৪ আশ্বিন  ১৪৩০  শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

নেতাজি এবং গুমনামি বাবার হাতের লেখা একই! বিতর্ক উসকে জানালেন বিখ্যাত মার্কিন বিশেষজ্ঞ

Published by: Subhajit Mandal |    Posted: October 23, 2022 9:11 am|    Updated: October 23, 2022 1:48 pm

Hand writting of Netaji and Gumnami Baba is same, says Document Examiner Curt Baggett | Sangbad Pratidin

সন্দীপ চক্রবর্তী: নেতাজি ও গুমনামি বাবার দু’টি চিঠি আলাদাভাবে দেখে একই ব‌্যক্তির বলে প্রাথমিকভাবে সম্মতি জানালেন বিশ্বের অন‌্যতম সেরা হাতের লেখা বিশেষজ্ঞ কার্ট ব‌্যাগেট। আর এটাও বুঝিয়ে দিলেন, পার্কিনসন রোগে জটিলভাবে না ভুগলে মৃত্যু পর্যন্ত কোনও ব‌্যক্তির হাতের লেখার ধরন বদলায় না। সেই প্রেক্ষিতেই নেতাজি ও ফৈজাবাদের সাধু ভগবানজি অর্থাৎ গুমনামি বাবা একই ব‌্যক্তি কি না, রহস‌্যভেদে নতুন মাত্রা পেল। ব‌্যাগেট ‘বোস’ (Bose) অন্তর্ধান রহস‌্য উদঘাটনে অশক্ত শরীরেও দরকারে আদালত ডাকলে আসা বা যতদূর সম্ভব সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। উপস্থিত থেকে দিতে চান সাক্ষ‌্য।

Hand writting of Netaji and Gumnami Baba is same, says Expert Document Examiner Curt Baggett

Hand writting of Netaji and Gumnami Baba is same, says Expert Document Examiner Curt Baggett

কার্ট ব‌্যাগেট (Curt Baggett) থাকেন আমেরিকার রিচার্ডসন টেক্সাসে। ক’দিন আগে তাঁর কাছে আমেরিকারই ওহিও নিবাসী প্রবাসী বাঙালি ইঞ্জিনিয়র স্বরাজ চক্রবর্তী যান। নিয়ে গিয়েছিলেন ১৯৩৪ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhash Chandra Bose) লেখা একটি চিঠি ও ১৯৬২ সালে বিপ্লবী পবিত্রমোহন রায়কে গুমনামি বাবার লেখা অন‌্য একটি চিঠি। উদ্দেশ‌্য ছিল, আমেরিকার এফবিআই (FBI) বিভিন্ন কাজে যার শরণাপন্ন হয়, সেই ব‌্যাগেটের কাছে দুই চিঠি একই ব‌্যক্তির কি না যাচাই করা। কার্ট বারবার ‘বোস’-এর জাতীয়তাবোধের উল্লেখ করেছেন। নেতাজিকে উনি ‘বোস’ বলেই সম্বোধন করেছেন। বস্তুত একঝলক দেখেই দু’টি হাতের লেখা যে এক, সে বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন কার্ট। স্বরাজবাবু জানালেন, ‘‘উনি কয়েকটা লেখার টান দেখালেন। ১৯৩৪ ও ১৯৬২ সালের দুই চিঠির একইরকম টান সেটাও বোঝালেন। এটাও বললেন, প্রচণ্ড পার্কিনসনস রোগ না হলে বয়সের সঙ্গে হাত কাঁপা হলেও লেখা একই থেকে যায়।’’ উনি আশ্বাস দিয়েছেন, নেতাজির (Netaji) রহস‌্য উদঘাটনে সবরকম সাহায‌্য করবেন তিনি। এজন‌্য আদালতে সাক্ষ‌্য দিতেও আপত্তি নেই তাঁর। স্বরাজবাবু জানালেন, ‘‘উনি সুভাষচন্দ্রের কথা উল্লেখ করে বললেন, এক মহান ব‌্যক্তিত্ব। আর একটু থেমে, যদি শারীরিক সাক্ষ‌্য দিতে হয়, দেব। কিন্তু বয়স তো বাড়ছে। (If I have to give physical testimony. I will. But I am getting old.)।’’ তবে এক্ষেত্রে বয়স কতটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।

[আরও পড়ুন: গুমনামি বাবার DNA রিপোর্ট দিতে কেন নারাজ কেন্দ্র? আরটিআইয়ের জবাবে বিতর্ক]

স্বরাজবাবুর সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাইপোও। দু’জনকেই একটি বাক‌্য লিখতে বলেছিলেন। বলে দিয়েছেন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট‌্য। কার্টের পরিচয় শুধুমাত্র আমেরিকার দরবারেই সীমাবদ্ধ নেই। আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ অ‌্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস ও আমেরিকান ব্যুরো অফ ডকুমেন্ট এগজামিনার্সেও তিনি প্রশংসিত। সারা বিশ্বের অন‌্যতম সেরা হাতের লেখা বিশেষজ্ঞ হিসাবে তাঁর পরিচয়। আমেরিকা সরকার বিভিন্ন জটিল সমস‌্যার সমাধানে তাঁর সাহায‌্য নিয়েছে আগেও। উল্লেখ‌্য, ‘মিশন নেতাজি’র পক্ষেও চন্দ্রচূড় ঘোষ-অনুজ ধররাও কার্টের মতামতের উপর নির্ভর করেছিলেন। তাঁরাও কার্টকে জানতেই দেননি দু’টি চিঠির লেখক কে? কার্ট কিন্তু ৪৮ পাতার গবেষণায় জানিয়েছিলেন, দুই ব‌্যক্তিই একজন। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের পাশাপাশি মানসিক চরিত্রও জানিয়েছিলেন। চিঠির লেখকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট‌্য, জীবনপথ সবটাই উঠে এসেছিল। এবং আশ্চর্য‌জনকভাবে তার নেতাজির জীবনের সঙ্গে প্রায় পুরোটাই মিল। কয়েক বছর পর কার্ট-সহ আমেরিকার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অংশ সেই স্বীকৃতিতেই বস্তুত সিলমোহর দিল।

[আরও পড়ুন: বাংলা, বিহার ভেঙে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল! ‘বিজেপির চক্রান্ত ব্যর্থ হবেই’, দাবি সুখেন্দুশেখরের]

একটা বিষয় উল্লেখ করতে হয়, স্বরাজবাবু যাদবপুর বিশ্ববিদ‌্যালয় থেকে ১৯৭১ সালে কেমিক‌্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে আটের দশকে চলে যান আমেরিকায়। তখনও গুমানমি বাবার দেহরক্ষার ১৪ বছর বাকি। মার্কিন প্রবাসী কৃতী বাঙালি শিকড় ভোলেননি, ভুলতে চানও না। আর রয়েছে অন‌্য বাঙালির মতোই নেতাজির জন‌্য আবেগ। সেই আবেগে ভর করে ওহিও থেকে ছুটে গিয়েছিলেন টেক্সাসে। স্বরাজবাবুও এই ‘গ্রাফোলজি’ সম্পর্কে বিশ্বাস করতেন না।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে