সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন বছরে টিভি দেখা যাবে তো! নির্দেশ আগেই এসেছে। আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। এবার গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করতে চলেছে কেবল অপারেটররা। কী কী থাকবে প্যাকেজ, কেমন হবে পরিষেবা? কটা ফ্রি চ্যানেল আর জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোর দাম কী করা হচ্ছে, তা নিয়ে কোনও সম্যক ধারণা নেই গ্রাহকদের। অথচ শনিবারের মধ্যে কার্যকর হচ্ছে নতুন নিয়ম। বিশদে কথা বলতেই বাড়িতে ফর্ম পাঠানো শুরু করল এমএসও সংস্থা ও স্থানীয় কেবল অপারেটাররা।
[১৮ দিন ধরে মায়ের দেহ আগলে ছেলে! রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া সল্টলেকে]
আগামী রবিবার থেকে ট্রাইয়ের নির্দেশে নির্ধারিত প্যাকেজে টেলিভিশন পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে। তার আগে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে স্থানীয় কেবল অপারেটররা। হাতে সময় কম। এর মধ্যে ফ্রি প্যাকেজে কতগুলো চ্যানেল থাকবে, পে চ্যানেলের দাম কেমন হবে, সব নির্দিষ্টভাবে জানাতে হবে গ্রাহকদের। প্রত্যেক মাসে যাঁরা কেবলের টাকা নিতে যান, তাঁরাই একটি ফর্ম নিয়ে বাড়িতে আসবেন। সেই ফর্মে লেখা থাকবে, বাড়িতে ইনস্টল করা সেটটপ বক্সে গ্রাহকদের জন্য কী কী অফার আছে। শুধু তাই নয়, অন্য এমএসও কী কী অফার দিচ্ছে, সেটাও দেখানো হবে। ফর্মে টিক দিয়ে চ্যানেল বেছে নিতে হবে। গ্রাহকদের লিখতে হবে নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর। কেবল অপারেটাররা সেই অনুযায়ী সেটটপ বক্সের কোডে ওই চ্যানেলগুলো সেট করে দেবেন। তারপর থেকে ওই নির্দিষ্ট বক্সে ওই চ্যানেলগুলোই দেখা যাবে। অন্য চ্যানেল আর দেখা যাবে না।
[‘আমার জন্য কাউকে শাস্তি দেবেন না’, অনশন তুলে মন্ত্রীকে আর্জি মাও নেতার]
বাংলায় টেলিভিশনের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১ কোটি ২০ লক্ষ। এই নতুন পদ্ধতিতে বাংলার টেলিভিশন জগতে বড়সড় পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেবল ব্যবহারের দাম এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সবথেকে বেশি গ্রাহক এমএসও সংস্থা সিটি কেবলের। ৫২ লক্ষ গ্রাহক তাদের। এরপরই আছে জিটিপিএল, হাথওয়ে, ডেন, ডিজি-কেবল, মন্থন। এছাড়াও ছোট কেবলগুলোর গ্রাহক সংখ্যা কম করে হলেও ২০ লক্ষ। বাংলার এই বিশাল বাজারে কেবল পদ্ধতির ট্রাইয়ের নয়া নির্দেশে বেশ সমস্যায় মধ্যবিত্ত গ্রাহকরা। এতদিন যা প্যাকেজ ছিল, নতুন সংস্করণে তার দাম বাড়ছে এ বিষয়ে নিশ্চিত। স্থানীয় কেবল অপারেটরদের মতে, সেটটপ বক্স আসলেও টেলিভিশনে অনেক চ্যানেল দেখার অভ্যাস তৈরি হয়ে গিয়েছিল গ্রাহকদের। কিন্তু নতুন নিয়মে চ্যানেলের পরিমাণ কমে যাওয়ায় টেলিভিশনের প্রতি আগ্রহ হারাবে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। ফ্রি প্যাকেজে যেসব চ্যানেল থাকছে, সেগুলো মনমতো নয়। অথচ পছন্দের চ্যানেল কিনতে গেলে অনেক টাকার প্যাকেজ, যা দেওয়া সম্ভব নয়। তার ফলে টেলিভিশনের বাজার অনেকটাই কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। চ্যানেলের টিআরপি-ও অনেকটা পরিবর্তন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এখন তিন ধরনের সাবস্ক্রিপশন ব্যবহার করেন গ্রাহকরা। বেসিক, মিডিয়াম, প্রিমিয়াম। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ গ্রাহক বাংলায় এই বেসিক প্যাকেজ ব্যবহার করেন। এই প্যাকেজে ৪০টি পে চ্যানেল আছে। যার মধ্যে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি ও কার্টুন, বিনোদন ও খবরের চ্যানেল ছিল। ফ্রি টু এয়ারপ্যাকে আরও ৪ থেকে ৬টি পে চ্যানেল আসে। এই প্যাকেজের দাম ছিল জিএসটি ছাড়া ২৫০ টাকা। কিন্তু নতুন সংস্করণে এই প্যাকেজের দাম দাঁড়াতে পারে ৪০০ টাকা। মিডিয়ামে প্যাকেজের বর্তমান দাম ৩২৫ টাকা। যার দাম দাঁড়াতে পারে ৫০০ টাকা। আর প্রিমিয়ামের ৪০০ টাকার প্যাকেজ দাঁড়াতে পারে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। মানুষের নিত্যব্যবহারিক দ্রব্যের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে এসেছে টেলিভিশন। এক ধাক্কায় এতটা দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্তদের সমস্যা যে বাড়ল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।