স্টাফ রিপোর্টার: নিয়মের গেরো, তার জেরেই স্ত্রীর মৃতদেহ নিয়ে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে চরকি পাক কাটলেন জগন্নাথ হাজরা। এমনকী ডেথ সার্টিফিকেট পেতে মৃত স্ত্রীকে হাসপাতালে ভরতি করার পরামর্শও দিলেন চিকিৎসক। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পিজির অধিকর্তা ডা. মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, রোগীদের হেনস্তা করা কোনওমতেই কাম্য নয়। অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিভাগীয় তদন্ত হবে।
[মৃত শিশুর চোখ উধাও, কাঠগড়ায় এসএসকেএম হাসপাতাল]
শ্যামলী হাজরা দুবছর ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। এর আগে একাধিকবার ডায়ালিসিস হয়েছে তাঁর। সোমবার সকালে শরীর খারাপ হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে এমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে জরুরি বিভাগে পৌঁছলে চিকিৎসকরা বলেন বহির্বিভাগে নিয়ে যেতে। রোগীকে নিয়ে বহির্বিভাগে গেলে দেখা যায় সেখানে লম্বা লাইন। জগন্নাথবাবুর কথায়, টানা এক ঘণ্টা টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। সেখানে ডাক্তার রোগীকে দেখেই প্রেসক্রিপশনে লিখে দেন ‘ইমিডিয়েট অ্যাডমিশন।’
[হাসপাতালের পাইপ বেয়ে পালানোর চেষ্টা, প্রত্যক্ষদর্শীদের তৎপরতায় ধরা পড়ল বন্দি]
জগন্নাথের কথায়, অবিলম্বে শ্যামলীদেবীকে নিয়ে ভরতি করতে দৌড়ান পরিবারের লোকেরা। “অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীকে চাপিয়ে ওয়ার্ডে নেওয়ার সময়েই কু ডেকেছিল মনে।” জগন্নাথবাবুর কথায়, “ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে আসছিল ওর শরীর।” ফের অ্যাম্বুল্যান্সে করে রোগীকে বর্হিবিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা বলেন, মারা গিয়েছেন শ্যামলী হাজরা। কিন্তু রোগীকে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া যাবে না। তাঁদের কথায়, রোগীকে অ্যাডমিট করুন। “৪ ঘণ্টা ওয়ার্ডে রাখলে তবে মিলবে ডেথ সার্টিফিকেট।”
[‘মৃত্যুফাঁদ’ হাসপাতালে, রোগীর শরীরে অস্ত্রোপচার করছে অষ্টম শ্রেণি পাশ ]
এদিকে ওয়ার্ডে মৃতদেহ নিয়ে ভরতি করাতে গেলে শিউরে ওঠেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। “মৃতদেহকে কোন নিয়মে সাধারণ ওয়ার্ডে ভরতি নেব?” এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি জগন্নাথ। ফের স্ত্রীকে নিয়ে দৌড়ান আডটডোরে। মৃতদেহ নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই বেরিয়ে যায় ৫ ঘণ্টা। অবশেষে ডেথ সার্টিফিকেট না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান জগন্নাথ।