Advertisement
Advertisement

অঙ্গদানের নজির শহরে, মৃত কিশোরীর অঙ্গে প্রাণ পেল ৩ জন

সংরক্ষিত আছে কিশোরীর ত্বক এবং চোখও।

Organs from brain dead girl planted in three patients in Kolkata
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:August 18, 2018 9:49 am
  • Updated:August 18, 2018 9:49 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শহরে ফের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নজির। এসএসকেএমে এবং এক বেসরকারি হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে হায়দরাবাদি গ্রহীতার দেহে প্রতিস্থাপিত হল কিশোরীর লিভার। খড়দহ এবং সোদপুরের দুই গ্রহীতা পেলেন কিশোরীর দুই কিডনি। এছাড়াও সংরক্ষণ করা হল ব্রেন ডেথ হওয়া কিশোরীর ত্বক এবং চোখ । যদিও, হৃদপিণ্ডের কোনও গ্রহীতা না পাওয়া যাওয়ায় তা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

[প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দুর্ঘটনার কবলে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়]

 “আমার মেয়েটা তো বাঁচল না। ওর লিভার নিয়ে বেঁচে উঠুক আরো একজন। ভাবব মেয়েটা আমার তাঁর মধ্যেই বেঁচে আছে।” ছলছলে চোখে শিলিগুড়ির মানিক মজুমদার যখন এ কথা বলছেন ততক্ষণে শ্বাসপ্রশ্বাস থেমে গিয়েছে তার একমাত্র মেয়ে মল্লিকা মজুমদারের। মৃত কিশোরীর লিভার বসানো হল হায়দরাবাদের এক ব্যক্তির শরীরে। বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালে হল এই অস্ত্রোপচার। শুক্রবার গভীর রাতেই এসএসকেএম থেকে গ্রিন করিডর করে লিভার নিয়ে আসা হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে।

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে কানের সংক্রমণে ভুগছিল শিলিগুড়ির মল্লিকা। ৩১ জুলাই কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি করা হয় দশম শ্রেণির কিশোরীকে। চিকিৎসায় তেমনভাবে সাড়া দিচ্ছিল না সে। গত ১৩ আগস্ট থেকেই চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই ক্রমশ শেষ হয়ে আসছে কিশোরীর। মল্লিকার পরিবারকে বোঝাতে শুরু করেন রাজ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা অদিতি কিশোর সরকার বলেন,, “অঙ্গ প্রতিস্থাপনে অনন্য নজির স্থাপন করছে এই রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতা ছাড়া এ কাজ হত না। মেয়েটির বাবাকে আমরা বলি, আপনার মেয়ের অঙ্গে বাঁচতে পারে আরও চার-পাঁচটি জীবন। মনে করুন না তাঁদের মধ্যেই আপনার মেয়ে বেঁচে আছে।”

Advertisement

[বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে প্রশাসক বসাচ্ছে রাজ্য সরকার]

একমাত্র মেয়ের শরীর কাটাছেঁড়া করা হবে, প্রথমটায় মানতে চায়নি বাবার মন। পরে তিনি বুঝতে পারেন মেয়ের অঙ্গে যদি কেউ জীবন ফিরে পায় সেটা তো গর্বের বিষয়। শুক্রবার বিকেলে সরকারিভাবে  ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয় বছর পনেরোর ওই কিশোরীর। মেয়ের মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছিলেন বাবা মানিক মজুমদার। শুক্রবার বিকেলে জানিয়েছেন, “একমাত্র মেয়ে আমার। যা চাইত তাই দিতাম। ও তো আর থাকল না। মেয়ের অঙ্গে কয়েকজন প্রাণ ফিরে পেলে সত্যিই ভাল লাগবে।” মল্লিকার ত্বক দেওয়া হয়েছে এসএসকেএম-এর স্কিন ব্যাঙ্কে। চোখ দেওয়া হয়েছে শহরের খ্যাতনামা এক বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে। লিভারের গ্রহীতা পাওয়া গিয়েছে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। মল্লিকার দু’টি কিডনি দেওয়া হয় এসএসকেএম-এর নেফ্রোলজি বিভাগে। পরে তা সফলভাবে প্রতিস্থাপিত হয় খড়দহ ও সোদপুরের দুই গ্রহীতার শরীরে।  শহরে গ্রহীতা না পাওয়া যাওয়ায় হার্ট প্রতিস্থাপন করা যায়নি। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, দিল্লির এইমসে গ্রহীতা পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু বিমানের সময় অত্যন্ত দেরিতে হওয়ায় হার্ট পৌঁছানো যায়নি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ