Advertisement
Advertisement

Breaking News

New facts emerge in Cossipore BJP leader's death

Cossipore BJP Leader Death: ২৫ বছর পর বাবার মতোই ‘আত্মঘাতী’ কাশীপুরের বিজেপি নেতা, পারিবারিক অশান্তি চাপা দিতেই খুনের তত্ত্ব?

পারিবারিক সমস্যা নিয়ে মৃত বিজেপি নেতার দুই দাদাকে প্রশ্ন করে ‘সেট’।

New facts emerge in Cossipore BJP leader's death । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 12, 2022 9:11 am
  • Updated:May 12, 2022 9:11 am

স্টাফ রিপোর্টার: পারিবারিক অশান্তির তথ্য চাপা দিতেই রাজনৈতিক মোড়কে খুনের অভিযোগ তোলে পরিবার। এই অভিযোগ চিৎপুরের বাসিন্দাদেরই। উত্তর কলকাতার কাশীপুর (Cossipore) রেল কলোনির পরিত্যক্ত ঘরে অর্জুন চৌরাসিয়া যে আত্মহত্যাই করেছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসতে মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁদের মতে, চিৎপুরের ঘোষবাগানের চৌরাসিয়াদের পরিবারে বহুদিন ধরেই চলছিল সমস্যা। বেশ কিছু টাকা খোয়ানোর ফলে কয়েকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন অর্জুন। একসঙ্গে অর্থনেতিক ও পারিবারিক সমস্যার চাপ মেনে নিতে পারেননি ২৬ বছরের যুবক অর্জুন। তার ফলেই কি আত্মঘাতী হলেন অর্জুন? সেই প্রশ্নই তুলেছেন মহল্লার বাসিন্দারা।

এই তথ্যগুলি পুলিশের কানেও এসেছে। তথ্যগুলি যাচাই করতে বুধবার চিৎপুর থানায় বিশেষ অনুসন্ধানকারী দল বা ‘সেট’এর সদস্যরা অর্জুন চৌরাসিয়ার দুই দাদা আনন্দ ও অমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।  অন্য একটি টিম ঘোষবাগান লেনের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে অর্জুনের মা, বউদি ও খুড়তুতো বোনকে। আনন্দ চৌরাসিয়া জানান, তাঁদের পারিবারিক বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। যেগুলি বলা সম্ভব, তিনি জানিয়েছেন।

Advertisement

পারিবারিক ঝগড়া যে হয়েছিল, সেই তথ্যও উঠে এসেছে। অর্জুনের অন্তত ৩০ জন বন্ধু ও এলাকার বাসিন্দার বক্তব্য গ্রহণ করেছে ‘সেট’। কেউ তাঁকে ওই পরিত্যক্ত ঘরে ঢুকতে দেখেননি। কিন্তু এমন একজন বন্ধুর হদিশ মিলেছে, যাঁকে অর্জুন গত বৃহস্পতিবার সন্ধেয় অফিস থেকে বাড়িতে ফেরার আগেই হতাশার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ওই বন্ধুটির দাবি, তিনি তখনও বুঝতে পারেননি যে, আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে অজুর্নের।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মেট্রোর কাজ চলাকালীন বউবাজারে নতুন করে ফাটল, আতঙ্কে ঘরছাড়া বহু]

তবে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ২৫ বছর আগে অর্জুনের বাবা রাজকিশোর চৌরাসিয়া বিষপান করে আত্মঘাতী হন। তখন অর্জুনের বয়স মাত্র ৬ মাস। প্রচণ্ড মদ্যপান করতেন পরিবহণের কাজের সঙ্গে যুক্ত ওই ব্যক্তি। তাঁর কয়েকজন বন্ধু জানান, মদ্যপানের পর সাংসারিক অশান্তির জেরেই বিষ রাজকিশোর বিষ খেয়েছিলেন বলে তাঁরা জানতে পারেন। তবে বাড়িতে মৃত্যু বলেই দেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। যদিও চৌরাসিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে এই দাবি অস্বীকার করে বলা হয়েছে, অসুস্থ হয়েই মৃত্যু হয়েছিল রাজকিশোরের।
হাই কোর্টের নির্দেশে অর্জুন চৌরাসিয়ার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল আলিপুর কম্যান্ড হাসপাতালে।

তদন্তের স্বার্থে ‘সেট’ মৃতের জামা, প্যান্ট, গলার ফাঁসের কাপড়, ভিসেরা চেয়ে পাঠালে তা দিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগে এবার সেনা হাসপাতালের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য। বুধবার আদালতের উল্লেখ পর্বে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্যের কৌঁসুলি অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সেগুলি হায়দরাবাদে পাঠাতে চায়। কিন্তু কম্যান্ড হাসপাতাল সেগুলি ফেরত না দিলে তদন্তের গতি শ্লথ হয়ে যাচ্ছে বলেও আদালতে জানান রাজ্যের কৌঁসুলি। বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।

এদিকে, এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইনে গেম খেলার ফলে আর্থিক ক্ষতি হয় অর্জুন চৌরাসিয়ার। তিনি বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা ফেরত দিতে পারতেন না। দাদা আনন্দ চৌরাসিয়া যে গেঞ্জি কারখানার সুপারভাইজার, সেই কারখানায় কাজ করেই অর্জুন ১১ হাজার ১০০ টাকা বেতন পেতেন। বাড়িতে দিতে হত দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। পাওনাদাররা চাপ দিতেন। সম্প্রতি কুসঙ্গেও পড়েছিলেন। পরিবারের লোকেরা বেরিয়ে আসতে বলতেন। এক বান্ধবীর সঙ্গে পাঁচ বছরের সম্পর্ক ছিল। তাঁকে অর্জুন বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই ছোট ঘরের মধ্যে এভাবে একসঙ্গে এতজনের থাকা সম্ভব নয় বলে পরিবারের লোকেরা জানান।

তার মধ্যেই পরিবারের দুই সদস্য পারিবারিক সূত্রে বেশ কিছু টাকা পান। পরিবারের অন্যরা সেই টাকার ভাগ চান। আলাদা ফ্ল্যাট কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকে পারিবারিক অশান্তি যে চরমে ওঠে, তা জানতে পারেন প্রতিবেশীরা। এমনকী, পরিবারের একজন বাড়ি ছেড়ে দু’দিনের জন্য বেরিয়েও যান। সেই মানসিক চাপ অর্জুনের উপর পড়েছিল বলেই ধারণা এলাকার বাসিন্দাদের।

এর আগেও পরিবারিক অশান্তির জেরে অর্জুন বাড়ি ছেড়ে চলে যান বলেই খবর। গত বৃহস্পতিবার অর্জুন কারখানা থেকে ফেরার পরও কিছু খাননি। বরং কিছু গোলমালও হয়। নিজের গামছা নিয়ে বের হওয়ার পরও টালা ব্রিজ পেরিয়ে কয়েকটি জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। এরপর আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েই বেশি রাতে রেল কলোনিতে আসেন বলেই অভিমত পুলিশের। এই পারিবারিক সমস্যার ব্যাপারে পরিবারের লোকেদের ‘সেট’ প্রশ্নও করে। তবে তাঁর পেটে যে ১০ মিলিগ্রাম কালো রঙের তরলের হদিশ মিলেছে, সেটি কী বস্তু, তা ভিসেরা রিপোর্টের পরই বোঝা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: ‘নোবেল পেয়ে রবীন্দ্রনাথকেও কথা শুনতে হয়েছিল’, মমতার অ্যাকাডেমি সম্মান বিতর্কে জবাব ব্রাত্যর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ