Advertisement
Advertisement

Breaking News

লকআপে আড্ডায় মজে দুই ‘দুষ্টু স্যর’, ধিক্কার শহর জুড়ে

ঘৃণ্য অপরাধ করেও নির্বিকার, এতটুকু আত্মগ্লানি নেই।

GD Birla Row: Acuused teacers found busy in chat with jail inmates
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 3, 2017 3:07 am
  • Updated:September 21, 2019 1:52 pm

সুপ্রিয় বন্দে্যাপাধ্যায়: নিজেদের ‘অপকর্ম’-র জন্য মানসিকভাবে কোনওরকম আত্মগ্লানি তো নেইই, বরং শনিবার আলিপুর আদালতের পুলিশ লকআপে টানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা নিজেদের মধ্যে হাসি-ঠাট্টায় খোশগল্পে মেতে উঠল ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগে ধৃত বিতর্কিত জিডি মেমোরিয়াল স্কুলের দুই শিক্ষক। শুধু তাই নয়, এরই পাশাপাশি এদিন তারা ওই পাঁচ ঘণ্টা চুটিয়ে আড্ডা দিল পুলিশ লকআপে থাকা অন্যান্য আসামিদের সঙ্গেও।

৪ হোক বা ৪০, নারীশরীর কোনওভাবেই শুধু যৌনতার সামগ্রী নয় ]

Advertisement

শনিবার দুপুর ২.১০ মিনিট। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ধৃত শিক্ষক অভিষেক রায় এবং মহম্মদ মফিজুদ্দিনকে যাদবপুর থানা থেকে নিয়ে আসা হল আলিপুর আদালতে। এদিন ছুটির দিন থাকায় এই মামলার শুনানি ধার্য হল আলিপুরের বিশেষ আদালতে। তার আগে ধৃত দুই শিক্ষককে রাখা হল আদালতের পুলিশ লকআপে। তার আগেই বিক্ষোভের আশঙ্কায় আদালত চত্বর মুড়ে ফেলা হয়েছিল পুলিশি নিরাপত্তায়। বিকেল সাড়ে তিনটের পর বিশেষ আদালতের বিচারক দেবাশিস বর্মনের এজলাসে মামলার শুনানি শুরু হলেও ধৃত দুই শিক্ষককে কাঠগড়ায় হাজির করা হয়নি। তাদের রাখা হয়েছিল পুলিশ লকআপেই। এখানে থাকাকালীন তারা মজে উঠল জমজমাট আড্ডায়।

Advertisement

[ এবার এম পি বিড়লা স্কুল, দিনের পর দিন যৌন নির্যাতন দুধের শিশুকে ]

বিচারক দেবাশিস বর্মনের এজলাসে শুরু হয় এই মামলার জমজমাট সওয়াল। দুই শিক্ষকের জামিনের বিরোধিতা করে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল জানান, “চার বছরের একটি ছোট্ট ফুটফুটে শিশুর উপর যে পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাই অভিযুক্তদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হোক।”  শুনানির শুরুতেই আদালতে জমা দেওয়া পুলিশের এফআইআর কপি নিয়ে এজলাসে বিতর্কের তুমুল ঝড় ওঠে। পকসো আইন অনুযায়ী, এই মামলা হওয়া উচিত জজ কোর্টে। কিন্তু ছুটির দিন বলে এই কোর্ট বন্ধ থাকায় মামলাটি ওঠে বিশেষ আদালতে। সেই কারণে পুলিশ এফআইআর-এর মূল কপি এই আদালতে জমা দেয়নি। তা না দেওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ করে ওঠেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। দু’পক্ষের মধ্যে চলে তুমুল বাদানুবাদ। এরফলে শুনানির কাজ থমকে যায়। শেষ পর্যন্ত বিচারকের নির্দেশে এফআইআর-এর জেরক্স কপি সার্টিফায়েড করেন যাদবপুর থানার ওসি। এরপর শুরু হয় শুনানি।

[ প্রিন্সিপালের প্রশ্রয়ে অপরাধীদের বাড়বাড়ন্ত, স্কুল বন্ধের হুঁশিয়ারি ]

সওয়ালে আসামিপক্ষের আইনজীবী তীর্থঙ্কর রায় জানান, “ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬ ধারায় আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু আমার মক্কেল স্কুলের শিক্ষক, কর্মী নন। এছাড়াও ঘটনার পুনর্গঠন এবং আরও জেরা করার জন্য তাদের নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েছে পুলিশ। এটা কী করে সম্ভব? জেরা তো জেলে গিয়েও করা যায়।” উত্তরে সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল জানান, “এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না বা এই ঘটনার কথা আর কেউ জানতো কি না তার জন্য ধৃতদের আরও জেরার প্রয়োজন। এছাড়া তাদের জেরা করে জানতে হবে, তারা আর কোনও ছাত্রীর সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল কি না। সেই কারণে তাদের ১৪ দিনের পুলিশের হেফাজতে রাখা হোক।”

মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় শহিদ কন্যাকে পুলিশি হেনস্তা, ভাইরাল ভিডিও ]

দু’পক্ষের সওয়ালের পর রায়দান বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখেন বিচারক। এই সওয়ালে উপস্থিত ছিলেন পক্সো মামলার আইনজীবী মাধবী ঘোষও। এরপর সন্ধ্যায় ধৃত দুই শিক্ষককে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। অর্থাৎ,  সোমবার তাদের ফের হাজির করা হবে জজ কোর্টে।

ছবি: আশুতোষ পাত্র। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ