সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওদের কোনও সান্তা ক্লজ ছিল না। এ শহরে সান্তা এসেছে ঠিকই। রাতের অন্ধকারে মোজার ভিতর বাচ্চাদের জন্য চুপিচুপি রেখে গিয়েছে পছন্দের উপহার। কিন্তু ঘুমোতে যাওয়ার আগে মাথার পাশটিতে মোজার রাখার কথা ওরা তো জানেই না। ঘুমানোর আগে ওদের মাথায় ঘোরে পরেরদিনের খাওয়ার চিন্তা। মাথা গোঁজার আস্তানাই যাদের নেই, সান্তার কথা তাদের মাথাতেও হয়তো আসেও না। তবু এল সান্তা। ওদের হাতে তুলে দিল খাবার-দাবার আর শীতের কম্বল। দিনের শেষে তাই খুশির আলো নিউ আলিপুরের জনা সত্তর পথশিশুদের মুখে।
[ বড়দিনে বেসামাল মহিলাদের সামলাতে রাস্তায় প্রমীলা বাহিনী ]
উদ্যোগ সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ও বেহালা দেবদারু ফটকের। এ মাস উৎসবের। ক্রিসমাস সেলিব্রেশনের। ক্যারলের সুর আর সান্তার সাজে ঝলমলে কলকাতা। রাস্তায় চেনা ভিড়। চেনা ছন্দে শহর। তবু এটাই কি সব? আসলে এ কলকাতার ভিতরে আছে আর একটা কলকাতা। প্রদীপের নিচে যেমন অন্ধকার। উৎসবের আলো সেখানে পৌঁছায় না। হ্যাঁ, প্রভু যিশুর জন্মদিনে যখন সকলেই মাতোয়ারা, তখন উপেক্ষিতই থেকে যায় কলকাতার যিশুরা। ব্রাত্যজনের সে রুদ্ধসংগীত পৌঁছায় না উৎসবমুখর জনতার কারণে। তবু কোথাও কোথাও থাকে ব্যতিক্রম। শহরের পথশিশুদের পাশে দাঁড়িয়ে বড়দিনে সেই নমুনাই থাকল এদিনের অনুষ্ঠানে।
[ বেসামাল হলেই বিপদ, বড়দিনে কলকাতা জুড়ে সক্রিয় লালবাজারের ‘ক্যামেরা চোখ’ ]
ওরা কেউ স্কুলে যায়। কেউবা যায় না। প্রত্যেকের ঘরেই নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। আর ঘরই বা কোথায়! কারও একটু মাথা গোঁজার আস্তানা আছে। কারও আবার সেটুকুও নেই। এই উৎসবের দিনেও পরনে একমাত্র মলিন পোশাকই সম্বল। অভিজাত শহরে কেক আর পেস্ট্রির বর্ণিল জীবনযাপনের দিকে ওরা তাই বিষণ্ণ হয়েও ফিরে তাকায় না। জীবনের এটুকু বয়সেই ওরা বুঝে গিয়েছে ওসব ওদের জন্য নয়। তবু মানুষই তো মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এই আলোঝলমলে দিনে ওদের মুখেও তাই পড়ল খুশির আলো। নিউ আলিপুরের প্রায় সত্তর জন বাচ্চার মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব হল। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের উদ্যোগে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হল কম্বল। না যে কেউ তা তুলে দেয়নি। হাজির হয়েছিল স্বয়ং সান্তা ক্লজ। সান্তাকে ওরা হয়তো চেনে না। তবে আজ যে তাদের হাতে খুশির উপহারটুকু তুলে দিচ্ছে, সে সান্তা ছাড়া আর কে!
[ ছন্দে ফেরা পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি কেকে, টয়ট্রেন-কন্যাশ্রী নিয়ে উৎসাহ ]
উদযাপন গোটা শহর জুড়ে। ব্যক্তি আনন্দ সেখানে আছে বটেই। তবে একমাত্র আনন্দই ভাগ করে নিলে বাড়ে বই কমে না। এদিনের অনুষ্ঠানে শিশুদের মুখের ওঠা হাসিতে লেখা থাকল সে কথাই। নিঃসন্দেহে এই মুহূর্ত অন্যরকম। ছোটদের আনন্দে হেসে ওঠা সত্যিকারের একটা বড়দিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.