, রাজভূষণ ওমপ্রকাশ দীক্ষিত, বিলাস যোশী, হেমন্ত হাতি এবং অনুপ গার্গের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে গার্গকে গ্রেপ্তার করা গিয়েছে। কিন্তু মূল তিন অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। এই সংস্থাটি মোট ৩০০টি শাখা এবং বেনামি সংস্থা খুলে মোট ৫ হাজার টাকার প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ। কোম্পানির বার্ষিক হিসেবেও ইচ্ছেমতো গড়মিল করা হয়েছে।