ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: রাজ্যে বামেদের লোকসভা ভোটের আবেদনপত্রেও বিকল্প নীতির উপর জোর দেওয়া হল। বস্তুত, সিপিএমের ইস্তেহারকে সামনে রেখেই রাজ্য বামফ্রন্টের আবেদনপত্র বুধবার প্রকাশ হল। প্রকাশ করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। যে আবেদনপত্রের ছত্রে ছত্রে কেন্দ্রের বিজেপি ও রাজ্যের তৃণমূল সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। আট পাতার আবেদনপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে গত পাঁচ বছরে দেশে অসহিষ্ণুতা বেড়েছে আগের তুলনায় ২৮ শতাংশ। শুধু মাত্র অসহিষ্ণুতার জন্য আহত হয়েছেন অন্তত তিন হাজার মানুষ।
সিপিএম-সহ চার শরিক ছাড়াও ফ্রন্টের বাইরে থাকা আরও তিনটি দলকে যুক্ত করা হয়েছে আবেদনপত্রে। দেশের মোট সম্পদের ৭৩ শতাংশ এক শতাংশ মানুষের হাতে এই অভিযোগ করে বিকল্প নীতির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যে বিকল্প নীতির কথা সিপিএমের কেন্দ্রীয় ইস্তাহারেও প্রকাশিত হয়েছে। ১৮ দফা দাবি প্রকাশ করা হয়েছে বামেদের আবেদনপত্রে। যেখানে ফসলের দামের নূণ্যতম সহায়ক মূল্য, নিখরচায় স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রসার ঘটানো, শিক্ষাখাতে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যায়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিমান বসু বলেছেন, “এবারই প্রথম তফসিলি জাতি, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের জন্য সাব প্ল্যানের কথা বলা হয়েছে।” এর বাইরে পেট্রোপণে্যর দামের বিনিয়ন্ত্রণ বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। দুর্নীতি মোকাবিলায় লোকপালের পরিধির মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি চুক্তিকে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। বিগত কয়েকটি লোকসভা ভোটের মতো এবারেও বামেদের ভোটের আবেদনপত্রে মহিলাদের জন্য আইনসভায় এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ চালুর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি রাফালের উল্লেখ করা হয়েছে। সমালোচনা করা হয়েছে রাজ্য সরকারেরও।
এদিকে লোকসভা ভোটের আগে দেশের বুদ্ধিজীবীরা যেমন অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন তেমনই রাজ্যের বামবুদ্ধিজীবীরাও বিবৃতি দিয়ে এই বিষয়ে সরব হয়েছেন। এদিন এক বিবৃতিতে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, তরুণ মজুমদার, অর্ধেন্দু সেন, অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, পবিত্র সরকার, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক অশোকনাথ বসু, মন্দাক্রান্তা সেনের ব্যক্তিরা ও অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।