স্টাফ রিপোর্টার, হাওড়া: দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর সঙ্গে মিলে নিজের সন্তানকেই খুন করেছে মা! এমনই অভিযোগ উঠল হাওড়ার সাঁকরাইলের ধুলাগড়ের হিডকো এলাকায়। তিন বছরের ওই শিশু সন্তানকে গলা টিপে খুন করার মতো মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে মা ও সৎ বাবার বিরুদ্ধে।
[অবশেষে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ বিধানচন্দ্র কলেজের জিএস-এর]
বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, শিশুটির নাম ইন্দ্রজিৎ পতি। মা ইন্দ্রাণী ও বাবা উত্তম শিশুটিকে নিয়ে কয়েক মাস আগে এই এলাকায় আসে। উত্তম ইন্দ্রাণীর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী। সৎ ছেলেকে সে মেনে নিতে পারেনি বলে অভিযোগ। রাতে হঠাৎ মায়ের কান্নার আওয়াজ পান প্রতিবেশীরা। তাঁরা এসে দেখেন ইন্দ্রজিতের নিথর দেহ জড়িয়ে ধরে কাঁদছে ইন্দ্রাণী। কিন্তু প্রতিবেশীরা খেয়াল করেন তার গলায় দাগ আছে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। অসংলগ্ন উত্তর দেয় উত্তম ও ইন্দ্রাণী। স্থানীয়রা তাদের মারধর করেন। কাঁচি দিয়ে তাদের চুলও কেটে দেওয়া হয়। সাঁকরাইল থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, আগেই ওই শিশু মারা গিয়েছে।
তবে সৎ বাবা ও মায়ের দাবি, পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছে শিশু। প্রতিবেশীরা এই দাবি মানতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, একটি সুস্থ শিশু এইভাবে মারা যেতে পারে না। বিকেলেও বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে হেঁটে যেতে দেখেছেন স্থানীয়রা। ফেরার সময় শিশুটি কোলে ছিল। প্রতিবেশীদের কারও কারও অনুমান, বাইরে খুন করে বাড়িতে আনা হয়। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, বাড়িতেই তার গলা টিপে খুন করা হয়েছে। উত্তম ও ইন্দ্রাণী দু’জনকেই আটক করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে জানা যাবে কীভাবে শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
[‘পথের কাঁটা’ সরাতে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, গ্রেপ্তার স্বামী-সহ ৩]
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই দম্পতি এলাকার কারও সঙ্গে খুব একটা মিশত না। উত্তমের এটা দ্বিতীয় বিয়ে বলে অসমর্থিত সূত্রে খবর। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত সে। পুলিশ দু’জনের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ওই দম্পতির প্রায়শই ঝগড়া হত। শিশুটিকে কেন্দ্র করেই মনোমালিন্য ছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তাঁরা শিশুটির মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। স্থানীয়দের প্রশ্ন, যদি পড়ে গিয়েই থাকে তাহলে শিশুটিকে তার বাবা-মা হাসপাতালে নিয়ে গেল না কেন? শিশুটির মৃত্যু নিয়ে বলতে গিয়ে তারা অসংলগ্ন উত্তর দিল কেন। পুলিশ তাদের জেরা করছে। পুলিশের একটি অংশের অনুমান, শিশুটিকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ায় মায়ের মত ছিল না। সৎ বাবার জোরাজুরিতেই হয়তো সে ওই খুনে সাহায্য করেছে। একজন মা কীভাবে তার সন্তানকে খুন করল? উঠছে প্রশ্ন।
[ফের চিকিৎসায় গাফিলতিতে বধূমৃত্যুর অভিযোগ, সংকটে নবজাতকও]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.