Advertisement
Advertisement

‘গ্রিন করিডর’ তৈরি করে চার মিনিটে ছাত্রীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিল পুলিশ

শ্যামবাজারের মোড়ে দাঁড়িয়ে হাপুস নয়নে কাঁদছিল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

Green corridor for HS candidate
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:February 28, 2019 9:39 pm
  • Updated:March 1, 2019 1:11 pm

অর্ণব আইচ: পরীক্ষা শুরু হতে তখন মাত্র মিনিট পাঁচেক বাকি। শ্যামবাজারের মোড়ে দাঁড়িয়ে হাপুস নয়নে কাঁদছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তা দেখেও এড়িয়ে চলে যাচ্ছিলেন পথচারীরা। বিষয়টি চোখে পড়েছিল উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর থানার অতিরিক্ত ওসি সুব্রত দাসের। তিনি এগিয়ে যেতে মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতেই শুধু বলেছিল, “কাকু, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বোধহয় এই বছর আর দেওয়া হল না। অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।” মিনিট খানেক সময় নিয়েছিলেন ওই পুলিশ আধিকারিক। ট্রাফিক পুলিশের সাহায্য নিয়ে শ্যামবাজার থেকে শিয়ালদহ ‘গ্রিন করিডর’ তৈরি করে চার মিনিটে পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রীকে পৌঁছে দিলেন ‘পুলিশকাকু’। বৃহস্পতিবার সকালে যখন ‘পুলিশকাকু’ তাকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছলেন, তখন সবে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

[উচ্চমাধ্যমিকের নিয়ম বদল, পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য মিলবে অতিরিক্ত সময়]

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে,  ওই ছাত্রীটি বড়বাজার এলাকার মাহেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার বাড়িও ওই এলাকায়। এই স্কুলের ছাত্রীদের সিট পড়েছিল শিয়ালদহের ভিক্টোরিয়া কলেজে। সকাল দশটা থেকে পরীক্ষা শুরু। সকালে উঠে পড়াশোনা সারতেই দেরি হয়ে যায় তার। পরিকল্পনা করেছিল, শ্যামবাজারের মোড়ে এসে বাস ধরে পৌঁছবে পরীক্ষা কেন্দ্রে। কিন্তু সকাল থেকেই বৃষ্টি। বাড়ি থেকে বের হতেই গোড়ালি ডোবা জল। গাড়ি পাওয়া যাচ্ছিল না। জল পেরিয়ে এসে যখন সে গাড়ি পেল, তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। ঘড়ির কাঁটা ঘুরে চলেছে। ঘনঘন ঘড়ি দেখে ছাত্রী। কিন্তু বৃষ্টিতে আর গাড়িও যেন নড়ছিল না। কয়েকটি রাস্তায় যানজটও ছিল। এত কিছুর পর যখন সে শ্যামবাজারের পাঁচমাথা মোড়ে এসে পৌঁছল, তখন দশটা বাজতে আর মিনিট দশেক বাকি।  মেট্রো করে সরাসরি পৌঁছনোর উপায় নেই শিয়ালদহের ওই পরীক্ষাকেন্দ্রটিতে।বাস ধরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর চেষ্টা করবে কি? অনেকটা হতাশ হয়েই শ্যামবাজারের পাঁচমাথা মোড়ে দাঁড়িয়েই হাপুস নয়নে কাঁদতে শুরু করে ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

Advertisement

এদিকে ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদছে, তখনই  শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে আসেন শ্যামপুকুর থানার অতিরিক্ত ওসি সুব্রত দাস। মেয়েটির কাছ থেকে গোটার ঘটনার শোনার পর আর দেরি করেননি তিনি। কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্টকে বলেন, এখনই পুরো বিষয়টি লালবাজারের ট্রাফিক কন্ট্রোলরুমকে জানাতে। তিনি ছাত্রীটিকে নিয়ে রওনা হবেন। হাতে আর মাত্র মিনিট চারেক সময়। ‘গ্রিন করিডর’ না তৈরি করলে ছাত্রীটি পরীক্ষা দিতে পারবে না। ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতায় তখনই শ্যামবাজার থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ‘গ্রিন করিডর’ তৈরি করা হয়। ‘গ্রিন করিডর’ দিয়ে শ্যামপুকুর থেকে শিয়ালদহ চার মিনিটে পৌঁছয় পুলিশের গাড়ি। কাঁটায় কাঁটায় তখন সকাল দশটা। গাড়িটি এসে দাঁড়ায় ভিক্টোরিয়া কলেজের সামনে। পুলিশ অফিসারের সহযোগিতায় পরীক্ষার হলে ঢোকে সে। ছাত্রীটি নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দিয়েছে বলে জানা  গিয়েছে। 

[ সাত লক্ষ টাকার জাল নোট-সহ এসটিএফের জালে ২]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ