Advertisement
Advertisement

Breaking News

বউবাজার

‘এবার বুঝি ভাঙল আমার বাড়ি!’, বউবাজারে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন বাসিন্দারা

আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সোনার দোকানগুলিও।

People in Bowbazar spend every moment with great anxiety

ফাইল ছবি।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 3, 2019 4:58 pm
  • Updated:July 15, 2022 4:49 pm

শুভময় মণ্ডল: চোখের সামনে মূর্তিমান আতঙ্ক। হেলে পড়ছে পাশের বাড়ি, নিজের বাড়ির দেওয়ালগুলোতেও চওড়া হচ্ছে ফাটল। প্রতিটি মুহূর্ত এখন কাটাতে হচ্ছে চরম উৎকণ্ঠায়। পাশের বাড়ির মতো যে কোনও মুহূর্তে ধসে যেতে পারে বাড়ি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আস্ত একটা বাড়ি মাটিতে মিশে যেতে পারে। এক মুহূ্র্তে বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র ছত্রাখান হয়ে যেতে পারে। বউবাজারের দুর্গা পিতুরী লেন, স্যাঁকরা পাড়া এখন হয়ে উঠেছে অভিশপ্ত পুরী।ভয়ে ঘরে আর থাকতে চাইছেন না কেউ। বারবার বেরিয়ে আসছেন রাস্তায়। সৌজন্যে মেট্রো রেলের সম্প্রসারণ প্রকল্প। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়েই এই পরিস্থিতি বউবাজারের এই এলাকা। এমন ঘটনা মেট্রো রেলের ইতিহাসেও নজিরবিহীন। দায় স্বীকার করে হাই কোর্টের নির্দেশমতো ১৬ তারিখ পর্যন্ত কাজ স্থগিত রেখেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

[আরও পড়ুন: নিজের বাড়িতেই চুরির ছক! ধৃতদের জবানবন্দিতে হতবাক পুলিশ]

শনিবার সন্ধে থেকে বউবাজারে টানেল বোরিং মেশিনের কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কম্পনও শুরু হয় এলাকায়। সেইসঙ্গে ভীতিরও উদ্রেক হয়। পুরনো বাড়ির নোনাধরা দেওয়ালগুলোর ফাটল বাড়বে, এই আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। রাতটুকু কোনওক্রমে কাটলেও, রবিবার বেলা বাড়তেই বিপর্যয় শুরু। একটা একটা করে সেদিন অন্তত ৪টি বাড়ির বেশ কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। পরিস্থিতি জটিল বুঝে টানেল বোরিং মেশিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দায় স্বীকার করে নেয় মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সন্ধের দিকে বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, শুধু কম্পনে নয়। ওই এলাকার মাটির প্রকৃতিগত কারণে সুড়ঙ্গে জল জমাই এমন বড় বিপর্যয়ের কারণ। সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকা দুর্গা পিতুরী লেন এবং স্যাঁকরা পাড়া। সন্ধের পর থেকে এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। আশেপাশের হোটেলগুলিতে অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করে দেওয়া হয় তাঁদের। কার্যত এক কাপড়েই বিপজ্জনক বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে হয় তাঁদের। ঘরে পড়ে থাকে হাজারও প্রয়োজনীয় সামগ্রী।

Advertisement

সোমবার নিজে বউবাজারের বিপজ্জনক এলাকা ঘুরে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সকলের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অসহায়তা বুঝতে পারেন। আশ্বাসও দেন।জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে কী সামলানো যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। এসবের মাঝে আবার মঙ্গলবার দুপুরেও একটি বাড়ি কার্যত ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। টানা তিনদিন ধরে এই উদ্বেগের মধ্যে থেকে বউবাজারের বিখ্যাত সোনার দোকানগুলিও ঝাঁপ ফেলার কথা
ভাবছে। মঙ্গলবারের ঘটনার পর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ছোট দোকানগুলির দরজায় তালা।

Advertisement
gold-shop
সোনার দোকানের ঝাঁপ ফেলা

সমস্ত হারিয়ে অসহায় পরিবারগুলোর এখন একটাই চিন্তা, কীভাবে দিন কাটাবেন। কারণ, জিনিসপত্র সব যে পড়ে রয়েছে ভেঙে পড়া বাড়ির ভিতর। বাড়ি ছেড়ে হোটেলে আর কদিনই বা থাকা যায়। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তাঁদের সকলেরই আবেদন, একবার বাড়িতে ঢুকতে দিন।

[আরও পড়ুন: তৃণমূল বিরোধী হাওয়ায় ভরসা নয়, রাজ্য বিজেপিকে পরামর্শ মোহন ভাগবতের]

মঙ্গলবার বউবাজারে যান বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। তাঁকে কাছে পেয়েও স্থানীয়রা একই আবেদন জানিয়েছেন। রাহুল সিনহা যদিও তাঁদের বিশেষ আশ্বস্ত করতে পারেননি। তিনিও স্বীকার করছেন, মেট্রোর কাজের জন্য পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে উঠেছে।

rahul-sinha-bowbazar
বউবাজারে রাহুল সিনহা

শহর কলকাতার এমন বিপর্যয় মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতি এড়িয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। এদিন রাহুল সিনহাও সেকথা মানলেন। সবমিলিয়ে, এই
মুহূর্তে শহরের সবচেয়ে জমজমাট বউবাজারের নাম শুনলেই শিউড়ে উঠছেন সকলে।

দেখুন ভিডিও:

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ