Advertisement
Advertisement
Kolkata Civic Polls

Kolkata Civic Polls: টাকা চাইছেন কর্মীরা, হতাশ প্রার্থী, পুরভোটের প্রচারে বিজেপি যেন ঢাল-তলোয়ারহীন ‘নিধিরাম’

প্রচারে কর্মীরা বেরচ্ছেন না, অভিযোগ বহু বিজেপি প্রার্থীর।

Kolkata Civic Polls: BJP candidates facing problems due to lack of money and man power | Sangbad Pratidin
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:December 9, 2021 10:32 am
  • Updated:December 9, 2021 10:32 am

সন্দীপ চক্রবর্তী ও রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কলকাতা পুরভোটে ছন্নছাড়া বিজেপি (BJP)। তৃণমূল যখন দাপিয়ে প্রচারে, সেই সময় লোকবল, অর্থবলের অভাবে জেরবার বহু বিজেপি প্রার্থী। অগত্যা প্রচারের জরুরি সময়েও হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে দলের রাজ্য সদর দপ্তর মুরলীধর সেন লেনে।

সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ দিয়ে ঢুকেই গেরুয়া রংয়ের যে অফিস, সেই এলাকা ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী মুকেশ সিং (Mukesh Singh)। হাতেগোনা কয়েকজনকে নিয়ে দরবার করছেন, লোক নেই, লোক চাই। ওয়ার্ডজুড়ে পদ্মশিবিরের ব্যানার-ফেস্টুনও চোখেই পড়ছে না। মুকেশের কথায়, “এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন লাগাতে পারছি না। প্রচারে আমার সঙ্গে সেভাবে লোক পাচ্ছি না। পাঁচ-ছয়জন কর্মীকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। পার্টির নেতাদের বলেছি যাতে দলের কর্মীরা একটু বেশি সংখ্যায় আমার সঙ্গে থাকে।” অন্যত্র থেকেও যাতে কর্মী এই ওয়ার্ডে আনা যায় সে কথাও পার্টি নেতৃত্বকে জানিয়েছেন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী। মুকেশের অভিযোগ, তৃণমূলের (TMC) ভয়ে অনেকেই আসছে না। শুধু এই ওয়ার্ড নয়, উত্তর থেকে দক্ষিণ, ঢাল-তরোয়াল না থাকায় বহু ওয়ার্ডেই বিজেপি প্রার্থী যেন নিধিরাম সর্দার।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কলকাতা হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে সেক্রেটারি-সহ ১১ পদে জিতলেন তৃণমূল প্রার্থীরা]

৭৭ নম্বরের ওয়াটগঞ্জ এলাকার দলীয় প্রার্থী গোপা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার পর্যন্ত মাত্র দু’দিন প্রচারে বেরিয়েছেন। তৃণমূল কি হুমকি দিচ্ছে? প্রশ্নের জবাবে গোপা বললেন, “না না। কোনও হুমকি আমি পাইনি। খুব টায়ার্ড। লোক পাচ্ছি না, পয়সাও তেমন নেই।” দলের প্রাপ্য টাকা তুলেছেন এদিনই। বিকেলে সেই টাকা পেয়ে বললেন, “শুরুতে অনেকে ৫০০ টাকা, ৩০০ টাকা চেয়েছে। কর্মীরা টাকা চাইলে কী বলব! এখন যে ১৫-২০ জন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে থাকছে, তাদের খাবার খরচ দিতে হচ্ছে। এত টাকা কোথায়? আজই টাকা পেলাম। কিছুই লাগাতে পারিনি। এখন ৫০টি ব্যানার বলেছি। দেখি কবে দেয়। পোস্টার কেউ না পাঠালে আর দিতে পারব না। দু’হাজার লিফলেট ছাপাব।” ম্যারেজ রেজিস্ট্রশন অফিসার বছর ৪২-এর গোপা। এই ভরা মরশুমেও বিয়েবাড়ি ছেড়ে প্রচার করতে চান। তবে দলের এই অবস্থায় ‘হতাশ’ তিনি। যারা প্রচারে বেরোবেন তাঁরাও যেহেতু চাকরি করেন তাই সন্ধ্যার আগে সময় দিতে পারবেন না। তাও কোনওক্রমে সোম ও মঙ্গলবার চেনা এলাকায় প্রচার করেছেন।

Advertisement
KMC election: No mayor face projected by BJP yet
ছবি: প্রতীকী

ভোটের আর মাত্র দশদিন বাকি। তখন বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীদের প্রচারে দেখা যাচ্ছে সাত-আটেক কর্মী নিয়ে। কারও সঙ্গে আবার নিজের পরিচিতরা রয়েছেন। এমন অবস্থা প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর বক্তব্য, “দু’-একটি ক্ষেত্রে বাদ দিলে ছবিটা শীঘ্রই বদলে যাবে। সকলেই প্রচারে নামবে। দলের অন্যতম রাজ্য সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরির আবার দাবি, শাসকদল ভয়-ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে। তবে দলের একাংশের কথায়, কলকাতায় সংগঠন দুর্বল। বহু কর্মী বিধানসভা ভোটের পর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে গিয়েছে। আবার আদি-নব্য দ্বন্দ্ব, প্রার্থী নিয়ে চাপা অসন্তোষও প্রচারে কর্মী সেভাবে না থাকার অন্যতম কারণ। সূত্রের খবর, বহু মণ্ডল সভাপতি প্রচারে নামছেন না। বসে রয়েছেন। একথা যে সত্য তার প্রমাণও গত সোমবার দলের বৈঠকেই মিলেছে। একাধিক প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্যর সামনে অভিযোগ করেছেন, বহু মণ্ডল সভাপতির থেকে কোনও সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না।

[আরও পড়ুন: Kolkata Civic Polls কলকাতার মেয়র পদের মুখ নিয়ে চুপ বিজেপি! গুঞ্জন শুরু দলের অন্দরে]

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস শীল। দেবাশিসবাবুর কথায়, “প্রচারে সেভাবে কর্মীদের থেকে সাড়া মিলছে না। আরএসএসের কিছু কর্মী ও আমার কিছু পরিচিত রয়েছেন। পার্টিকে বলেছি। পার্টি বলেছে, সমস্যা মিটবে। দেবাশিসবাবুর কথায়, শাসকদলের ভয়েই হয়তো প্রকাশ্যে অনেকে নামতে চাইছেন না। যদিও এই ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে একাংশের দাবি, প্রার্থী নিয়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তাই নেতা-কর্মীরা সেভাবে নামছেন না প্রচারে। আবার যাদবপুর এলাকার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডেও দলের প্রার্থী তানিয়া দাসের হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেখা যাচ্ছে না কর্মীদের। ওই ওয়ার্ডেই দলের এক নির্বাচনী এজেন্ট জানালেন, অনেক কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আর সংগঠনের হালও খারাপ। ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী রুবি মুখোপাধ্যায় তো সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ডোর-টু-ডোর প্রচারে লোক নেই। অনেকে বলছেন তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। কেউ আবার বাড়িতে বসে গিয়েছেন। দেওয়াল লিখনও সেভাবে করা যায়নি। আর ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী গৌরব বিশ্বাসের সঙ্গেই রয়েছেন পুরনো বিজেপি কর্মীরা। এই ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী করেছে রাজর্ষি লাহিড়ীকে। তাঁকে মেনে নিতে পারছেন না অনেক বিজেপি নেতাকর্মী।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ