অর্ণব আইচ, কলকাতা: ২৭ বছর আগেকার একটি মাধ্যমিক পাস সার্টিফিকেট৷ আর সেই সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ার পরই জাল চক্রের পর্দা ফাঁস করল কলকাতা পুলিশ। ২৭ বছরের আগে হলেও সার্টিফিকেটটি জাল। সার্টিফিকেটে মাধ্যমিক বোর্ডের কর্তার যে সইটি রয়েছে, সেটিও ভুয়া।
পুলিশের অভিযোগ, বয়স ভাঁড়াতেই তৈরি করা হয়েছে মাধ্যমিকের এই জাল শংসাপত্র৷ আর তা নিয়েই ভাবতে শুরু করেছে পুলিশমহল। পুলিশের সন্দেহ, এই ভুয়া মাধ্যমিক সার্টিফিকেট তৈরির পিছনে রয়েছে কোনও বড় চক্র। মাধ্যমিকের বহু পুরনো সার্টিফিকেট এমনভাবে ওই চক্রটি তৈরি করেছে, যাতে তা দেখে কারও সন্দেহ না হয়। পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে এই শংসাপত্রটি উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশ বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল দপ্তরের পক্ষ থেকে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের মতে, কলকাতার বুকেই রয়েছে এই জাল সার্টিফিকেট তৈরির কারখানা। যে ব্যক্তিদের পুরনো শংসাপত্রের প্রয়োজন, মোটা টাকার বিনিময়ে এজেন্টদের মারফত এই জাল শংসাপত্র পৌঁছে যাচ্ছে তাদের হাতে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত অক্টোবর মাসে এই ঘটনার সূত্রপাত। পুলিশের দায়ের করা মামলা অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে ব্রাবোন রোডের পাসপোর্ট অফিসে যান রিপন দাস নামে এক ব্যক্তি। পূর্ব কলকাতার মানিকতলা এলাকার সিআইটি রোডের ওই বাসিন্দা পাসপোর্টের আবেদন করে বয়সের প্রমাণ হিসাবে মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট জমা দেন। দেখা যায়, ১৯৯১ সালের ১০ ডিসেম্বর ওই মাধ্যমিক সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। অবিকল আসলের মতো দেখতে সার্টিফিকেটটি। তার তলার দিকে প্রয়োজনীয় সইও রয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে রিপন দাসের নাম। তিনি যে মাধ্যমিক পাস করেছেন, তা-ও বলা রয়েছে সেখানে। কিন্তু আবেদনপত্রর সঙ্গে থাকা ওই সার্টিফিকেটটি স্ক্রুটিনি করতে গিয়েই সন্দেহ হয় পাসপোর্ট অফিসের আধিকারিকদের। অবিকল মনে হলেও সার্টিফিকেটের কয়েকটি বৈশিষ্ট দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। তাঁরা বিষয়টি কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোলে জানান। ওই সাটির্ফিকেটটি পুলিশ মাধ্যমিক বোর্ডে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। শেষ পর্যন্ত বোর্ডের তরফে জানানো হয় যে, ওই সার্টিফিকেটটি জাল৷ এর পরই সিকিউরিটি কন্ট্রোল দপ্তরের এক মহিলা সাব ইন্সপেকটর এই বিষয়ে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এই মাধ্যমিকের সার্টিফিকেটের জাল চক্র ফাঁস হওয়ার পর পুলিশের ধারণা, চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যই অনেক পুরনো সার্টিফিকেট তৈরি করছে এই চক্র। এমনকী, চক্রটি মাধ্যমিক ছাড়াও অন্যান্য পরীক্ষার সার্টিফিকেট তৈরি করছে, এমন সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জেরা করে এই চক্রের এজেন্ট ও মাথাদের সন্ধান চালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.