সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধরা যাক, চারদিক শান্ত। কোথাও কোনও দুর্যোগের আবছায়াটুকু নেই। এক ফুল থেকে মধুর নির্যাস নিয়ে ডানা ঝাপটে একটি প্রজাপতি হাওয়ায় ভাসমান হল। কতটুকুই বা সেই ঝাপটানির তোড়? কিন্তু, ওইটুকু প্রজাপতির ডানা ঝাপটানি হাওয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এমন যে, তা কোনও ঝড়ের দিকে ধাবমান হয়। ‘বাটারফ্লাই এফেক্ট’। ভারতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব খানিক সেরকমই। ঔপনিবেশিকতার কোপে গোঙানির ভিতর, দূর মহাদেশের দাউদাউ আগুনের আঁচ মাঝেমধ্যেই কখন কখন এসে পড়ছে, সরাসরি খুঁজে সামলাতে বেগ পেতে হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সেই আগুন হাওয়ায় হাওয়ায় এসেও পড়েছিল অবিভক্ত বঙ্গে।
[নিত্যযাত্রীদের জন্য সুখবর, দুর্ঘটনা এড়াতে কলকাতা মেট্রোতে নতুন রেক]
দুর্ভিক্ষ, অকস্মাৎ সাইরেন, পাখির মতো ইতস্তত যুদ্ধজাহাজের ভেসে যাওয়া, কলকাতায় ঘাপটি মেরে থাকা গুপ্তচর, আজাদ হিন্দ ফৌজ, সঙ্গে ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন’-এর গমগম জাঁদরেল চিহ্ন রেখে গিয়েছে। কারণ, অদূরে জাপান, ‘মিত্র শক্তি’-র কাছে কলকাতা তখন এশীয় আঁতাতের কেন্দ্রবিন্দু। আজও শহরের আনাচেকানাচে সেসব দাগের স্মৃতিরেখা মেলে, বৃদ্ধ মানুষ মাথা চুলকোলেই সেসব দিনের বোমা বিস্ফোরণের ধোঁয়া বেরিয়ে আসে। সেসবের খোঁজে পুরাতত্ত্ববিদ তথাগত নিয়োগীর তত্ত্বাবধানে একটি হেরিটেজ ওয়াকের আয়োজন করেছে ‘হেরিটেজ ওয়াক ক্যালকাটা’ আগামী ২৫ নভেম্বর। হাঁটা শুরু হবে নিউ মার্কেটের ১ নম্বর গেট থেকে সকাল সাড়ে সাতটায়।
প্রবল প্রতাপশালী বৃটিশ সাম্রাজ্যের এক সময়ের মুকুটের মণি ছিল কলকাতা। ফলে জাপানি বোমার ভয় ছিলই| খুব বেশি না হলেও শহরের বুকে হামলা চালিয়েছিল জাপানি বোমারু বিমান। নেতাজি ও তজোর ম্যাপেও কলকাতার গুরুত্ব ছিল অনেকটাই। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক স্মৃতি এই শহরের বুকে লুকিয়ে রয়েছে। তারই খানিকটা খুঁজে পেতে এই হেরিটেজ ওয়াক। এই অভিনব উদ্যোগে হয়তো বা বেরিয়ে আসবে সময়ের গর্ভে লুকিয়ে থাকা অনেক অজানা রহস্য।
[শহিদ মিনারে বসার অনুমতি দিচ্ছে না সেনা, শহরের চার পয়েন্টে এবার বাজি বাজার]