Advertisement
Advertisement

Breaking News

New Born Baby

জন্ম থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত সদ্যোজাত, কোলের সন্তানকে গবেষণার স্বার্থে দান করবেন দম্পতি

মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম-এর প্রিন্সিপালকে চিঠি লিখছেন অসমের দম্পতি।

Parents want to donate new born baby for medical research as he is suffering from rarest disease

ছবি: প্রতীকী

Published by: Paramita Paul
  • Posted:January 21, 2021 8:55 am
  • Updated:January 21, 2021 10:01 am

অভিরূপ দাস: দেহদান নয়। অঙ্গদানও নয়। গবেষণার স্বার্থে নিজের কোলের শিশুকেই দান করে দিতে চান অচিন্ত্য-বিপাশা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম-এর প্রিন্সিপালকে চিঠি লিখছেন তাঁরা। অসমের বাসিন্দা এই দম্পতির সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছে চিকিৎসক সমাজ। ১০ দিনের ওই নবজাতক (New Born Baby) বিরল রোগে আক্রান্ত। নিথর হয়ে নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে শুয়ে রয়েছে।
গত ১১ জানুয়ারি শিশুটির জন্ম হয় মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালে। জন্ম থেকেই সে পিআইসিজি অথবা প্রিম্যাচিওর অ্যান্ড সিভিয়ার গ্রোথ রেস্ট্রিকশনে আক্রান্ত। অত্যন্ত বিরল এ অসুখ দানা বাঁধে প্রতি ১০ হাজারে এক জন শিশুর শরীরে। জন্ম থেকেই কোমায়। হাত-পা নড়ে না। কিন্তু প্রস্রাব, মলত্যাগ করছে নিয়মিত।

[আরও পড়ুন : ‘নির্ভয়ে কাজ করুন’, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে বার্তা কমিশনের ফুল বেঞ্চের]

মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালে ডা. অমিত রায়ের অধীনে চিকিৎসা চলছে তার। বিরল অসুখ নিয়ে শিশু জন্মানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মা-বাবা। তাঁদের মেডিক্যাল কাউন্সেলিং করা হয়। শিশুটির বাবা অচিন্ত্যকুমার দাস জানিয়েছেন, “চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন আদৌ কবে জ্ঞান ফিরবে তার ঠিক নেই। নাও ফিরতে পারে। আমরা হাল ছাড়তে চাইনি। ডাক্তারবাবুকে বলি, এভাবেই রেখে দিন।” জন্মাবধি ঠাঁই হয়েছে নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে। কৃত্রিম উপায়ে চলছে শ্বাস-প্রশ্বাস। ডা. অমিত রায় জানিয়েছেন, সি-সেকশন ডেলিভারির পরেই সন্দেহ হয়। জন্মের সময় শিশুর ওজন ছিল মাত্র সাড়ে চারশো গ্রাম। যা হওয়া উচিত ছিল এক কেজির আশপাশে। শিশুটি এতই ছোট্ট ছিল যে হাতের তালুর মধ্যে ধরা যাচ্ছিল।
গর্ভজাতর এহেন অবস্থায় হার মানেননি বিপাশা। সিদ্ধান্ত নেন, যে-ক্ষতি তাঁর হয়ে গিয়েছে তা যেন আর কারও না হয়। শিশুটির বাবা অচিন্ত্যকুমার দাস জানিয়েছেন, কবর দিলে তো সব শেষ। আমরা চাই সন্তানের দেহ যেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে লাগে।

Advertisement

Advertisement

[আরও পড়ুন : দলত্যাগী বিধায়কদের শোকজ তৃণমূলের, নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে পার্থকে পালটা চিঠি মিহিরের]

কোমায় চলে গিয়েছে। তবু হাল ছাড়তে রাজি হয়নি পরিবার। যদি সব ঠিক হয়ে যায়। তারপর থেকে টানা ১০ দিন নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটেই রয়েছে বাচ্চাটি। বুধবার বিকেলে ডা. অমিত রায় জানিয়েছেন, ব্রেন ডেথ হওয়ার দিকেই এগোচ্ছে। বাচ্চাটির অঙ্গদান করার বিষয়ে ভেবেছিলেন দম্পতি। কিন্তু বিরল এ অসুখে কোনও অঙ্গই পূর্ণতা পায়নি। চোখের কর্নিয়াটাই যা তৈরি হয়েছে। হোক না কোলের সন্তান। দশের স্বার্থে তাকেই দান করতে চান দম্পতি। জানিয়েছেন, “মনে মনে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি। আমাদের কোল খালি হয়ে গিয়েছে। আর যেন কারও না হয়। অসুখটি সম্বন্ধে গবেষণা করার জন্য আমরা শিশুটিকে দান করতে চাই। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ অথবা এসএসকেএম-এর প্রিন্সিপালকে চিঠি লিখব।” দম্পতির এহেন সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসক ডা. নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, পেটের মধ্যে যখন শিশু থাকে তখন তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে তৈরি হতে থাকে। কমপক্ষে ৩৭ সপ্তাহ লাগে। বাচ্চাটি তার আগেই ভূমিষ্ঠ হয়েছে। মায়ের পেটের মধ্যে শিশুর ফুসফুসটা চুপসে থাকে। ২০ সপ্তাহে শিশুর শরীরে সারফেকট্যান্ট তৈরি হয়। এই পদার্থ ফুসফুসকে খুলে দিতে সাহায্য করে। বাইরে এসে সে যখন কাঁদতে শুরু করে তখন এই সারফেকট্যান্ট ফুসফুসটাকে খুলে দেয়। এই সারফেকট্যান্ট না থাকায় বাচ্চাটির ফুসফুস খোলেনি। নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে দিতে হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ