সংবাদ প্রতিদিনই ডিজিটাল ডেস্ক: বড়দিন ও ইংরেজি নতুন বছরের উৎসবের আগে কলকাতায় ধরা পড়ল বড়সড় মাদকচক্র। পার্ক স্ট্রিটের এক নামী নাইটক্লাব থেকে ধরা পড়ল এক ডিস্ক জকি-সহ তিন। নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর গোয়েন্দাদের মারফত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে চক্রের পান্ডাদের ধরার চেষ্টা চলছে। এই চক্রের পিছনে বিনোদন জগতের বেশ কয়েকজন মাথাও জড়িয়ে রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ। মানালি থেকে এই মাদক আসত বলে অনুমান পুলিশের। তবে মূল চাঁইদের টিকি পাকিস্তানে বাঁধা কি না, সেটাও তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে।
[সিঙ্গল মহিলারা কীভাবে যৌন তৃপ্তি পান, জানুন ৬টি উপায়]
কী লক্ষ্য ছিল মাদক পাচারকারীদের। পুলিশ সূত্রে খবর, শহরের বিভিন্ন নাইটক্লাব, ডিস্ক, এমনকী ফ্ল্যাটেও এই চক্রের সদস্যরা নিষিদ্ধ মাদক সরবরাহের ছক কষে। বিত্তবান পরিবারের নাবালক-নাবালিকা থেকে শুরু করে টিনএজারদের মধ্যে বিভিন্ন নিষিদ্ধ মাদকের চাহিদা বেশ বেড়ে যায় বর্ষবরণের সময়। চাহিদা অনুযায়ী মাদকের জন্য চড়া দাম দিতেও পিছপা হয় না ওই যুবক-যুবতী বা কিশোর-কিশোরীরা। পুলিশ জানিয়েছে, এখন আর গোপনে অন্ধকারে নয়, দামী ক্লাবে ঘর ভাড়া নিয়ে দেদার মাদক সেবনের হিড়িক পড়েছে। এই ধরনের পার্টিতে মদ-হুকাহ তো থাকেই, সঙ্গে বেশি টাকা দিলে গোপনে হাতে চলে আসে ‘পার্টি ড্রাগসও’। একবার এই নেশা করলে কয়েক ঘন্টা কোনও হুঁশ থাকে না। পার্টিতে আসা বান্ধবীদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতে উচ্চবিত্ত শ্রেণীর যুবকদের মধ্যে এই ড্রাগসের বিপুল চাহিদা।
[মদ্যপ অবস্থায় যৌন মিলনের ফল কতটা মারাত্মক হতে পারে জানেন?]
এতদিন দিল্লি বা মুম্বইয়ের মতো শহরে এরকম প্রচুর অভিযোগ জমা পড়লেও কলকাতায় এত বড় অসাধু চক্রের পর্দাফাঁস হল এই প্রথম। সেই সঙ্গে একজন নামী ক্লাবের ডিজের গ্রেপ্তারিও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। বর্ষবরণের রাতে লাউড মিউজিকের তালে তালে উদ্দাম নাচের সঙ্গে ডান্স ফ্লোরে ‘পার্টি অ্যানিমাল’দের হাতে চলে আসে এই পার্টি ড্রাগ৷ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নেশায় বুঁদ যান। সূত্রের খবর, ‘কেটামাইন’ নামে এক ধরনের ড্রাগের চাহিদাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি হয়। উৎসবের মরশুমে এরকম ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়ে পুলিশের কাছে৷ সাধারণত, ঘোড়াকে ঘুম পাড়াতে চিড়িয়াখানায় ‘কেটামাইন’ ড্রাগ ব্যবহৃত হয়৷ কিন্তু সেই ড্রাগ অবৈধ উপায়ে পৌঁছে যায় নামীদামি পার্টিতে৷ চড়া দামের বিনিময়ে কেনেন এক শ্রেণির অসাধু পার্টি প্ল্যানাররা৷ চিড়িয়াখানা থেকে চুরি যাওয়া ড্রাগই মিশে যায় হুজুগে যুবক-যুবতীদের পানীয়ে৷ বস্তুত, এতদিন ‘ডেট রেপ ড্রাগ’ হিসাবে পরিচিত এই কেটামাইন দেদার মিলত দিল্লির ডান্স ক্লাব, কনসার্ট ও রেভ পার্টিতে৷ কিন্তু এবার কলকাতাতেও এই ড্রাগ থাবা বসানোয় চিন্তায় পুলিশও।
[পরস্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে একা পুরুষই দোষী কেন, প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের]
কেটামাইন ড্রাগ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি ড্রাগ৷ এর এমনই নেশা যাতে মৃত্যু পর্যন্ত নেমে আসতে পারে৷ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মানবদেহে প্রবেশ করলে তাঁর স্নায়ুতন্ত্রকে নষ্ট করে দিতে পারে৷ এমনকী, এই ড্রাগ নিয়েছেন, এমন কোনও মহিলাকে ধর্ষণ করা হলেও তাঁর কিছুই মনে থাকবে না৷ সেই কারণেই পার্টিতে এই ধরনের ড্রাগের চাহিদা মারাত্মক৷ চড়া দামে এই কেটামাইন ড্রাগস বিক্রি হয় রেভ পার্টিতে৷ বড়দিন বা বর্ষবরণের রাতে শহরের কোনও পার্টিতে যেন এই মারণ ড্রাগ ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে কড়া নজর রাখছে পুলিশ৷ পুলিশ ও এনসিবির গোয়েন্দারা নজরে রাখছেন পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়ার সরণির বেশ কয়েকটি নাইটক্লাবে। নজর রাখা হচ্ছে ধৃত ডিজের সেই সব ‘সোর্স’-এর উপরেও যারা চাহিদা বুঝে এই ধরনের ড্রাগ সরবরাহ করত।