সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুর ঝাঁ চকচকে মেট্রোর পাশে আদতে নেহাতই কমজোরি লাগে কলকাতা মেট্রোকে। দেশের প্রথম মেট্রো পরিষেবার তকমাটুকু ছাড়া গৌরবের কোনও কিছুই আর আজ বিশেষ অবশিষ্ট নেই। পর্যাপ্ত এসি রেকের অভাবে সুষ্ঠু যাত্রী চলাচল অক্ষুণ্ন রাখতে আজও ছুটছে বয়সের ভারে ন্যুব্জ নন এসি রেক। কিন্তু তারই মাঝে বাংলা নতুন বছরে দেশের অন্য শহরের মেট্রোর সঙ্গে পাল্লা দিতে এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ ৩৩ বছরের পুরনো এই পরিষেবার। পয়লা বৈশাখ থেকে প্রতিদিন রাতেও চালু থাকবে শহরের এই লাইফলাইন। যা দেশের মেট্রো ইতিহাসে ফের প্রথম।
কলকাতায় সারা রাত মেট্রো চালু থাকা যদিও নতুন কিছু নয়। দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে, বিগত বেশ কয়েক বছর পুজোর দিনগুলিতে সারা রাত চলত মেট্রো। তবে এই পরিষেবা সাময়িক ও পুজো ফুরোলেই মেট্রো ফিরত অন্য দিনের নিয়মে।
বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে সারা রাত মেট্রো চালু থাকলেও, দুই ট্রেনের সময়ের মধ্যে ব্যবধান বাড়বে রাতে। দিনের ব্যস্ত সময় যখন পাঁচ মিনিট ফারাকে মেলে মেট্রো, তখন রাত দশটার পর দুই ট্রেনের মধ্যে ফারাক থাকবে ৪০ মিনিট। রাতের অতিরিক্ত পরিষেবার খরচ কমাতেই ট্রেনের মধ্যে এই ফারাক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক আধিকারিক। তিনি আরও জানান, এই পরিষেবা চালু করার জন্য মেট্রো রেলের বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। তবে যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে টিকিটের দাম এখনই বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। জানা গিয়েছে, রাত ১১ টার পর থেকে শুধু নন-এসি রেক চলবে। খরচ কমাতেই এই পন্থা নিয়েছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, যান্ত্রিক গোলযোগে প্রায়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। কখনও দরজা খোলা রেখেই ছুটছে মেট্রো। আবার কখনও বা মাঝপথে দাঁড়িয়ে পড়ছে রেক। এই সমস্যাগুলির সমাধানে অত্যাধুনিক রেক ও সিগনাল সিস্টেম চালু করতে চলেছে মেট্রো রেল।
যেদিন এই রাতভর মেট্রো চলার আপাত ঘোষণাটি হল, সেদিনের তারিখটার দিকেই দেখুন। সারা দুনিয়ায় এই একটাই দিন রেখে দেওয়া আছে নিছক মজা করার জন্য। দিনটার অস্থিমজ্জাতেই যে লুকিয়ে আছে এ কথা। কত জোক এল গেল, কত জোকই আসবে, মেট্রোটাও থেকেও যাবে। কিন্তু পয়লা এপ্রিল আর তো কাল থাকবে না। এই নিছক রসিকতা করার লাইসেন্সটুকুও তাই থাকবে না। তাই না হয় একটু মশকরা আজ মেনেই নিলেন। বরং ভাবুন, মেট্রো চালুর ঘোষণায় এই যে আপনি মুহূর্তের জন্যও আনন্দিত হয়েছিলেন, তাকে সত্যিই কী বলা যায়। আমাদের ধারণা লালমোহনবাবু থাকলে নিশ্চিতই বলতেন, এ হল অসম্ভবের আনন্দ। আর এই মজাটুকু স্রেফ ভাল থাকার আর SHARE করার জন্যই।