সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ত্রিপুরায় লেনিন মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদ বাংলায়। বুধবার সকালে কেওড়াতলা শ্মশানের সামনে ভেঙে দেওয়া হয় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিশানা করেছিলেন বাম ও তৃণমূলকেই। বৃহস্পতিবার মেয়ো রোডে নারী দিবসের সভা থেকে তারই জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, কিছু মাওবাদী এসে মূর্তি ভেঙেছে, তার জন্য সরকারকে দোষারোপ কেন?
[ ত্রিপুরা কাণ্ডের জের, টালিগঞ্জে ভাঙা হল শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি ]
লেনিন মূর্তি ভাঙার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন মমতা। জানিয়েছিলেন, লেনিন তাঁর নেতা নয়। কিন্তু বাংলার মানুষ সুভাষ-রবীন্দ্রনাথকে যেমন সম্মান করে, তেমনই অন্য মনীষীদেরও শ্রদ্ধা করে। ফলে এই মূর্তি ভাঙার সংস্কৃতি কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। ঘটনাচক্রে সেই একই পাকে পড়েছে তাঁর বাংলাও। ত্রিপুরায় লেননি মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে কলকাতায় ভেঙে দেওয়া হয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি, কালি লেপা হয়েছে মূর্তির মুখে। যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অপরাধে আগেও গ্রেপ্তার করেছিল এসটিঅফ। ‘ব়্যাডিক্যাল’ নামে একটি সংগঠনের পোস্টারও পাওয়া গিয়েছে। মূলত তারাই এই মূর্তি ভাঙার কর্মসূচি নিয়েছিল। সেদিনই মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ‘মমতা তাঁর বার্তা দিয়েছেন। মূর্তি ভাঙার সংস্কৃতি বাংলার মাটিতে কোনওরকমভাবে বরদাস্ত করা হবে না।’
[ লেনিন, শ্যামাপ্রসাদের পর এবার ভাঙা হল আম্বেদকরের মূর্তি ]
এদিন মমতা জানান, লেননি মূর্তি ভাঙা যেমন তিনি সমর্থন করেন না, তেমন শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি ভাঙাও নয়। নাম না করে দিলীপ ঘোষের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, কিছু মাওবাদী মূর্তি ভেঙেছে। তার জন্য সরকারকে দোষারোপ কেন করা হচ্ছে? এদিন তিনি ফের বলেন, বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করেই তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু কোনওভাবেই বামেদের উপর আক্রমণ করা হয়নি। কেননা, তাঁরা বদল চেয়েছিলেন বদলা নয়। এটা যে বাংলার সংস্কৃতি নয় তা বারবার বুঝিয়ে দেন মমতা।
[ পেরিয়ারের মূর্তি ভাঙার বদলা, দক্ষিণে কাটা হল ব্রাহ্মণদের পৈতা ]
পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মহিলাদের সংগঠিত হওয়ার ডাক দেন মমতা। বলেন, ত্রিপুরায় বামেরা আত্মসমর্পণ করেছে বলে গেরুয়া শিবিরের এই আগ্রাসন। কিন্তু তৃণমূল আত্মসমর্পণ করতে জানে না। তাঁর কটাক্ষ, অনেকে এমন কথা বলছেন, যেন তৃণমূল বলে কিছু নেই। তাঁর পালটা দাবি, শুধু মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠিত হয়ে রুখে দাঁড়ালেই অনেকের অনেক বড বড় কথা বন্ধ হয়ে যাবে। বিজেপিকে রুখে দাঁড়াতে বাংলার মা-বোনেদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মমতা। বলেন, দেশ বাঁচাতে, সমাজ বাঁচাতে, সংসার বাঁচাতে বিজেপি রোখার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে মহিলাদেরই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.