সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে একেবারে কেউটে! মাদক পাচারের তদন্তে গিয়ে কিডনি পাচারের বড় চক্রের খোঁজ পেল লালবাজার। ধরা পড়েছে চারজন। তাদের জেরায় জানা গিয়েছে প্রতিস্থাপনের বিনিময়ে কিডনি পিছু প্রায় চার লক্ষ টাকা পকেটে ভরত চক্রের পাণ্ডারা। এই চক্রের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে বাইপাস লাগোয়া আর এন টেগোর হাসপাতালের।
[ঘুমিয়ে নিরাপত্তারক্ষী, কয়েক লক্ষ টাকার যন্ত্রাংশ চুরি কারখানায়]
গত চব্বিশে নভেম্বর লালবাজারের নারকোটিক্স সেলের কাছে খবর আসে পাটনা রাজেন্দ্র নগর এক্সপ্রেসে কয়েকজন মাদক নিয়ে কলকাতায় আসছে। হাওড়া স্টেশনে অভিযুক্তরা নামে। এরপর তাদের অনুসরণ করে কলকাতার আনন্দপুর থানা এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের থেকে আটক করা হয় ৩১৬ গ্রাম ব্রাউন সুগার। যার বাজারমূল্য ৪ লক্ষ টাকা। ধৃতদের জেরা করে চমকে যান তদন্তকারীরা। জানতে পারেন এরা কিডনি পাচারের সঙ্গে যুক্ত। তাদের থেকে এই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য পান তদন্তকারীরা। আরও কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পারে ২৭ বছরের আসফাক আহমেদ এই চক্রের মূল পাণ্ডা। তার বাড়ি খিদিরপুরে। বাকি তিনজন ডোনার। এদের নাম তাহিরুল ইসলাম (২৭)। বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে। অপর জনের নাম রায়গঞ্জের বৈদ্যনাথ বর্মণ (৩৮) এবং তার স্ত্রী জ্যোৎস্না বর্মণ (৩৬)। তদন্তকারীরা জানতে পারেন কিছু টাকা অগ্রিম দিয়ে তিনজনকে কলকাতায় আনে আসফাক। আর এন টেগোর হাসপাতালে তিনজনের কিডনি প্রতিস্থাপন করার কথা ছিল। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য আধার বা ভোটার কার্ড লাগে। চক্রের মূল চাঁই আসফাক ডোনারদের সমস্ত পরিচয়পত্র জাল করত। এই তিনজনেরও পরিচয়পত্র জাল করা হয়।
[চোরাই বাইক ধরে ফ্যাসাদ, হুমকির ভয়ে সিঁটিয়ে সিভিক ভলান্টিয়াররা!]
কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য হাসপাতাল থেকে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পেত আসফাক। দাতাদের দিত মাত্র চার লক্ষ টাকা। মোটা টাকা সে পকেটে পুরলেও কাটমানি হিসাবে আর এন টেগোরের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের একটা অংশ আসফাককে দিতে হত বলে মনে করা হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর ধরে আসফাক এই কাজ করে আসছিল। গত এক বছরে আর এন টেগোর থেকে ৫০০ কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছিল। এর মধ্যে কতগুলি আইনি তা জানতে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে ডিরেক্টর অব মেডিকেল এডুকেশন এবং চেয়ারম্যান অব অথরিটি কমিটির কাছে। আলিপুর আদালত ধৃতদের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
ছবি- অর্ণব আইচ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.